জাপান সফরে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইয়ন সুক ইওল বৃহস্পতিবার জাপান সফরে এসেছেন। সম্পর্কে নতুন অধ্যায় সূচনাই তার এ সফরের লক্ষ্য। এদিকে তার সফরের কয়েক ঘণ্টা আগে দূর পাল্লার ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করেছে উত্তর কোরিয়া। চলতি সপ্তাহে এটি তাদের তৃতীয় ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ। খবর এএফপির।
পিয়ংইয়ংয়ের ক্রমবর্ধমান আগ্রাসনমূলক কর্মকা- মোকাবেলায় সম্পর্ক জোরদারের ব্যাপারে সম্মেলনের জন্য দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল টোকিওতে সফর করেছেন। দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র বিগত পাঁচ বছরের মধ্যে তাদের বৃহত্তম যৌথ সামরিক মহড়া চালানোর সময় রোববার থেকে এই উৎক্ষেপণ ছিল উত্তর কোরিয়ার তৃতীয় শক্তি প্রদর্শন।
দক্ষিণ কোরিয়ার জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ এএফপি’কে বলেন, ‘আমাদের সামরিক বাহিনী পিয়ংইয়ংয়ের সুনান এলাকা থেকে উৎক্ষেপিত একটি দূর পাল্লার ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে।’
এক বিবৃতিতে তার দপ্তর জানায়, জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে ইউন জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ত্রি-পাক্ষিক সহযোগিতা জোরদার করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘উত্তর কোরিয়ার এই ধরনের বেপরোয়া উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য তাদেরকে চরম মূল্য দিতে হবে।’
এদিকে জাপানের মন্ত্রিপরিষদ কার্যালয় জানায়, ক্ষেপণাস্ত্রটি সর্বোচ্চ ৬ হাজার কিলোমিটারেরও বেশি উচ্চতায় পৌঁছায়। উত্তর কোরিয়ার ঘন ঘন পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষার কারনে আঞ্চলিক নিরাপত্তার হুমকি মোকাবেলায় জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া তাদের মতপার্থক্য দূর করে ঐক্যফ্রন্ট তৈরির চেষ্টা করছে।
ইয়নের সফরের আগে সিউল চলতি মাসে জাপানের যুদ্ধকালে জোরপূর্বক শ্রমের শিকার কোরীয় ক্ষতিগ্রস্তদের টোকিওর প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ ছাড়াই ক্ষতিপূরণ দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে ইয়নের সফরের মধ্যদিয়ে দুদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদারের আভাস পাওয়া গেছে। এর মধ্যে রয়েছে মে মাসে হিরোশিমায় অনুষ্ঠেয় জি-৭ সম্মেলনে যোগ দিতে ইয়নকে জাপানের প্রধানমন্ত্রী সম্ভাব্য আমন্ত্রণ এবং এরপর তার সিউল সফর।
গতবছর নির্বাচনের পর ইয়ন স্পষ্ট করে বলেছেন, জাপানের সঙ্গে সম্পর্ক পুন:প্রতিষ্ঠাকে তিনি অগ্রাধিকার দেবেন। ইয়ন তার দুদিনের সফরকে দু’দেশের সম্পর্ককে এগিয়ে যাওয়ার গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
উল্লেখ্য, গত ১২ বছরে দুদেশের শীর্ষ নেতৃত্ব পর্যায়ে এ প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সফর শুরুর আগে চলতি সপ্তাহে এক সাক্ষাতকারে ইয়ন বলেছেন, ‘কোরীয়-জাপান সম্পর্কে নতুন অধ্যায় সূচনায় জাপান সরকার যোগ দেবে বলে আমি আস্থাশীল।’
কিন্তু, দুদেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে ইতিহাস এক বড়ো বিষয় হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। বিশেষকরে যুদ্ধকালীন যৌনদাসীদের ব্যবহার, যাদের ‘কমফোর্ট উইমেন’ বলা হয় এবং জোরপূর্বক শ্রমসহ জাপানের ৩৫ বছরের ঔপনিবেশিক শাসনের সময় সংঘটিত নৃশংসতা উল্লেখযোগ্য।
এছাড়া ২০১৮ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার আদালত জাপানী সংস্থাগুলোকে জোরপূর্বক শ্রমের শিকার ও তাদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশের পর দু’দেশের সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকে।
(ঢাকাটাইমস/১৬মার্চ/এসএটি)

মন্তব্য করুন