কারখানার ঝুট চান ছাত্রলীগ নেতা, এলাকাবাসীর বাধা
গাজীপুরের টঙ্গীতে ঝুট ব্যবসা নিয়ে এলাকাবাসীর সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় নারীসহ বেশ কয়েকজন আহত হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
তবে ছাত্রলীগ নেতাদের দাবি, হামলায় ছাত্রলীগকর্মীসহ ঝুট নামানোর কাজে নিয়োজিত কয়েকজন লেবার আহত হন।
সোমবার সকালে গাজীপুরা সাতাইশ দাঁড়াইল এলাকার এসঅ্যান্ডপি বাংলা লিমিটেড নামে পোশাক কারখানায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানায়, বেশ কয়েক বছর যাবত ওই এলাকার আওয়ামী লীগ নেতা আমান হাজী কারখানাটির ঝুট কিনতেন। সেই ঝুট বিক্রির টাকার একটি অংশ পেত এলাকার অসহায় নারী-পুরুষরা। কয়েক মাস আগে গাজীপুর মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি মোশিউর রহমান সরকার বাবু কারখানা কর্মকর্তাদের সাথে গোপনে ঝুট নেবে বলে একটি চুক্তি করেন। তিন মাস ধরে পেশী শক্তি খাটিয়ে কারখানা থেকে ঝুট নিয়ে যাচ্ছে তার লোকজন। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার স্থানীয়ভাবে সমঝোতা শালিশের ব্যবস্থা করা হলেও ছাত্রলীগের কোন নেতাকর্মী শালিসে উপস্থিত হয়নি।
সকালে মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি বাবুর নির্দেশে কারখানায় যান টঙ্গী সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের আহবায়ক সেলিম খান, টঙ্গী পশ্চিম থানা ছাত্রলীগের সভাপতি প্রার্থী আশরাফুল ইসলাম ও ৪৯নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রোমান দেওয়ানসহ বেশ কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতা। এসময় স্থানীয় নারীরা ঝুট নিতে তাদের বাধা দেয়। একপর্যায়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা নারীদের ওপর হামলা চালায়।
ঝুটের সুবিধাগ্রহণকারী রোকেয়া বেগম জানান, দাঁড়াইল গ্রামের অনেক অসহায় নারী ওই কারখানার ঝুট বিক্রির টাকা দিয়ে তাদের সংসার চালায়। গত তিন মাস ধরে তারা এই সুবিধা পাচ্ছে না। সোমবার সকালে ছাত্রলীগ নেতা সরকার বাবুর লোকজন অস্ত্রশস্ত্রসহ নিয়ে ঝুট নিতে এসে অসহায় নারীদের মারধর করেন। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা নারীদের জামা-কাপড় ছিড়ে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে। এতে নারীসহ অনেকেই আহত হয়েছেন। আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে টঙ্গী সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক সেলিম খান বলেন, কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমার ঝুট নেয়ার চুক্তি হয়েছে। এর আগে ঝুট নেয়ার সময় কেউ বাধা না দিলেও সকালে স্থানীয় খোকনের নেতৃত্বে নারীরা বাধা দেয়। একপর্যায়ে তারা হামলা চালিয়ে লেবারসহ ছাত্রলীগ নেতাদের মারধর করে। আমরা প্রাণ নিয়ে সেখান থেকে বেঁচে ফিরেছি। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
তবে গাজীপুর মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি মোশিউর রহমান সরকার বাবু দাবি করেন, সিনিয়র নেতাদের নির্দেশে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তার চুক্তি হয়েছে। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মাঝে তিনি ঝুট বিক্রির টাকা ভাগ-বাটোয়ারা করে দিয়েছেন। স্থানীয় সন্ত্রাসী খোকন জোরপূর্বক কারখানার ঝুট নেয়ার চেষ্টা চালায়। সকালে ঝুটের মালামাল আনতে গেলে খোকনের নেতৃত্বে এলাকার লোকজন লেবারদের মারধর করে। তবে ছাত্রলীগের কেউ আহত হননি বলে জানান তিনি।
টঙ্গী পশ্চিম থানার ওসি মো. শাহ আলম জানান, ঝুট নিয়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তবে থানায় কোন পক্ষই অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
(ঢাকাটাইমস/০৯জানুয়ারি/এলএ)