দুর্যোগ প্রতিরোধে দরকার সবার সহযোগিতা ও সচেতনতা: মিজানুর রহমান

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
 | প্রকাশিত : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৮:২২

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) মো. মিজানুর রহমান বলেছেন, দুর্যোগ বন্ধ করা সম্ভব না, তবে প্রাণহানি বা সহনীয় কিংবা প্রতিরোধ বা ক্ষতি প্রশমিত করা সম্ভব। যে কোনো দুর্যোগ সরকারের একার পক্ষে প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। ব্যক্তি, ব্যবসায়ী, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন অংশীজনের সহযোগিতা ও সচেতনতা প্রয়োজন।

রবিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর মহাখালীতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে আয়োজিত কর্মশালায় তিনি এ কথা বলেন। 'দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় প্রাইভেট সেক্টরের অংশগ্রহণে কর্মকাঠামো এবং প্রাইভেট সেক্টর ওয়ার্কিং গ্রুপের কর্মপরিধি শীর্ষক কর্মশালায়’ অধিদপ্তরের ঊধ্বর্তন কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

কর্মশালায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, ‘যে কোনো অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় যদি ফাস্ট রেসপন্ডার দ্রুত সাড়া দেন তাহলে আগুনে ক্ষতি কম হয় বা প্রাথমিক পর্যায়েই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।’

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর সবাইকে সচেতন করার চেষ্টা করছে দাবি ডিজি বলেন, ‘অগ্নিকাণ্ড, বন্যা, ভূমি ধস বা ভূমিকম্পের মতো যে কোনো দুর্যোগে সরকারের পক্ষ থেকে হয়তো রিলিভ দিচ্ছি কিন্তু ক্ষতিটা সবার, ব্যবসায়ীর তো বটেই। সেজন্য ক্ষতিগ্রস্তদের চোখে যদি জল আসে, সচেতন হয়, তবেই স্বার্থকতা।’

মিজানুর রহমান বলেন, ‘দুর্যোগ জীবন ঘনিষ্ঠ বিষয়। দুর্যোগ বন্ধ করা সম্ভব না, তবে প্রাণহানি বা সহনীয় কিংবা প্রতিরোধ বা ক্ষতি প্রশমিত করতে পারি। প্রতিবছর বন্যা বা জলোচ্ছ্বাস আসবে, এটা অনুমিত। দুর্যোগে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। পীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। একটা কথা মনে রাখতে হবে, প্রকৃতি কিন্তু অনেক বদলেছে। সেজন্য আমাদের প্রস্তুতি রাখতে হবে৷ বন্যার আগে কক্সবাজারের কৃষকরা মোনাজাত পর্যন্ত করেছে। কিন্তু বৃষ্টি হয়নি। অথচ এক মাস পর বন্যা হয়ে গেলো।’

দুর্যোগ ও এর প্রতিরোধ ব্যস্থাপনার সমালোচনা না করে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের উন্নয়ন কাজ চলবে। দুর্যোগে উন্নয়ন কাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই বলে সমালোচনা বা থেমে থাকলে হবে না। আর সব সরকার করে দেবে না। ব্যবসায় লাভবান হবেন কিন্তু দুর্যোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা রাখবেন না; তা হবে না। নিজে সচেতন হই, শিখি, নিজের ঘরে স্ত্রী-সন্তানকে শেখাই। দুর্যোগ প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করি, নিরাপত্তা সরঞ্জাম ক্রয় করে ঘরে রাখি।’ আগের তুলনায় মানুষ অনেক বেশি সচেতন হচ্ছে ও সরকারের সচেতনতামূলক কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছে, শুনছে। বাংলাদেশ আগের তুলনায় অনেক বেশি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সক্ষমতা অর্জন করেছে বলেও দাবি করেন ডিজি।

কৃষি মার্কেটের ব্যবসায়ীরা একটু সচেতন হলেই বড় ক্ষতি থেকে রক্ষা পেত উল্লেখ করে তিনি বলেন, অনেক ব্যবসায়ী নগদ টাকা, ভাউচার রেখে গেছেন। সব পুড়ে ছাই হয়েছে কৃষি মার্কেটে। কোটিপতি ব্যবসায়ী আজ ফকির হয়েছেন। অথচ একটু সচেতনতাই আমাদের নিরাপদ করতে পারতো। দুর্যোগে সচেতনতায় ও প্রতিরোধ ব্যবস্থাপনা প্রাইভেট সেক্টরকে সম্পৃক্ত করতে হবে। বড় ক্ষতির সম্মুখীন হবার আগে অল্প খরচ, আর সচেতনতায় সম্ভব যেকোনো দুর্যোগ মোকাবেলা করা। অস্ত্র থাকলেই তো হবে না, প্রশিক্ষণ লাগবে৷ ফায়ার এলার্ম চালানো, পানির রিজার্ভ বাড়ানো ও হাইড্রেন্ট ব্যবস্থা ও চালানো, অগ্নিপ্রতিরোধ ব্যবস্থা সম্পর্কে জ্ঞানও অর্জন করতে হবে। আমাদের অনেক বড় ভবনে এমার্জেন্সি সিড়ি নাই। ভবনে ফায়ার স্টিংগুইশার রাখা, নিয়মিত বৈদ্যুতিক লাইন চেক করা। ভেজা কাপড় দিয়েই প্রাথমিকভাবে ফাইট করা যায়। কমন কিছু জ্ঞান প্রয়োগেই আগুন প্রাথমিক পর্যায়েই আগুন প্রতিরোধ করতে পারি। সতর্কতা জরুরি।

অ্যাকশন এইড বাংলাদেশের সুপার প্রকল্পের কনসোর্টিয়াম ম্যানেজার আ ম নাছির উদ্দিন বলেন, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স(এআই) ভিত্তিক মডেলটি ইনস্টল এবং ব্যবহার করতে তাদের উৎসাহ দিচ্ছি। সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে আগুন বা ধোয়া শনাক্ত করে তাৎক্ষনিক মেসেজ দেওয়ার প্রজেক্ট নিয়েছি। দুবছর ধরে আমরা এটা নিয়ে কাজ করছি। এটা আমরা ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে কাজ করার প্রক্রিয়ায় যেতে চাচ্ছি৷

অধিদপ্তরের পরিচালক (এমআইএম) নিতাই চন্দ্র দে সরকার, ‘১০৯০’ কে আমরা প্রমোট করছি। আগে টোল ছিল। সেটা ফ্রি করা হয়েছে। যে কেউ এখন খুব সহজেই এই নম্বর ডায়াল করে দুর্যোগ ও আবহাওয়া সম্পর্কে জানতে পারছে।

উল্লেখ্য, স্ট্রেন্দেনিং আরবান পাবলিক প্রাইভেট প্রোগ্রামিং ফর আর্থকোয়েক রেজিলিয়েন্স (সুপার) প্রকল্পটি একটি কনসোর্টিয়াম প্রকল্প। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন সিভিল প্রোটেকশন অ্যান্ড হিউম্যানিটারিয়ান এইডের আর্থিক সহযোগিতায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে একশন এইড বাংলাদেশ, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই), ইউনাইটেড পারপাস এবং ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ।

(ঢাকাটাইমস/২৪সেপ্টেম্বর/এসএস/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :