দেবীদ্বারে আ.লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ১২

দেবীদ্বার (কুমিল্লা) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ২০:২১

কুমিল্লার দেবীদ্বারে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে শহীদ মিনা‌রে ফুল দেওয়াকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়েছেন ১২ জন। মঙ্গলবার মধ্যরাতে দেবীদ্বারে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের দেবীদ্বার ও চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে।

প্রত্যক্ষ দর্শীরা জানান, রাজী মোহাম্মদ ফখরুল এমপির সমর্থকরা পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রোশন আলী মাস্টার সমর্থকদের শহীদ মিনারের বেদিমূলে আসতে প্রতিরোধ তৈরি করে।

তারা সন্ধ্যা থেকেই বিভিন্ন দেশীয় মরণাস্ত্র নিয়ে পথে পথে অবস্থান নেয়।

রাত পৌনে ১টার দিকে রোশন আলী মাষ্টার জেলা ও উপজেলার নবগঠিত কমিটির একাংশের নেতা-কর্মীদের নিয়ে উপজেলা পরিষদ শহীদ মিনারের দিকে রওয়ানা হন। তিনি কলেজ রোডে উঠার পরই প্রতিপক্ষের প্রতিরোধের সম্মুখে ও বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন।

পূর্ব থেকে মোতায়েন থাকা বিপুল সংখ্যক পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন এবং প্রতিরোধ ভেঙে রোশন আলী মাষ্টার ও তার সমর্থকদের পুলিশের সহযোগীতায় শহীদ মিনারের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সময় পেছন দিক থেকে কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় এবং নেতা-কর্মীদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়।

প্রতিপক্ষরা রোশন আলী মাষ্টারের সমর্থকদের হাত থেকে আওয়ামী লীগ উপজেলা কমিটির নামে তৈরি পুষ্পস্তবকটি ছিনিয়ে নিয়ে ভেঙে ফেলে দেয়।

একই সময় বিভিন্ন ছাদের উপর থেকে বৃষ্টির ন্যায় ইটপাটকেল ছুড়লে এতে অন্তত ১২ জন আহত হন।

আহতদের মধ্যে গুরুতর আহত হয়েছেন দেবীদ্বার উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মো. সামসুল হক, উপজেলা কমিটির উপদেষ্টা সৈয়দ আলী মাস্টার, সমর্থক মো. আলী আশরাফ, শেখ মো. সাফিন। তাদেরকে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এর মধ্যে সৈয়দ আলী মাস্টার মাথায় গুরুতর আহত হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পা ভাঙা সামসুল হককে চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে।

কুমিল্লা (উত্তর) জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রোশন আলী মাষ্টার ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম সফিকুল আলম কামাল বলেন, জেলা-উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের নিয়ে শহীদ মিনারে যাওয়ার পথে চান্দিনা রোডের মাথায় এমপি সমর্থক সাইফুল ইসলাম শামিম, ইকবাল হোসেন রুবেল, সাদ্দাম হোসেন ও জহিরের নেতৃত্বে বাঁধার সম্মূখীন হন। এসময় এমপি সমর্থকরা বিভিন্ন দেশীয় মরণাস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় এবং তারা পিটিয়ে ও ইটপাটকেল নিক্ষেপে করে আমাদের বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মীর মাথা ফাটিয়ে ও পা ভেঙে দেয়। যারা আমাদের র‌্যালিতে বাঁধা এবং হামলা করেছে তারা ‘জয়বাংলা ধানের শীষের’ মানে এমপির লোক। মহান ভাষা আন্দোলনে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতেও তারা বাঁধা দিয়ে ধৃষ্ঠতা দেখিয়েছে।

এমপি সমর্থক উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল চৌধুরী ও প্রভাষক সাইফুল ইসলাম শামিম বলেন, আমাদের নেতৃত্বে রোশন আলী মাষ্টার গ্রুপের উপর হামলার ঘটনা সত্য নয়, পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীরা জেলা কমিটি কর্তৃক স্থগিত করা উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটির ব্যানারে শহীদ মিনারে যেতে বাঁধা দেয়ার ঘটনায় উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়, যা নিরসনে আমরা এগিয়ে গেছি। এসময় বিক্ষুব্ধ পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীদের হামলায় ও ইটপাটকেল নিক্ষেপে কয়েকজন আহত হওয়ার খবর পেয়েছি। এ ব্যাপারে দেবীদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কমল কৃষ্ণ ধর বলেন, আমরা আগে থেকেই শহীদ মিনারে ফুল দিতে আসা নেতা-কর্মীদের মাঝে সংঘর্ষের আশঙ্কা করেছিলাম। তাই শহীদ মিনার ঘিরে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করেছি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এমপি সাহেব এবং উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানকে আগে ফুল দেওয়ার আয়োজন করি এবং কুমিল্লা (উত্তর) জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রোশন আলী মাষ্টার ও উপজেলা আওয়ামী লীগ এক ঘণ্টা পরে আসার অনুরোধ করি। কিন্ত পথিমধ্যে এরকম অনাকাঙ্খিত ঘটনা হবে তার প্রস্তুত ছিলাম না। আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে চান্দিনা রোডের মাথায়ও বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন রাখি। ইটপাটকেল নিক্ষেপে কয়েকজন আহত হওয়ার সংবাদ পেলেও বড়ধরনের কোন ঘটনা ঘটেনি। এ ঘটনায় এখনো থানায় কেউ অভিযোগ করেনি।

(ঢাকাটাইমস/২১ফেব্রুয়ারি/এসএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :