হরিরামপুরে গরুর লাম্পি স্কিন রোগে দিশেহারা খামারিরা

হরিরামপুর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২০ আগস্ট ২০২৩, ১৪:৫৮

মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে বিভিন্ন এলাকায় বাড়ছে ল্যাম্পিং স্ক্রিন ডিজিজ (এলএসডি) রোগে আক্রান্ত গরুর সংখ্যা। খামারিদের আঞ্চলিক ভাষায় এটিকে গুটি রোগ বলা হয়। তবে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা বলছেন, এটা ভাইরাসজনিত রোগ।

ভাইরাসজনিত এই রোগ ইতোমধ্যে গ্রামে গ্রামে ছড়িয়ে পড়েছে। হতাশা আর দুশ্চিন্তায় রয়েছে খামারিরা। ইতিমধ্যে ব্যপক ক্ষতিও হয়েছে অনেকের। এছাড়াও খামারিদের অভিযোগ ডেকেও তাদের দুঃসময়ে পাওয়া যায় না। এদিকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়েরও অভিযোগ উঠেছে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের কর্মকর্তা ও খামারিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এই রোগটি গ্রীষ্মের শেষ ও বর্ষার শুরুতে মশা-মাছি বিস্তারের সময় ব্যপক আকার ধারণ করে। মশা-মাছি ও খাবারের মাধ্যমে এক গরু থেকে অন্য গরুতে রোগ ছড়ায়। টিকার মাধ্যমে গরুকে রক্ষা করা সম্ভব।

এ রোগের লক্ষণ হলো, গরুর শরীরের চামড়ার বিভিন্ন স্থানে ছোট ছোট গুটি উঠে, অনেকটা আচিলের মত, গরুর শরীর প্রচুর গরম হয়, চামড়া ফুলে গুটি-গুটি ক্ষতের সৃষ্টি হয়, পা এবং ঘাড়ে বেশি ওঠে, চোখ দিয়ে পানি পরে, এক সময় খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে মারাও যেতে পারে। এমতাবস্থায় গরুকে মশারির ভেতর রেখে চিকিৎসা করার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।

দড়িকান্দি গ্রামের খামারি মো. সিকান্দার বলেন, আমার ৬ টা গরুর মধ্যে বর্তমানে তিনটার অবস্থা খুব খারাপ। পশু হাসপাতালের কর্মকর্তারা গত দশ-বারোদিন আগে এসে ১৫০০ টাকার বিনিময়ে ইনজেকশন দিছে, এরপর প্রেসক্রিপশন লিখে দিছে মশারির ভেতর রেখে চিকিৎসা করে যাচ্ছি। এখন পর্যন্ত অবস্থার অবনতি ছাড়া উন্নতি হয়নি।

খালপাড় বয়ড়া গ্রামের খামারি মো. মজলিশ বলেন, আমার ১১ মাসের ষাঁড় বাছুরটি মাসখানেক পূর্বে হঠাৎ পুরো শরীর জুড়ে গুটি উঠে সাথে জ্বর আর ঠান্ডায় গরুটি অসুস্থ্য হয়ে পরে। পশু হাসপাতালে ২ দিন নিয়ে দেখাইছি তারা গরুকে সুই দিয়ে দিছে কিছু ওষুধ দিয়ে বলছে সেরে যাবে। সাথে আরও বলে এই রোগের চিকিৎসা নাই, আরও টাকা চায়। টাকা না দিলে আসতেও চায় না। পরে তাদের অবহেলার কারণে প্রাইভেট চিকিৎসা দিয়েও গরুটি রক্ষা করতে পারলাম না। মারাই গেলো।

দড়িকান্দি গ্রামের এক খামারি বলেন, আমার গরুটির বয়স প্রায় এক বছর। গত দেড়মাস আগে হঠাৎ একদিন দেখি গরুর পুরো শরীরে গোটাজাতীয় কি যেন উঠছে, সাথে প্রচুর জ্বর। কয়েকদিন পর গরু খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে দেয়। রোগ হওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে আমার গরুটি মারা যায়।

হরিরামপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, এই রোগটি ভাইরাসজনিত। এর নাম ল্যাম্পিং স্ক্রিন ডিজিজ (এলএসডি) এই রোগটি গত ৩/৪ বছর যাবৎ সারাদেশেই ছড়িয়ে পড়েছে। ডেঙ্গুর মতই মশা-মাছিবাহিত রোগ। এই রোগটি গরুর স্ক্রীনেই বেশি দেখা যায়। মাঝে মাঝে শ্বাসকষ্ট দেখা দিতে পারে। এই রোগের কোন ভ্যাকসিন আমাদের দেশে নেই।

তিনি আরও বলেন, এই উপজেলায় আনুমানিক প্রায় ২ থেকে ৩% গরু এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এই রোগ থেকে পুরোপুরি সুস্থ্য হতে প্রায় ১ থেকে দেড় মাস সময় লাগে। অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার অফিস থেকে একের অধিকবার কেউ সেবা দিতে গেলে ভুক্তভোগীরা বিরক্ত হতে পারে। দু-এক জায়গায় এ রকম হতে পারে বলেও স্বীকার করেন তিনি।

(ঢাকাটাইমস/২০ আগস্ট/ ইএইচ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

সারাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :