বরিশালে মোটরসাইকেল চালক হত্যা মামলায় একজনের ফাঁসি, ৩ জনের যাবজ্জীবন

বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলায় ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল চালক ফয়সাল হত্যা মামলায় একজনকে মৃত্যুদণ্ড ও তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো এক মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
সোমবার বরিশাল জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক কেএম রাশেদুজ্জামান রাজা এর রায় দিয়েছেন। রায়ে একজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় দণ্ডিত চার আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
যাবজ্জীবন দণ্ডিতরা হলেন- একই গ্রামের আব্দুল মজিদ বয়াতির ছেলে বেল্লাল হোসেন (৩৩), মৃত রুহুল আমিন বয়াতির ছেলে শাহিন মিয়া (৩২) ও সানু হাওলাদারের ছেলে ইদ্রিস হাওলাদার (৩০)।
খালাস পাওয়া সৈয়দ মৃধা (৩০) একই গ্রামের আব্দুল লতিফ মৃধার ছেলে।
মামলার বরাতে পিপি অ্যাডভোকেট সাজু জানান, দণ্ডিতরা ২০১৯ সালের ৪ মার্চ উপজেলার বালিগ্রামে মো. শহিদুল ইসলামের বাড়িতে গভীর নলকূপ স্থাপন করতে আসে। পরদিন ৫ মার্চ রাত সাড়ে ১১টার দিকে বালিগ্রামের সড়কে ভাড়ার মোটরসাইকেল চালক ফয়সালকে একা পায় তারা। তখন ফয়সালের পথরোধ করে গভীর নলকূপ স্থাপনের পাইপ বসানোর লোহার হ্যান্ডেল ও রড দিয়ে মাথায়-মুখমণ্ডলে সজোরে আঘাত করেন তারা। এরপর গলায় রশি দিয়ে ফাঁসে ফয়সালকে হত্যা করে পাশের ইউসুফ হাওলাদারের দোকানের পেছনে লাশ লুকিয়ে রাখে। পরে ফয়সালের মোবাইল ফোন, টাকা ও মোটরসাইকেল নিয়ে যায়। রাত সাড়ে ১২টার দিকে লুট করা মোবাইল ফোন, টাকা ও মোটর সাইকেলের ভাগবাটোয়ারা নিয়ে নিজেদের মধ্যে মারামারি করে। গৃহকর্তা শহিদুল এসে মারামারি থামানোর সময় মোবাইল ফোনে ফয়সালের ছবি দেখতে যায়। পরে শহিদুলের ঘরে পেছনে মোটরসাইকেল পেয়ে ফয়সালের বাবা বাদী নুরুল ইসলামকে খবর দেয়। তিনি এসে মোটরসাইকেল শনাক্ত করে।
একপর্যায়ে আটক চারজনকে গণপিটুনি দেয়া হয়। তারা ফয়সালকে হত্যা করে লাশ লুকিয়ে ফেলার কথা স্বীকার করে। ভোর রাতে পুলিশকে খবর দেয়া হয়। পুলিশ এসে ৬ মার্চ সকালে আসামিদের দেখানো স্থান থেকে ফয়সালের লাশ উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় ওই দিন নুরুল ইসলাম বাদী হয়ে নামধারী ৫ জনসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৩ জনকে আসামি করে বাকেরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করে।
বাকেরগঞ্জ থানার পরিদর্শক নকীব আকরাম হোসেন ৫ জনকে অভিযুক্ত করে ২০২০ সালের ৩১ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশীট) জমা দেয়।
বিচারক ২৮ জনের মধ্যে ১৩ জনের সাক্ষ্য নিয়ে রায় দিয়েছেন।
রায় ঘোষণায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন পিপি অ্যাডভোকেট ওবায়দুল্লাহ সাজু। এছাড়াও বাদী নুরুল ইসলাম সন্তান হত্যাকারীর ফাঁসি ও যাবজ্জীবন দণ্ড দেওয়ায় খুশি হয়েছেন।
(ঢাকা টাইমস/০৯অক্টোবর/প্রতিনিধি/এসএ)

মন্তব্য করুন