চলনবিলের হাট-বাজারে ধুন্দি বিক্রির ধুম

চলনবিলে বর্ষার পানি আসতে শুরু করেছে। দিন দিন নিম্মাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। আর বর্ষা মৌসুমকে কেন্দ্র করে সিরাজগঞ্জের তাড়াশে বিভিন্ন হাট-বাজারে মাছ ধরার ধুন্দি (চাই) বিক্রির ধুম পড়েছে।
জেলেরা জানান, বর্ষা মৌসুমে ক্ষেতে কাজ নেই, তাতে কী? জীবনযুদ্ধে খেটে খাওয়া মানুষগুলো হারতে নারাজ। জীবন-জীবিকার জন্য অভাবিরা এ সময় বেছে নেয় অন্য পেশা। মাছ ধরার এক প্রকার যন্ত্র যার নাম খলসুনি। আবার কেউ কেউ স্থানীয় ভাষায় ধুন্দী বা চাঁই বলে থাকে। যাই যে নামেই ডাকুক না কেন মাছ সেই যন্ত্র তৈরির কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন এ এলাকার হাজার হাজার মানুষ। বাঁশ ও তালের আঁশ দিয়ে তৈরি করে বিভিন্ন হাট-বাজারে বিক্রি করছেন।
সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার নওগাঁ হাট, গুল্টা হাট, রায়গঞ্জের নিমগাছীর হাট, সলঙ্গা হাট, চাটমোহর, ছাইকোলা হাট, মির্জাপুর হাট, নাটোরের গুরুদাশপুর হাট, চাচকৈড় হাটসহ অন্যান্য হাটে বিক্রি হয়ে থাকে। এসব হাটে পাইকারি ও খুচরা ক্রয়-বিক্রয় হয় খলসুনি।
খলসুনি ব্যবসায়ী প্রসান্ত কুমার জানান, তাদের দাদার আমল থেকেই তারা এ কাজের সঙ্গে জড়িত। অনেকে নতুন করে আসছে এ পেশায় তাই দিন দিন এর সঙ্গে মানুষের সম্পৃক্ততা বাড়ছেই।
চাটমোহর থানার বৃরায় নগর গ্রামের জেলহক হোসেন জানান, তারা প্রথমে বাঁশ চিরে খিল তুলে চিকন করে। সেগুলো শুকিয়ে নেয়া হয় হালকা রোদে। পচানো তালের ডাগুরের আঁশ দিয়ে খিল বান দেয়া হয়। এসব কাজে গৃহবধূ থেকে শুরু করে স্কুল-কলেজে অধ্যয়নরত ছাত্রছাত্রীরাও পরিবারকে সহায়তা করে থাকে।
গুরুদাসপুর উপজেলার চাচকৈড় গ্রামের শিপন ব্যাপারী জানান, তার গ্রামের প্রায় আড়াইশ’ পরিবার খলসুনি তৈরির কাজে জড়িত। আর আকারভেদে প্রতি জোড়া খলসুনির দাম ৪০০-১০০০ টাকা। কখনও কখনও এর চেয়েও বেশি। আকারের ওপর নির্ভর করে নির্ধারণ করা হয় দাম। এক জোড়া খলসুনি তৈরিতে সময় লেগে যায় প্রায় দু’তিন দিন। উপকরণ বাবদ খরচ হয় ২৫০ থেকে ৩০০টাকা
তাড়াশ উপজেলার নওগাঁ হাটে বিক্রি করতে আসা ব্যবসায়ী করিম আহমেদ বলেন, বর্ষার পানি আসায় এখন ধুন্দির চাহিদা প্রচুর। প্রতিদিন শতশত ধুন্দি বিক্রি হচ্ছে।
(ঢাকাটাইমস/০৫জুলাই/এসএ)

মন্তব্য করুন