পঞ্চম শ্রেণির প্রশ্নপত্রে তৃতীয় শ্রেণির পরীক্ষা: তিন শিক্ষককে শোকজ

মাদারীপুর প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস
 | প্রকাশিত : ২৪ নভেম্বর ২০২৩, ১৫:১৩

মাদারীপুরের রাজৈরে একটি প্রাইমারি স্কুলে পঞ্চম শ্রেণির বিজ্ঞান প্রশ্নপত্র দিয়ে তৃতীয় শ্রেণির বিজ্ঞান পরীক্ষা গ্রহণ করেছেন সংশিষ্টরা শিক্ষকরা। বুধবার সকালে উপজেলার বৌলগ্রাম এলাকায় প্রতিষ্ঠিত ‘৪১নম্বর মাচরং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে’ তৃতীয় শ্রেণির মূল্যায়ন পরীক্ষায় এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার বিকালে তদন্ত করে সত্যতা মিলেছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার তপা বিশ্বাস।

মাদারীপুর জেলা শিক্ষা অফিসার তাপস পাল জানান, ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় বৃহস্পতিবার পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট প্রধান শিক্ষক মো. টিপু সুলতান, সহকারী শিক্ষক কাজী শাহাজুল ইসলাম ও শিক্ষিকা মেরিনা আক্তারকে শোকজ করা হয়েছে।

এছাড়া নতুন প্রশ্নপত্র তৈরি করে পুনরায় ভুক্তভোগী তৃতীয় ও পঞ্চাম শ্রেণির ওই শিশু শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেয়ার নিদের্শনা দেয়া হয়েছে।

শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবক সূত্রে জানা যায়, রাজৈর উপজেলার বৌলগ্রামের ৪১নম্বর মাচরং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন (ফাইনাল) পরীক্ষা শুরু হয়েছে। সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণি এবং দুপুর দেড়টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

বুধবার তৃতীয় ও পঞ্চম শ্রেণির গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়ের মধ্যে বিজ্ঞান পরীক্ষা ছিল। সকালে তৃতীয় শ্রেণির ২৩ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিতে আসলে তাদের হাতে পঞ্চম শ্রেণির বিজ্ঞান প্রশ্নপত্র দেয় শিক্ষক কাজী শাহাজুল। এরপর পরীক্ষা চলে দীর্ঘ ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিট। এত দীর্ঘ সময় পার হয়ে গেলেও ভুলটি কারো চোখে ধরা পড়েনি। পরে দুপুরে পঞ্চম শ্রেণির ২৪ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে আসলে বিজ্ঞান বিষয়ের প্রশ্নপত্র উল্টপাল্ট হওয়ার ঘটনা ধরা পড়ে।

তখন উপয়ান্ত না দেখে একপর্যায়ে তৃতীয় শ্রেণির পরীক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ওই প্রশ্নপত্র ফিরিয়ে এনে পঞ্চম শ্রেণির পরীক্ষা গ্রহণ করে শিক্ষকরা। পরবর্তীতে এ ঘটনায় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর অভিযোগ দেন অভিভাবকরা এবং ক্ষোভের সৃষ্টি হয় অভিভাবকদের মধ্যে।

ভুক্তভোগী তৃতীয় শ্রেণির পরীক্ষার্থীরা জানায়, ‘আমাদের যে প্রশ্ন দিছে তাতে কোন কিছুই কমন পড়ে নাই। তাই আমাদের পরীক্ষা ভালো হয় নাই। আমরা পরীক্ষা দিয়ে চলে যাওয়ার পর আমাদের বাড়ি গিয়ে প্রশ্নপত্র ফেরত এনেছেন রবিউল ভাই (স্কুলের দপ্তর)।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক কাজী শাহাজুল বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক টিপু সুলতান আমার হাতে যেভাবে প্রশ্নপত্র দিয়েছেন, আমি সেইভাবে এনেই পরীক্ষার্থীদের হাতে দিয়েছি। কিন্তু প্রশ্নপত্র চেক করে দেখি নাই।’

স্কুলের প্রধান শিক্ষক টিপু সুলতান বলেন, ‘বিজ্ঞান পরীক্ষার দিন আমার খালা মারা যাওয়ায় তড়িঘড়ি করে সহকারী শিক্ষকদের কাছে প্রশ্নপত্র দিয়ে চলে যাই। ভুলের বিষয়টি আমি বিকালে জানতে পারি। তৃতীয় শ্রেণির প্রশ্নের জায়গায় পঞ্চম শ্রেণির প্রশ্নপত্র দেওয়ায় আমি দুঃখিত। একই জায়গায় দুটি শ্রেণির প্রশ্নপত্র থাকায় আমি বিষয়টি খেয়াল করিনি।’

রাজৈর উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তপা বিশ্বাস বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সরেজমিনে তদন্ত করে এ ঘটনার সত্যতা পেয়েছি। এসময় বেশ কয়েকজন সাংবাদিক উপস্থিত ছিল। আমি আমার ঊধ্র্বতন কর্মকর্তাদের কাছে এ প্রতিবেদনটি সাবমিট করেছি। পরবর্তীতে তারা যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।’

মাদারীপুর জেলা শিক্ষা অফিসার তাপস পাল জানান, ‘ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় ইতোমধ্যে বৃহস্পতিবার বিকালেই পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট তিন শিক্ষককে শোকজ করা হয়েছে ও নতুন প্রশ্নপত্র তৈরি করে পুনরায় ভুক্তভোগী তৃতীয় ও পঞ্চম শ্রেণির ওই শিশু শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেয়ার নিদের্শনা দেয়া হয়েছে।’

(ঢাকা টাইমস/২৪নভেম্বর/প্রতিনিধি/এসএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

দিনাজপুরে ইউপি নির্বাচনে সহিংসতায় নিহত ১, আহত ৬

নগরকান্দায় হিট স্ট্রোকে প্রাণ গেল হোটেল ব্যবসায়ীর

দিনাজপুরে ভোট গণনার পর সংঘর্ষ, পুলিশের গুলিতে ইউপি সদস্য প্রার্থীর সমর্থক নিহত

বহিষ্কৃত প্রার্থীর পক্ষে প্রচারে অংশ নিলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে: সেলিম ভূইয়া

নোয়াখালীতে গরমে অসুস্থ এক শিক্ষক ও ১৪ শিক্ষার্থী

জয়পুরহাটে জামায়াত-শিবিরের ৬১ নেতাকর্মী কারাগারে

হিট স্ট্রোকে মাদারীপুরে ব্যবসায়ী ও কৃষকের মৃত্যু

সালথায় তীব্র গরমে অসুস্থ স্কুলের ১৩ শিক্ষক-শিক্ষার্থী 

আদালত চত্বর থেকে পালিয়ে যাওয়া আসামি ঢাকায় গ্রেপ্তার

শতকোটি ব্যয়ে রংপুরে হচ্ছে ৪৬০ বেডের ক্যানসার, কিডনি ও হৃদরোগ হাসপাতাল

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :