দাফনের পর মেয়ের ফোন ‘বাবা আমি বেঁচে আছি’, তাহলে লাশটি কার?

ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার শৌলডুবী গ্রামের হাবিবুর রহমানের কন্যা হাসি বেগম (২৪)। তাকে মৃত মনে করে ২০ সেপ্টেম্বর তার পিতার তত্ত্বাবধানে শৌলডুবী কবরস্থানে দাফন করা হয়। কিন্তু এ ঘটনার ৫দিন পর ময়মনসিংহের নান্দাইল থেকে বাবার কাছে ফোন করে হাসি বেগম বলে ‘বাবা আমি বেঁচে আছি’। পরে তাকে পুলিশ উদ্ধার করে। তাহলে দাফন করা লাশটি কার? বিষয়টি নিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, গত ৭ সেপ্টেম্বর হাসি বেগম তার শ্বশুর বাড়ি থেকে বিদ্যুৎ বিল দেওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে সদরপুর আসার উদ্দেশ্যে বের হয়। সেই থেকে হাসি বেগমকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। এ ঘটনায় হাসির পিতা হাবিবুর রহমান ১১ সেপ্টেম্বর সদরপুর থানায় অভিযোগ করেন, তার কন্যা হাসি বেগমকে হত্যা করে লাশ গুম করেছে জামাতা মোতালেব শেখ (৪৫)। পরে ১৪ সেপ্টেম্বর হাসির স্বামী মোতালেব শেখ সদরপুর থানায় পাল্টা অভিযোগ করেন। তাতে বলা হয়, তার স্ত্রী নগদ টাকাসহ প্রায় ১০ লাখ টাকার মালামাল নিয়ে বাবার বাড়ি পালিয়ে গেছে।
ঘটনাচক্রে গত ২০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ভাঙ্গা উপজেলার মানিকদহ ইউনিয়নের আদমপুর এলাকার নাউটানা কুমের কচুরিপানার ভেতর থেকে শনাক্তের অযোগ্য একটি অর্ধগলিত নারীর লাশ উদ্ধার করে ভাঙ্গা থানা পুলিশ। পরবর্তীতে নিখোঁজ হাসি বেগমের মা সালমা বেগম লাশের কোমরে একটি তাবিজ ও পায়ের একটি নখ ছোট থাকায় নিখোঁজ হাসি বেগমের লাশ হিসেবে শনাক্ত করলে ময়না তদন্ত ও আইনগত প্রক্রিয়ার পর শৌলডুবী মদিনাতুল কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়।
এদিকে অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ চলা অবস্থায় গত ২৩ সেপ্টেম্বর হাসি বেগম ফোন করে তার পিতা-মাতাকে জানায় সে জীবিত আছে।
পারিবারিক সূত্র জানায়, পরকীয়ার কারণে হাসি বেগম তার প্রেমিক ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার মুস্তাকিমের বাড়িতে চলে যায়। ২৪ সেপ্টেম্বর সদরপুর থানার এসআই মো. নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল পুলিশ উক্ত হাসি বেগমকে ময়মনসিংহের নান্দাইল থেকে আটক করে সদরপুর থানায় নিয়ে আসে।
তাহলে শৌলডুবী গ্রামে দাফন করা লাশটি আসলে কার? কোথাকার কোন হতভাগ্য নারী ভাঙ্গা উপজেলার নাউটানা কুমের ভেতর কচুরিপানার নিচে মর্মান্তিক মৃত্যু বরণ করে নিল? এ প্রশ্ন জনমনে ঘুরপাক খাচ্ছে।
এ বিষয়ে সদরপুর থানা অফিসার্স-ইনচার্জ মো. মামুন আল রশিদ বলেন, ঘটনাটি ভাঙ্গা ও সদরপুর থানার জড়িয়ে। পূর্ণ তথ্য না পাওয়া পর্যন্ত এ বিষয়ে কিছু বলা যাচ্ছে না।
(ঢাকাটাইমস/২৬সেপ্টেম্বর/এআর)

মন্তব্য করুন