নীলফামারীতে মামলা তুলে নিতে আইনজীবীকে হত্যাচেষ্টা

নীলফামারী প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৯ এপ্রিল ২০২৩, ১৭:২৪

নীলফামারী ডোমারে মামলা তুলে নিতে অ্যাডভোকেট বিপুলার সরকারকে (বিপুল) সন্ত্রাসী কায়দায় অতর্কিত হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে তিনি আহত হলেও অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান। আহত আইনজীবী উপজেলার সোনারায় ইউনিয়নের বাড়াগাছা এলাকার মৃত. নুরুল ইসলাম সরকারে ছেলে।

এ ঘটনায় ১০ এপ্রিল ডোমার বিজ্ঞ আমলী আদালতে মামলা দায়ের করেন অ্যাডভোকেট বিপুলার সরকার বিপুল।

মামলায় আসামিরা হলেন- মৃত. লুৎফর রহমানের ছেলে মো. কামরুজ্জামান কামু (৪৫), শামীম রহমান (রব্বু) (৪২), মো. আসাদুজ্জামান (৪৯), মৃত. জমির উদ্দিনের ছেলে তৌহিদুল ইসলাম মানিক (৫৫), শফিকুল ইসলাম শফি (৫২) আঞ্জুনা বেগম (৫৮) ও মালা বেগম (৪০)।

এর আগে গত শুক্রবার (৭ এপ্রিল) সকালে বিপুলার সরকার বিপুল গ্রামের বাড়ি হতে খামার বাড়ি পরিদর্শনের জন্য বের হলে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তার ওপর এ হামলা চালান সন্ত্রাসী বাহিনীরা।

এজাহারের সংক্ষিপ্ত বিবরণীতে জানা যায়, ভাই-বোন ঢাকায় থাকার কারণে স্ত্রী ও শিশু সন্তানসহ একা গ্রামের বাড়িতে বসবাস করেন বিপুল। ওইদিন বাড়ির সামনে হিরিম্বোডের (ইটের) রাস্তায় উপরে বেআইনি সমাবেশ করে বিপুলার সরকার বিপুলের পরিবারকে অকথ্য অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। তিনি তাদের কথায় কোনো প্রতি উত্তর না করে নিজের কাজে রওনা হন। সেই সময় কামরুজ্জামান কামুর সহযোগীরা মোটরসাইকেল আটক করে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার জবাব চায়। তিনি বলেন আদালতের বিষয় আদালতে নিষ্পত্তি হবে। কামরুজ্জামান কামু ক্ষিপ্ত হয়ে তার পাঞ্চাবীর কলার টেনে ছিঁড়ে দেয় এবং বুকে জোরে শোরে ঘুষি মারে। বিপুল মোটরসাইকেল থেকে পড়ে গেলে সন্ত্রাসীদের হাতে থাকা লাটি দিয়ে বুক, পিট ও উরুতে ডাং-মার শুরু করে রক্তাক্ত কালশিরা জখম করে। এরপর তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথার মাঝ বরাবর জোরে আঘাত করলে সে মাথা সরে নেয়। যার ফলে বাম হাতের কনুতে আঘাত লাগে এবং রক্তাক্ত জখম হয়। সেই সময় কামরুজ্জামান কামু ও তার সহযোগীরা হত্যার উদ্দেশ্যে অতংর্কিত ভাবে বিপুলকে দুই হাত দ্বারা গলা চিপে ধরে শ্বাস রোধ করার চেষ্টা করে।

বিপুলার সরকার বিপুল বলেন, আমার উপরে সন্ত্রাসীরা ডাং মার শুরু করলে সেটা দেখে আমার দাদি মর্জিনা বেগম আমাকে রক্ষার জন্য ছুটে আসে। ওদের কর্যকলাপ দেখে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। সে সময় স্থানীয় লোকজন দাদিকে খুলিতে বসার ঘরে নিয়ে আসে এবং তাৎক্ষনিক ভাবে গ্রাম্য চিকিৎসককে খবর দেয়। চিকিৎসক বিভিন্ন চেক-আপ করে দাদিকে মৃত ঘোষণা করেন। সে সময় ডাংমারের বিষবেদনায় আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেললে আমার পরিবারের লোকজন চিকিৎসার জন্য নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন।

তিনি আরও বলেন, গত ৬ এপ্রিল তারিখ মিথ্যা তথ্য দিয়ে আমার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করে। পরের দিন তারা আমাকে পরিকল্পিত ভাবে ৭ এপ্রিল তারিখে আমাকে হত্যার চেষ্টা করেন।

বিপুল বলেন, সাংবাদিক পরিচয়ে স্থানীয় এক ব্যক্তি আামাকে ফোন করে ঘটনার বিষয় জানতে চাইলে আমি বলি নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছি। তাকে সরাসরি কথা বলার জন্য দেখা করতে বলি। কিন্তু তিনি প্রতিপক্ষের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে অসম্পূর্ণ তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তিমুলক সংবাদ প্রকাশ করেন। আমি সন্ত্রাসী বাহিনীদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাই।

জানতে চাইলে ডোমার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদ উন নবী বলেন, এ বিষয় আদালতে মামলা হয়েছে। আমারা তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্তা নিবো।

উল্লেখ্য, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে কামরুজ্জামান কামু ও তার বাহিনীরা বিপুলার রহমান বিপুলের বাড়ি অবরুদ্ধ করে টিনের বেড়া লাগিয়ে চলা ফেরা অসুবিধা সৃষ্টি করে।তাই টিনে বেরা অপসারনের দাবিতে বিঞ্জ অতিরিক্ত জেলা মেজিস্টেট আদালতে পিটিশন ১৯৩/২৩ নং মোকদ্দমা আনায়ন করেন এবং বেড়া সরানোর আদেশ প্রাপ্ত হন। আসামিগণের দ্বারা সংঘটিত ফৌজদারি অপরাধে বিচারের জন্য আমলী আদালত ডোমারে ১৪৩/১৪৯/৪৪৮/৪২৭/ ৫০০/ ৫০৬/(২)/৩৪ ধারায় সিআর ৬৩/২৩(Do) নং মোকদ্দমা দায়ের করেন। আসামি গণ তাতে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে বিপুলকে হত্যার পরিকল্পনা করতে থাকেন।

(ঢাকাটাইমস/১৯এপ্রিল/এআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :