আমাজনে কাজ করছে ১০ লাখ রোবট, মানবকর্মীদের চাকরি হারানোর শঙ্কা

ঢাকাটাইমস ডেস্ক
  প্রকাশিত : ০২ জুলাই ২০২৫, ১৫:৪০
অ- অ+

বিশ্ববিখ্যাত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আমাজন গুদাম ব্যবস্থাপনায় অটোমেশনের নতুন এক যুগে প্রবেশ করেছে। কোম্পানিটি জানিয়েছে, তাদের বিভিন্ন ‘ফুলফিলমেন্ট সেন্টারও গুদামে ১০ লাখতম রোবট যুক্ত হয়েছে, যা মানবশ্রমের বিকল্প হিসেবে কাজ করছে।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছে, জাপানের একটি গুদামে আমাজনের ১০ লাখতম রোবট কাজ শুরু করেছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, অদূর ভবিষ্যতে এই সংখ্যাটি মানবকর্মীর সমান বা তার চেয়েও বেশি হতে পারে।

রোবটগুলোর দক্ষতা আরও বাড়াতে আমাজন চালু করেছে নিজস্ব জেনারেটিভ এআই মডেল ‘ডিপ ফ্লিট। এটি রোবটগুলোর গুদামের ভেতর চলাচল নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয়ের কাজ করবে। এর ফলে রোবটের গড় চলাচলের সময় ১০ শতাংশ হ্রাস পাবে, যার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি আরও বেশি কার্যক্ষম হয়ে উঠবে।

২০২৩ সালে আমাজন প্রথমবারের মতো হিউম্যানয়েড রোবট চালু করে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—‘ডিজিটরোবট, যার উচ্চতা ৫ ফুট ৯ ইঞ্চি এবং ওজন ১৪৩ পাউন্ড। এটি সামনে-পেছনে হাঁটতে পারে, বসতে পারে এবং হাতসদৃশ অংশ দিয়ে জিনিস তুলতে পারে।

ভালকাননামে রোবটিক বাহু ২০২৫ সালের মে মাসে চালু হয়, যা ১০ লাখ পণ্যের ৭৫ শতাংশ নিজে থেকেই তুলে রাখার সক্ষমতা রাখে। এটি প্রথম রোবট যা ‘স্পর্শের অনুভূতিপেয়েছে।

শুধু গুদামে নয়, ‘লাস্ট মাইল ডেলিভারিঅর্থাৎ গ্রাহকের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার কাজেও রোবট ব্যবহার শুরু করেছে আমাজন। বর্তমানে আমাজনের প্রায় প্রতি তিনটি ডেলিভারির মধ্যে দুটি কোনো না কোনোভাবে রোবটের মাধ্যমে সম্পন্ন হচ্ছে।

রোবট ব্যবহারের প্রভাবে বর্তমানে প্রতি গুদামে গড়ে মাত্র ৬৭০ কর্মী রয়েছে, যা গত ১৬ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। ২০১৫ সালে যেখানে এক কর্মী গড়ে ১৭৫টি প্যাকেজ হ্যান্ডেল করতেন, এখন সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩,৮৭০-এ।

বিশ্লেষকদের মতে, রোবট ব্যবহারের মাধ্যমে ২০৩০ সালের মধ্যে আমাজন বছরে ১০ বিলিয়ন ডলার সাশ্রয় করতে পারবে।

আমাজন দাবি করেছে, ২০১৯ সাল থেকে এখন পর্যন্ত তারা ৭ লাখের বেশি কর্মীকে নতুন প্রযুক্তির ওপর প্রশিক্ষণ দিয়েছে।

তাদের মতে, রোবট আসার ফলে নতুন ধরনের চাকরি তৈরি হচ্ছে।

তবে বাস্তবতা হলো, কিছু চাকরি হারানো অনিবার্য হয়ে উঠছে। এমনকি অ্যামাজনের করপোরেট পর্যায়ের কর্মীরাও ঝুঁকিতে।

সিইও অ্যান্ডি জ্যাসি এক চিঠিতে জানিয়েছেন, এআই ও অটোমেশনের ফলে করপোরেট স্তরেও কিছু কাজ কমে যাবে, আর সে অনুযায়ী মানুষের প্রয়োজনও কমবে।

একদিকে আমাজন অটোমেশনের মাধ্যমে নতুন প্রযুক্তির শিখরে পৌঁছেছে, অন্যদিকে মানবকর্মীদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তায় পড়েছে। রোবট এবং এআই ব্যবহারে লাভজনকতা যেমন বাড়ছে, তেমনি কর্মসংস্থানের চ্যালেঞ্জও বাড়ছে প্রতিদিন। রোবট যখন সব কাজ করবে, তখন মানুষ কোথায় দাঁড়াবে?

(ঢাকাটাইমস/২ জুলাই/আরজেড)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
হবিগঞ্জে ছুরিকাঘাতে এসএসসি পরীক্ষার্থী নিহত
আমেরিকার নিউ জার্সিতে বিমান দুর্ঘটনা, ১৫ জন আহত
যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়নি সেগুলো আলোচনা হচ্ছে: আলী রীয়াজ
পিআর পদ্ধতি বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশে আর কোনো স্থানীয় নেতার জন্ম হবে না: রিজভী
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা