শ্রীপুরে দুর্নীতির অভিযোগে কলেজ অধ্যক্ষকে অব্যাহতি

গাজীপুরের শ্রীপুরের মিজানুর রহমান খান মহিলা ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষকে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
গত রবিবার এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শক মিজানুর রহমান খান মহিলা ডিগ্রী কলেজ কর্তৃপক্ষকে জানায়, কলেজের জ্যৈষ্ঠতম পাঁচজন শিক্ষকের মধ্যে না থাকায় শেখ নাজমা আক্তারের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালনের কোনো সুযোগ নেই।
বিজ্ঞপ্তিতে কলেজের উপাধ্যক্ষ অথবা জ্যেষ্ঠতম পাঁচজন শিক্ষকের মধ্য থেকে একজনকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব দেয়া ও আগামী ৬ মাসের মধ্যে নিয়মিত অধ্যক্ষ নিয়োগের কার্যক্রম গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শেখ নাজমা আক্তার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব নেয়ার পর ১৫০ বর্গফুটের অফিস কক্ষে টাঙিয়েছেন পাঁচটি বৈদ্যুতিক পাখা। আছে দুটি এসি, শুধু তাই নয়, সেই কক্ষের সঙ্গে থাকা বাথরুমেও আছে বৈদ্যুতিক পাখা। শেখ নাজমা আক্তার দায়িত্ব নিয়ে কলেজে বসিয়েছেন ১৬টি সিসি ক্যামেরা। এতে ব্যয় দেখানো হয়েছে ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা।
মূলত এসব অনিয়মের অভিযোগেই তাকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
কলেজ থেকে পাওয়া তথ্যে জানা যায়, কলেজের নিয়মিত অধ্যক্ষ গত ২৮ ফেব্রুয়ারি অবসরে যাওয়ায় পর পরিচালনা পরিষদ রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক শেখ নাজমা আক্তারকে দায়িত্ব দেন। তিনি কলেজের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত মিজানুর রহমানের পুত্রবধূ। দায়িত্ব পেয়েই স্বামী আওয়ামী লীগ নেতা সাখাওয়াত হোসেন খানকে নিয়ে কলেজের যাবতীয় কাজ শুরু করেন তিনি। কলেজের ক্রয় কমিটিকে উপেক্ষা করে স্বামীকে নিয়ে নিজেই নানা কেনাকাটা শুরু করেন। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার, স্বেচ্ছাচারিতার কারণে পরে পরিচালনা পরিষদ গত ১২ সেপ্টেম্বর তাকে অব্যাহতি দিয়ে কলেজের উপাধ্যক্ষ আব্দুল বাতেন আকন্দকে দায়িত্ব দেন। গত ১০ দিন ধরে শেখ নাজমা আক্তার কলেজে অনুপস্থিত আছেন বলে জানা গেছে।
কলেজের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল বাতেন আকন্দ বলেন, অধ্যক্ষ কলেজে না আসায় শিক্ষা কার্যক্রমে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছিল, শিক্ষকদের বেতনও আটকে আছে, কলেজের স্বাভাবিক কাজ ব্যহত হচ্ছে। পরে আমাকে পরিচালনা পরিষদ দায়িত্ব দেয়। তবে কলেজের কেনাকাটার বিষয়ে সব ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষই নিয়ন্ত্রণ করেছেন।
কেনাকাটার বিষয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আমাদের কিছুই অবহিত করেননি। তবে শুনেছি, বিভিন্ন ভুয়া বিল ভাউচার দিয়ে কেনাকাটায় অনিয়ম করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে কলেজের সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শেখ নাজমা আক্তারকে ফোন দিলে তার স্বামী আওয়ামী লীগ নেতা সাখাওয়াত হোসেন খান ধরেন। তিনি বলেন, এ বিষয়গুলো নিয়ে আমরা আদালতে গিয়েছি। আদালত জেলা প্রশাসককে কলেজের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব দিয়েছেন।
জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম জানান, এ বিষয়ে তিনি অবগত নন। এ সংক্রান্ত কোনো চিঠিও তিনি পাননি।
কলেজের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি নিগার সুলতানা ঝুমার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
পরিচালনা পরিষদের সদস্য আবুল হোসেন বলেন, আমাদের সভাপতি কলেজের উন্নয়ন ও লেখাপড়ার মান বৃদ্ধিতে খুবই আন্তরিক। তবে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সবসময় অসহযোগিতা করে আসছিলেন। নানা অনিয়মের কারণে ও বিধি মোতাবেক না হওয়ায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরামর্শ মোতাবেক পরিচালনা পরিষদের সিদ্ধান্তে উপাধ্যক্ষকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
(ঢাকাটাইমস/১৯ সেপ্টেম্বর/ইএইচ)
সংবাদটি শেয়ার করুন
সারাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সারাদেশ এর সর্বশেষ

শেরপুরে দুর্গোৎসব উদযাপন উপলক্ষে প্রস্তুতি সভা

কাপ্তাইয়ে অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার

নীলফামারীতে এক বিয়েতেই ২০ বর

দিনাজপুরে দেড় শতাধিক স্মার্টফোন চুরি

বাউফলের মৃৎ পণ্য বিদেশের বাজারে

বদলগাছীতে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে আলু-পেঁয়াজ

হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবিতে মানবন্ধন

জামালপুরে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সমাবেশ

শ্রীপুরে যুবকের মরদেহ উদ্ধার
