সস্তা পেয়ে কালিয়াকৈরের ফসলি জমি দখলে নিচ্ছেন শিল্প মালিকরা!

আশিকুর রহমান, কালিয়াকৈর (গাজীপুর)
  প্রকাশিত : ০১ মার্চ ২০২৩, ১৫:৫২
অ- অ+

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলায় দিন দিন শিল্প প্রতিষ্ঠান নির্মাণের নামে তিন ফসলি জমি ক্রয় করে ভরাট করে রাখা হচ্ছে বছরের পর বছর। প্রতিষ্ঠান হোক বা না হোক, কিছু অসাধু জমি ব্যবসায়ীদের হাত ধরে অল্প মূল্যে কৃষিজমি ক্রয় করে ভরাট করে সাইনবোর্ড সাটাচ্ছেন শিল্প মালিকরা। এর ফলে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কৃষি জমিরসংখ্যা ক্রমশ কমে আসছে। জমির দাম কম হওয়াতে শিল্প মালিকদের নজরেও পড়ছে ব্যাপক। এতে ফসলি জমিতে উৎপাদন কমের পাশাপাশি বহু আবাদি জমি পতিত হচ্ছে বলে অভিযোগ কৃষকদের।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার চাপাইর ইউনিয়নের মেদী আশুলাই এলাকায় অলুয়া বিলে চায়না প্রতিষ্ঠানের আওতায় চলে গেছে প্রায় দুইশত বিঘা ফসলি জমি। জমি ক্রয়ের পরেই সেখানে ভরাট করে দেয়াল তোলে কোম্পানিটি। তবে সেখানে শিল্পের কোনো অস্তিত্ব দেখা যায়নি দুই বছরেও। এছাড়াও একই ইউনিয়নের গনকচালা, ঢুলসুমদ্রসহ উপজেলার সূত্রাপুর ইউনিয়নের উত্তর দাড়িয়াপুর, বোর্ডঘর, কাঞ্চনপুর, মধ্যপাড়া ইউনিয়নের জামালপুর, লস্করচালাসহ বিভিন্নএলাকায় তৈরি পোশাক কারখানা, স্পিনিং মিলসহ বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের নামের সাইনবোর্ডে রয়েছে কৃষি জমি।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, একসময় উর্বর এই জমিতে বিভিন্ন জাতের ধান ও সবজির চাষ হতো বছর জুড়ে। মাঠ জুড়ে দোল খেলত সবুজ ফসল। কিন্তু সেসব ফসলি জমি এখন শিল্পের দখলে। স্থানীয়দের আক্ষেপ শিল্প প্রতিষ্ঠান তৈরির নামে জমি ক্রয় করে মাটি ফেলে ভরাট করে রাখছে। শিল্প তো হয় ই না পরিবর্তে ফসলের জমিগুলোও এখন চাষের অনুপযোগী। এদিকে এসব জমি ক্রয়ের পর সেখানে শুরু হয় ভরাট বানিজ্য। ফসলি জমি ভরাট করতে আশেপাশের ফসলি জমির মাটি, নদী পারের মাটি কেটে ভরাট করা হচ্ছে সেসব জমি। এর ফলে ওইসব জমিগুলোও দিনদিন গর্ত হয়ে পতিত পরে আছে।

এ ব্যাপারে পরিবেশ বাচাও আন্দোলন সংঘঠনের সদস্য মোতালেব মিয়া জানান, কোম্পানির মালিকপক্ষ এসে একটু জমি কিনতে পারলেই ধীরেধীরে পুরো এলাকা দখলের ছক আঁকে। এছাড়াও একদল দালাল তো আছেই। সকাল বিকেল কৃষকদের নানা প্রলোভন দেখাতেই থাকে। তাদের লক্ষ্যে শিল্পপ্রতিষ্ঠান হোক বা না হোক জমি কিনে ফেলে রাখবে। তাদের এমন চিন্তায় ক্ষতি হচ্ছে কৃষি জমি, কৃষক, ও এলাকার পরিবেশের। কমে যাচ্ছে ফসল উৎপাদন।

এসব ব্যাপারে কালিয়াকৈর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল ইসলামের সাথে আলাপ হলে তিনি ঢাকা টাইমসের প্রতিবেদককে জানান, আমরা সবসময় কৃষকদের চাষাবাদে আগ্রহ দিয়ে থাকি। তাদের সহযোগিতা করি। মাঠ পর্যায়ে কাজ করি। কৃষকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি। তারপরেও কৃষকদের কেউ লোভে পড়ে জমি বিক্রি করে দেয়। এরপর ধীরেধীরে পুরো ফসলের মাঠ বিক্রি হয়ে যায়। আমরাও চাই কৃষিজমিতে শিল্প বন্ধ হোক।

কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ ঢাকাটাইমসকে জানান, কৃষি জমি রক্ষায় আমরা সবসময় চেষ্টা করে থাকি। কৃষি জমি থেকে মাটি খনন বন্ধে আমরা মোবাইলকোর্ট করি। এবং শিল্প কারখানার নামে কৃষি জমি ক্রয়ের মাধ্যমে সেই জমি নষ্ট যাতে কেউ না করতে পারে আমরা সে বিষয়ে লক্ষ্য রাখছি।

(ঢাকাটাইমস/০১মার্চ/এআর)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
পাক সেনাপ্রধানকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ফোন, উত্তেজনা কমানোর উপায় খুঁজতে দুপক্ষকে আহ্বান
আ.লীগ নিষিদ্ধসহ তিন দফা দাবি: শাহবাগে দ্বিতীয় দিনের মতো চলছে বিক্ষোভ
পাকিস্তানের গোলাবর্ষণে ভারতীয় কর্মকর্তার মৃত্যু
বরেণ্য সংগীতশিল্পী মুস্তাফা জামান আব্বাসী আর নেই
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা