গাঁজা নিয়ে রামপুরায় ব্যবসায়ীকে ফাঁসাতে গিয়ে অবরুদ্ধ দুই পুলিশ
রাজধানীর রামপুরায় জিডির তদন্তে গিয়ে ব্যবসায়ীকে গাঁজা দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে পুলিশের দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এসময় স্থানীয়রা তাদের অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে কৌশলে তারা সেখান থেকে ছাড়া পান।
শনিবার বিকালে পূর্ব রামপুরার জামতলা শহীদ মিনার এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। ঘটনার বেশ কিছু ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তারা হলেন- রামপুরা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নুরুল ইসলাম ও সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) রাসেল মিয়া।
এদিকে রামপুরা থানা পুলিশের দাবি, ঘটনাটি বিচ্ছিন্ন। যেখানে সমস্যা হয়েছিল, সেখানেই সমাধান করা হয়েছে।
জানা গেছে, রামপুরা থানায় করা একটি জিডি তদন্ত করতে গিয়ে ওই দুই পুলিশ ব্যবসায়ী আলী বিন তালহাকে গাঁজা দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করেন।
তালহা রামপুরা থানা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি আলী আল জিদানের ভাই।
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী ঢাকা টাইমসকে বলেন, 'ব্যবসা নিয়ে বিরোধের জেরে রামপুরা থানায় তার বড় ভাই তালহার নামে একজন জিডি করেন। পরে বিকালে রামপুরা থানার এসআই নুরুল ইসলাম, এএসআই রাসেল মিয়া তাদের এক সোর্সকে নিয়ে আমাদের রামপুরার বাসায় আসেন। এ সময় পুলিশ আমাদের বাসা তল্লাশি করতে চায়। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে এসআই নুরুল একটি গাঁজার প্যাকেট দিয়ে তার বড় ভাইকে আটক করতে যান।’
বিষয়টি জানাজানি হলে গলির অন্য বাসিন্দারা ছুটে আসেন। এসময় অনেকেই পুরো ঘটনা ভিডিও করেন। পরে খবর পেয়ে রামপুরা থানা পুলিশের ঊধ্বর্তন কর্মকর্তারাও ঘটনাস্থলে আসেন।
যে দৃশ্য সবাই মোবাইলে ধারণ করেছেন:
ঢাকাটাইমসের হাতে আসা বেশ কয়েকটি ভিডিওতে দেখা গেছে, পুলিশ কর্মকর্তা নুরুল ইসলামের কাঁধে ঝোলানো ব্যাগে পলিথিনে মোড়ানো গাঁজার পোটলা রয়েছে। যা নিয়ে কয়েকজন অভিযোগ তোলেন। ব্যবসায়ী তালহার ভাই জিদান এ নিয়ে এসআই নুরুলের কাছে জানতে চাচ্ছেন।
পুলিশ কর্মকর্তা ব্যাগটি তার পাশে থাকা আনসার সদস্যকে দিয়ে দেন। পলিথিনে মোড়ানো একটি পোটলা দেখিয়ে জিদান বলেন, এই গাঁজার পোটলা দিয়ে ফাঁসিয়ে তার বড় ভাইকে ধরে নিতে এসেছেন এসআই নুরুল। তখন এলাকাবাসীর তোপের মুখে পড়েন দুই পুলিশ।
এসময় পুলিশ সদস্য এএসআই রাসেল মিয়াকে ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়তেও দেখা যায়।
এ বিষয় রাতে রামপুরা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) গোলাম মওলা ঢাকাটাইমসকে বলেন, 'ওই ঘটনা তো তখনই শেষ হয়ে গেছে। এটা ভুল বোঝাবুঝি ছিল, ওখানে.....। অনেক লোকজন জড়ো হয়ে গেছিল তো হাউখাউ হয়েছিল।'
ওখানে পুলিশ ব্যাগ ভরে গাঁজা নিয়ে গিয়েছিল কেন এমন প্রশ্নে গোলাম মওলা বলেন, ‘না.. না পুটলা-টুটলা এসব নেয়নি। আমরাও ঘটনাস্থলে পাইনি।’
ভিডিওতে ব্যাগে গাঁজার পুটলা দেখা গেছে এমন প্রশ্নে রামপুরা থানা পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, 'ভাই এ বিষয়টি আমি জানি না।'
পুলিশের ওই সদস্যরা কি এখন ডিউটি করছেন জানতে চাইলে গোলাম মওলা বলেন, ‘তারা বাসায় চলে গেছেন। রাত আটটা পর্যন্ত তাদের ডিউটি ছিল। আর তাদের বিষয়ে আমাদের কাছে কেউ কোনো অভিযোগও দেয়নি।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ভিডিও নিয়ে পুলিশ তদন্ত করবে কি না প্রশ্নে রামপুরা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) বলেন, ‘এটা দেখি ঊধ্বর্তনদের সঙ্গে কথা বলে।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত দুই পুলিশ কর্মকর্তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
(ঢাকাটাইমস/১৯ মার্চ/এসএস/এলএ)