পানি সংকটে মাদারীপুরে পাট চাষে জৌলুস হারাচ্ছে

মুক্ত জলাশয়ে তীব্র পানি সংকট, আশ ছাড়ানোর বিড়ম্বনাসহ নানা সংকটে জৌলুস হারাতে বসেছে পাট চাষে। এক সময়ে দক্ষিণের জেলা মাদারীপুরে জেলার প্রধান অর্থকারী ফসল হলেও কালের বির্তনে নানামুখী সমস্যায় সেটা এখন খোয়াতে বসেছে। যে কারণে জেলায় পাট চাষে আগ্রহ কমছে চাষিদের।
এদিকে কৃষি অফিস পাটের আশ ছাড়ানোর বিকল্প পন্থার কথা ভাবছেন। যদিও এতে আগ্রহী নয় চাষিরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাদারীপুর সদর উপজেলার কেন্দুয়া ইউনিয়নের কলাবাড়ী এলাকায় ভরা বর্ষায়ও পানির অভাবে পাট জাগ দেয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় চাষিরা। পর্যাপ্ত বৃষ্টির দেখা নেই। পাট কাটার সময় হলেও কৃষকরা কাটছেন না। এতে খরার কারণে ক্ষেতের পাট শুকিয়ে নষ্ট হচ্ছে। অনেকে পাট কেটে জমিতেই দাড় করিয়ে রাখতে বাধ্য হচ্ছে। কিছু মানুষ সামান্য ডোবা নালায় কিছু পাট জাগ দিচ্ছেন। সেখানেও পানির অভাব। পাট ক্ষেত থেকে নদীতে নিতে খরচ হচ্ছে দ্বিগুণ।
কথা হলো কৃষক আনোয়ার ফরাজীর সাথে তিনি বলেন, ‘আর পাট চাষ করমু না। এবার পানির দেখা নাই। ক্ষেতে পাট শুকিয়ে যাচ্ছে। কোথাও নেয়ার জায়গা নাই। চার পাঁচ কিলোমিটার দূরে খাল, সেখানে নিতে আনতে যা দাম পাবো, সবই শেষ হয়ে যাবে। এমন অবস্থা হলে আগামীতে পাট চাষের নামও নিমু না। এর চেয়ে জমি খালি রাখমু।’
আরেক কৃষক আবু তালেব বেপারী বলেন, ‘এবার সার বীজের যে দাম, তাতে খচর উঠবে না। ফলে আগামীতে আর পাট করবো না। পানির যে এমন অভাব হবে, তা বুঝি নাই। বর্ষার মৌসুম হলেও পানি নাই। এভাবে পানি সংকটের কারণে পাট জমিতে রাখছি। পানি না এলে এভাবে ক্ষেতেই রাখবো।’
মাদারীপুর জেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, জেলার পাঁচটি উপজেলায় চলতি মৌসুমে ৩৫ হাজার ৮৮৬ হেক্টর জমি থেকে পাট উৎপাদন হবে ৭৭ হাজার ৮২৪ মেট্রিক টন। যা গেলো দশ বছরে পাট চাষের জমির পরিমাণ করেছে অন্তত ১ হাজার হেক্টর। বর্তমানে জেলায় দ্বিতীয় অর্থকারী ফসল হিসেবে রয়েছে পাট। তবে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় পাটের ফলন ভালো হলেও জাগ দেয়া নিয়ে চিন্তিত চাষিরা।
মাদারীপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. সন্তোষ চন্দ্র চন্দ বলেন, ‘আষাঢ় মাস শেষে শ্রাবণ মাসের অর্ধেক হলেও বৃষ্টির দেখা নেই। ফলে সঠিক সময়ে পাট জাগ দিতে না পারলে কিছুটা লোকসানে পড়বেন কৃষকরা। তাই পাট জাগ দেয়ার জন্য বিভিন্ন উৎসের পানি ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছি। কৃষকরা বিকল্প পদ্ধতিতে পাট পচানোর বিষয় প্রশিক্ষণও দেয়া হচ্ছে।
(ঢাকাটাইমস/২৪জুলাই/এসএ)

মন্তব্য করুন