যে কারণে চাকরি গেল অ্যাডিশনাল এসপি সেতুয়া পারভীনের

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
 | প্রকাশিত : ১১ জানুয়ারি ২০২৩, ১৭:০৩

বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সেতুয়া পারভীনকে (বিপি-৭৯০৬১০৯৮১৪) চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়েছে। বিনা অনুমতিতে ৮ মাস ১৮ দিন বদলিকৃত কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় তাকে এই ‘গুরুদণ্ড’ দেওয়া হয়। তাকে চাকরি থেকে অপসারণের সিদ্ধান্তে রাষ্ট্রপতি সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন বলে গত ৫ জানুয়ারি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়।

সেতুয়া পারভীনের বিরুদ্ধে ‘অসাদাচরণ ও পলায়ন’ অভিযোগ বিভগীয় তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় তাকে এই দণ্ড দেওয়া হয় বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।

ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সেতুয়া পারভীন ঢাকার উত্তরায় ১১ এপিবিএনে কর্মরত অবস্থায় গত ২০১৮ সালের ২৯ জানুয়ারি জিএ/২-২০১৭/৩৫৫ নম্বর স্মারকমূলে তাকে অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার, বিএমপি, হিসেবে বদলি করা হয়। সেখানে যোগদানের নিমিত্তে তাৎক্ষণিক অবমুক্ত করা হলেও তিনি বদলিকৃত কর্মস্থলে যোগদান করেননি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বৈধ আদেশ প্রতিপালন না করা এবং বদলিকৃত কর্মস্থলে যোগদান হতে বিরত থাকা সংক্রান্ত উত্থাপিত অভিযোগ অনুসন্ধানকালে অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তার একাধিক নোটিশ পাওয়া সত্ত্বেও তিনি কোনো লিখিত জবাব প্রদান করেননি। তিনি ২০১৮ সালের ১১ নভেম্বর থেকে কর্মস্থলে না এসে বাসায় অবস্থান করেন এবং বেতন ভাতাদি উত্তোলন করেন।’

‘ওই দিন থেকে ২০১৯ সালের ৭ এপ্রিল পর্যন্ত ৮ মাস ১৮ দিন বিনা অনুমতিতে বদলিকৃত কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার অভিযোগে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ৩(খ) ও ৩(গ) বিধি মোতাবেক যথাক্রমে “অসদাচরণ” এবং “পলায়ন” এর অভিযোগে তার বিরুদ্ধে রুজুকৃত বিভাগীয় মামলায় অভিযোগনামা ও অভিযোগ বিবরণী জারি করে তাকে কারণ দর্শানোর নির্দেশ প্রদান করা হয়।’

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, ‘অভিযুক্ত কর্মকর্তা (সেতুয়া পারভীন) কারণ দর্শানোর জবাব প্রদানপূর্বক ব্যক্তিগত শুনানির প্রার্থনা করলে ব্যক্তিগত শুনানি অনুষ্ঠিত হয় এবং অভিযুক্ত কর্মকর্তার কারণ দর্শানোর জবাব, ব্যক্তিগত শুনানিতে পক্ষগণের প্রদত্ত বক্তব্য এবং প্রাসঙ্গিক সব তথ্যাদি বিবেচনা করে অভিযোগ প্রমাণিত হলে গুরুদণ্ড আরোপের সম্ভাবনা থাকায় আনীত অভিযোগসমূহ তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন প্রদানের জন্য পুলিশ অধিদপ্তরের পুলিশ সুপার শরীফ মোস্তাফিজুর রহমানকে উক্ত বিভাগীয় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়। একই সঙ্গে অভিযুক্ত কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।’

এরপর তদন্তপূর্বক সেতুয়া পারভীনের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর বিধি ৩(খ) ও ৩(গ) অনুযায়ী যথাক্রমে অসদাচরণ ও পলায়নের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে মর্মে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, ‘সার্বিক পর্যালোচনায় অভিযোগের গুরুত্ব ও প্রাসঙ্গিক সকল বিষয় বিবেচনায় একই বিধিমালার বিধি ৪ এর উপ-বিধি (৩)(গ) মোতাবেক চাকুরী হইতে অপসারণের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত গ্রহণপূর্বক তাকে দ্বিতীয় বার কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়। অভিযুক্ত কর্মকর্তা ২য় কারণ দর্শানো জবাব প্রদান করেন।’

‘দাখিলকৃত জবাব, তদন্ত প্রতিবেদন, প্রাসঙ্গিক বিষয়াদি অপরাধের গুরুত্ব ইত্যাদি সার্বিক বিবেচনায় তাকে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ ৩(খ) ও ৩(গ) অনুযায়ী যথাক্রমে “অসদাচরণ” ও “পলায়ন” এর প্রমাণিত অভিযোগে একই বিধিমালার বিধি ৪ এর উপ-বিধি ৩(গ) মোতাবেক “চাকুরী হইতে অপসারণ” এর দণ্ড প্রদানের বিষয়ে সরকারি কর্মচারি (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ৭ (১০) বিধি এবং বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পরামর্শকরণ) রেগুলেশনস, ১৯৭৯ এর ৬ নং রেগুলেশন মোতাবেক বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের পরামর্শ চাওয়া হয়। বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন সচিবালয় সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ৩(খ) ও ৩(গ) বিধি মোতাবেক যথাক্রমে “অসদাচরণ” ও “পলায়ন” এর প্রমাণিত অভিযোগে একই বিধিমালার বিধি ৪ এর উপ-বিধি ৩(গ) অনুযায়ী “চাকুরী হইতে অপসারণ” এর গুরুদণ্ড প্রদান করার বিষয়ে পরামর্শ প্রদান করে।’

এরপর এ গুরুদণ্ড প্রদানের প্রস্তাবের বিষয়ে রাষ্ট্রপতি সদয় সম্মতি জ্ঞাপন করেন।

‘জনস্বার্থে জারিকৃত এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে’ বলেও উল্লেখ করা হয় প্রজ্ঞাপনে।

রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেন জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান।

(ঢাকা টাইমস/১১জানুয়ারি/আরআর/ইএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

প্রশাসন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

প্রশাসন এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :