১০ হাজার টাকায় খুনি ভাড়া করে যুবক হত্যা, চাচাসহ গ্রেপ্তার ২
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় জমি নিয়ে বিরোধের জেরে সাইফুল ইসলাম একজন তার আপন ভাতিজা কামরুল ইসলামকে (৩৫) হত্যার পরিকল্পনা করেন। আর পরিকল্পনা অনুযায়ী ৫ হাজার করে মাত্র ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে দুই হত্যাকারীও ঠিক করেন। তার কথামতো হত্যাকারী নজিবুল হক ও দিদার আলী কৌশলে কামরুল ইসলামকে কৌশলে ডেকে এনে গলায় মাফলার পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন।
সোমবার বিকালে পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক প্রেসব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার এসএম সিরাজুল হুদা এসব তথ্য দেন।
পুলিশ জানায়, গত বুধবার (২৫ জানুয়ারি) দুপুরে মাছ ব্যবসায়ী কামরুল ইসলাম নিখোঁজের একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। সাধারণ ডায়েরির পর বিকালে দেবনগর এলাকার একটি চা বাগানের পরিত্যক্ত ড্রেন থেকে কামরুলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে মরদেহ উদ্ধার ও জিডির সূত্র ধরে রাতেই দিদার হোসেনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তার দিদার পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে চাচা সাইফুল ইসলামের কথায় ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে দুইজন মিলে ভাতিজা কামরুলকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। এ ঘটনায় পরদিন বৃহস্পতিবার একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। সরাসরি হত্যাকাণ্ডে জড়িত দিদার হোসেন তেঁতুলিয়া উপজেলার গরিয়াগছ এলাকার সরদার হোসেনের ছেলে এবং নজিবুল হক একই উপজেলার যোগীগছ এলাকার সপিজ উদ্দিনের ছেলে। ঘটনার পর থেকে মুল পরিকল্পনাকারী সাইফুল ইসলাম ও নজিবুল হক পলাতক ছিলেন। রবিবার রাতে ঠাকুরগাও এর বালিয়াডাংগি সীমান্ত এলাকা থেকে পরিকল্পনাকারী সাইফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। নিহত কামরুল ইসলাম তেঁতুলিয়া উপজেলার তিরনইহাট ইউনিয়নের যুগিগছ এলাকার আব্দুল জব্বারের ছেলে। সাইফুল ইসলাম তার আপন চাচা। এই চাচা এবং ভাতিজার পরিবারের মধ্যে দীর্ঘ দিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল।
গত সোমবার কামরুল ইসলাম বাড়ি থেকে বের হলে আর ফিরেন আসেননি। নিখোঁজের তিনদিন পর বুধবার দুপুরে কামরুলের ছোটভাই কাবুল হোসেন তেঁতুলিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। আর বিকালে দেবনগর ইউনিয়নের ধানশুকা এলাকার একটি চা বাগানের একটি ড্রেনে একটি মরদেহ দেখতে পান স্থানীয় এক মহিলা। খবর পেয়ে তেঁতুলিয়া মডেল থানা পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করেন এবং মরদেহটি কামরুলের বলে নিশ্চিত করেন পরিবারের সদস্যরা।
পুলিশ সুপার এসএম সিরাজুল হুদা বলেন, ‘সাধারণ ডায়েরির তিন ঘণ্টার মধ্যে মরদেহ উদ্ধার এবং ওই রাতেই দিদার নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে নিহতের আপন চাচা সাইফুল ইসলামের পরিকল্পনায় তিনি ও নজিবুল নামে আরেকজন মিলে ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করেন। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ঠাকুরগাও এর সীমান্ত এলাকা থেকে পরিকল্পনাকারী সাইফুলকেও গ্রেপ্তার করা হয়। হত্যাকাণ্ডে জড়িত তিন জনের মধ্যে নজিবুল হককে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। আসামিদের জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। তাদের রিমান্ডে নিলে এবং মরদেহের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলে আরও বিস্তারিত জানা যাবে।
(ঢাকাটাইমস/৩০জানুয়ারি/এআর)