চাকরি পেলেন শারীরিক প্রতিবন্ধিতা জয় করা শাহেদা

এক হাত ও দুই পা ছাড়াই জন্ম নেন শারীরিক প্রতিবন্ধী শাহিদা খাতুন। এটা তার কাছে বাধা হতে পারেনি কখনই। শারীরিক ত্রুটি নিয়েই জয় করেন শিক্ষাজীবন। তবে হতাশাটা ঘিরে ধরে উচ্চশিক্ষা অর্জন করেও চাকরি না পাওয়ায়।

শারীরিক প্রতিবন্ধিতা নিয়েই স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন শাহিদা। এক হাতেই শিখেছেন হস্তশিল্প ও সেলাইসহ বিভিন্ন কাজ। এবার পুনাক সভানেত্রীর উদ্যোগে যশোরের নওয়াপাড়ায় আকিজ জুট মিলে এক্সিকিউটিভ অফিসার পদে চাকরি পেয়েছেন শাহিদা।

বুধবার ঝিকরগাছার শিমুলিয়া গ্রামে এক অনুষ্ঠানে অদম্য শাহিদার হাতে চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দেন বাংলাদেশ পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির (পুনাক) সভানেত্রী জীশান মীর্জা।

শাহিদার বাড়ি যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার শিমুলিয়া গ্রামে। বাবা রফিউদ্দিন মুদি দোকানি। তার ছয় সন্তানের মধ্যে শাহিদা চতুর্থ। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নিয়েই ২০১৫ সালে যশোর সরকারি এমএম কলেজ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে মাস্টার্স পাস করেছেন শাহিদা।

যশোর জেলা পুলিশ সমাবেশ ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা উপলক্ষে মঙ্গলবার ২২ মার্চ দুই দিনের সফরে যশোর যান পুনাক সভানেত্রী। পরে বুধবার এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তার চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দেন।

এর আগে পুনাক সভানেত্রী শাহিদার পরিচালিত সৃষ্টিশীল নারী প্রতিবন্ধী কল্যাণ সংস্থার শিশুদের সঙ্গে কথা বলেন। প্রতিবন্ধী শিশুদের খোঁজ খবর নেন। পরে শিশুদের হাতে চকলেট, নতুন পোশাক ও বিভিন্ন উপহার দেন পুনাক সভানেত্রী।

শুধু নিজের প্রতিবন্ধকতা জয় করেই থেমে যাননি শাহিদা। অন্য প্রতিবন্ধীদের জন্যও এগিয়ে এসেছেন তিনি। বাড়ির পাশে গড়ে তুলেছেন এই সৃষ্টিশীল নারী প্রতিবন্ধী কল্যাণ সংস্থা। সেখানে প্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষা আর নারীদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন তিনি দেখে মুগ্ধ হন পুনাক সভানেত্রী।

নিয়োগপত্র পেয়ে খুশিতে আত্মহারা শাহিদা খাতুন বলেন, ‘অবশেষে আমার একটা কর্মসংস্থান হলো। পড়াশোনা শেষ করেও চাকরি না হওয়ায় আমি খুব দুঃশ্চিন্তায় ছিলাম। পুনাক সভানেত্রীর কল্যাণে আমার একটা চাকরি হলো। এখন আমার মা-বাবার পাশে দাঁড়াতে পারব।’

পুনাক সভানেত্রী জীশান মীর্জা বলেন, ‘বিভিন্ন গণমাধ্যমে শাহিদাকে নিয়ে সংবাদ পড়েছি। তার প্রতিবন্ধিতাকে জয় করে অনন্য নজির স্থাপন করাই খুব ভালো লেগেছে। তাছাড়া প্রতিষ্ঠার পর থেকেই পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি নিয়মিত কার্যক্রমের পাশাপাশি অসহায় ও দুস্থদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে।

এই ধারাবাহিকতায় শাহিদার কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে পুনাক। শাহিদার কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হওয়ায় পরিবারটি এখন ঘুরে দাঁড়াতে পারবে বলে আশা করি।’

(ঢাকাটাইমস/২৩মার্চ/এএইচ/কেএম)