টঙ্গীতে সেতুর বাঁধে মৃত প্রায় তুরাগ নদ, পানি প্রবাহ বন্ধ

মো. রাজীব হোসেন, টঙ্গী-পূবাইল (গাজীপুর)
  প্রকাশিত : ২৮ মার্চ ২০২৩, ১৭:০৯
অ- অ+

পরিত্যক্ত ঘোষণার পর তুরাগ নদের ওপর নির্মিত প্রায় শত বছর আগের সেতুটি এরই মধ্যে ভেঙে ফেলা হয়েছে। প্রায় কয়েক মাস আগে শুরু হয় সেতু অপসরনের কাজ। পুরনো সেতুটি ভেঙে নদের ওপর নির্মাণ করা হচ্ছে বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের উড়ালসড়কের পিলার।

সেতুর পিলার ও নিচের অংশে ভারি যন্ত্রপাতি স্থাপনের অজুহাতে মাটি দিয়ে নদের কয়েকশ ফুট জায়গা জুড়ে দেয়া হয়েছে বাঁধ। এতে নদের প্রশস্ত কমে গিয়ে পানি প্রবাহ প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। নদের পানিতে ছোট বড় সকল নৌযান চলাচল এখন বন্ধ রয়েছে।

গাজীপুরকে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে জুড়ে দেবার একমাত্র সেতু ও তার নিচের অংশের চিত্র এটি। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তুরাগ নদ ভরাট করে সেতু অপসরণ ও পিলার নির্মাণের কাজ করেছে। পানির প্রবাহ বন্ধ করে নদে মাটি ফেলে বাঁধ দেওয়ায় পানি প্রবাহের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বিআইডব্লিউটি-এর যথাযথ অনুমতি না নিয়ে নদ ভরাট ও পানি প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করাটা বেআইনি।

সোমবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শুষ্ক মৌসুমে নদের পানি কমে গেছে। অধিকাংশ স্থানে নদের পাড় দখল ও দূষণে ভুগছে তুরাগ। সেতুর নিচের অংশে দুই পাশে মাটি ফেলে বাধ দেয়া হয়েছে। নদের পানিতে বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের উড়ালসড়কের কয়েকটি পিলার স্থাপনের কাজ চলছে। এতে নদের ওই অংশ সরু খালে পরিণত হয়েছে।

তুরাগ নদের নৌকা চালক আমিনুল বলেন, তুরাগ নদের এই অংশে প্রায় ৭০টি ছোট নৌকা আছে। নদের পাশেই টঙ্গী বাজার। আমরা শুধু এখন মানুষ পারাপার করি। মাটি দিয়ে বাঁধ দেওয়ায় এখন ট্রলার চলাচল করতে পারে না।

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৫৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর গিয়াস উদ্দিন সরকার বলেন, নদের উভয় পাশে মাটি দিয়ে বাঁধ দেয়া হয়েছে। নদটি সরু হয়ে গেছে। বিষয়টি সম্পর্কে বিআরটি প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালকের সঙ্গে কথা বলেছি।সেতুটি ভেঙে ফেলার পর মাটি সরিয়ে নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক আনোয়ার সাদাত বলেন, বাঁধ দিয়ে সেতু নির্মাণ নয়, যেন তুরাগ নদকে গলা টিপে হত্যা করা হচ্ছে। বিআরটি প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের জানালেও তারা কোন ব্যবস্থা নেয়নি। এরই প্রতিবাদে আমরা আগামী পাঁচ এপ্রিল প্রতিবাদ সভা ডেকেছি।

টঙ্গী নৌ পুলিশ ফাড়িঁর ইনচার্জ (পরিদর্শক) হযরত আলী মিলন বলেন, তুরাগ নদের পানি প্রবাহ বন্ধ করেই সেতুটি ভাঙা ও উড়াল সেতুর পিলার নির্মাণ করা হচ্ছে। গত কয়েকদিন আগে নৌকা চলাচলের জন্য কয়েক ফিট খুলে দেয়া হয়েছে। এটি সরকারের মেগা প্রজেক্ট।আমাদের তেমন কিছুই করার নেই।

টঙ্গী নদী বন্দরের সহকারী বন্দর কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহ আলম মিয়া বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নদের পানি প্রবাহ বন্ধ করে সেতুটি অপসারণ ও উড়াল সেতুর পিলার নির্মাণ করে করে আসছিল। এ বিষয়ে বিআরটি প্রকল্পের কর্মকর্তাদের ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বলা হয়েছে। নদের মাঝের অংশে কিছুটা মাটি ভেকু দিয়ে সরিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করেছি।

সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম মোল্লা বলেন, সেতু অপসরন ও উলাড়সেতুর পিলার নির্মাণকাজের দায়িত্ব আমাদের নয়। এটি বিআরটি প্রকল্পের অধীনে।

বিআরটি প্রকল্পের পরিচালক মহিরুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে অনুমতি নিয়েই নদের ওপর উড়াল সেতু নির্মাণের কাজ চলছে। নদের মাঝে পিলার স্থাপন করতে গিয়ে কিছু অংশ মাটি দিয়ে ভরাট করা হয়েছে। কাজ শেষে মাটি অপসরণ করা হবে।

(ঢাকাটাইমস/২৮মার্চ/এআর)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
অনুমোদনহীন সংগঠন গঠনের বিষয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের সতর্ক করেছে বিএনপি
সংস্কার বিষয়ে বিএনপির আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই: মির্জা ফখরুল
মসজিদের দোতলা থেকে শিশুর রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার 
দেশে ফিরেছেন ৬৬ হাজার ৩৬২ হাজি, মৃত্যু ৪৩ জনের
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা