বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন গভর্নরের বিশদ পরিচয় কি আপনি জানেন?

আব্দুর রউফ তালুকদার। বাংলাদেশ ব্যাংকের ১২তম গভর্নর। আজ মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে তার নতুন দায়িত্ব বুঝে নিয়েছেন। প্রথম কার্যদিবস আজ সকাল ১০টায় নতুন কর্মস্থল বাংলাদেশ ব্যাংকে কাজে যোগ দেন তিনি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের দায়িত্ব নেওয়ার আগে সরকারি নানা গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করে এসেছেন আব্দুর রউফ তালুকদার। জিডিপি প্রবৃদ্ধি, করোনাকালে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে প্রশাসনিক কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন তিনি।
বর্ণাঢ্য পেশা এবং ব্যক্তিজীবনে সফল এই আমলার সাফল্য কীভাবে এসেছে, কর্মজীবনে কোথায় কোথায় কাজ করেছেন, কিংবা শিক্ষাজীবনে কোথায় লেখাপড়া করেছেন, চলুন এসব সম্পর্কে বিশদ জেনে নেওয়া যাক।
জন্ম ও লেখাপড়া
আব্দুর রউফ তালুকদারের জন্ম ১৯৬৪ সালে সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার তারাকান্দি গ্রামে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউট (আইবিএ) থেকে এমবিএ করেছেন। এ ছাড়া যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব বার্মিংহাম থেকে উন্নয়ন ব্যবস্থাপনা বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।
ব্যক্তিজীবন
ব্যক্তিগত জীবনে আব্দুর রউফ তালুকদার এক মেয়ে ও এক ছেলের সন্তানের বাবা। তার স্ত্রী সেলিনা রওশন একজন শিক্ষক।
কর্মজীবন
আব্দুর রউফ তালুকদার বিসিএস ১৯৮৫ ব্যাচের ক্যাডার। ১৯৮৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে যোগ দেন তিনি। দীর্ঘ কর্মজীবনে বিভিন্ন সরকারি পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। তবে পাবলিক ফাইন্যান্স এবং অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় বিশেষত্বের কারণে তার কর্মজীবনের বেশির ভাগ সময় কেটেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগে।
২০১৮ সালের ১৮ জুলাই অর্থ সচিবের দায়িত্ব নেয়ার আগে অর্থ বিভাগে ১৮ বছরের বেশি সময় কাজ করেন। এ ছাড়া দীর্ঘ কর্মজীবনে তিনি শিল্প মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়, তথ্য মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ হাইকমিশন কুয়ালালামপুরে প্রথম সচিব (বাণিজ্যিক) হিসেবেও কাজ করেন।
আব্দুর রউফ তালুকদার প্রায় চার বছর জ্যেষ্ঠ সচিব হিসেবে সফলতার সঙ্গে অর্থ সচিবের দায়িত্ব পালন করেন। এই দায়িত্ব পালনকালেই ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশে ৭ দশমিক ৮৮ শতাংশ (বিবিএসের নতুন হিসাবে, পুরোনো হিসাবে ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ) অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি (জিডিপি প্রবৃদ্ধি) অর্জিত হয়; যা বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ জিডিপি প্রবৃদ্ধি।
দুই বছরের বেশি সময়ের করোনা মহামারির সংকট মোকাবিলাতেও অর্থ সচিব হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন আব্দুর রউফ তালুকদার। চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কা সামলে অর্থনীতিকে সঠিক পথে আনতেও তিনি বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন।
করোনাকালীন দেশের অর্থনীতির ক্রান্তিকালে তিনি অর্থনীতি চাঙা করার জন্য বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজ তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় তার পরামর্শ রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে প্রশংসিত হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন সংস্কার প্রক্রিয়ায় তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। বিশেষ করে বাজেট সংস্কার, সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা, অবসরভোগী সরকারি চাকুরেদের ইএফটির মাধ্যমে পেনশন প্রদান এবং সঞ্চয়পত্রের অটোমেশনে তার ভূমিকা ছিল। ২০২১ সালে ‘ন্যাশনাল ইন্টিগ্রিটি অ্যাওয়ার্ড’ পান আব্দুর রউফ তালুকদার।
(ঢাকাটাইমস/১২জুলাই/বিএস/মোআ)

মন্তব্য করুন