নওগাঁয় চাহিদা বাড়ছে বোর্ডের আসবাবপত্রের

সাজেদুর রহমান সাজু, নওগাঁ
 | প্রকাশিত : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৭:৩৬

নওগাঁয় কাঠের বিকল্প হিসেবে দিনদিন জনপ্রিয় হচ্ছে পারটেক্স ও মালয়েশিয়ান বোর্ডের আসবাবপত্র। তুলনামূলক দাম কম ও মানে ভালো হওয়ায় সব শ্রেণি পেশার মানুষের কাছে পছন্দের এসব ফার্নিচার। ঘুনে ধরা বা পোকা না লাগার কারণে সহজে নষ্ট হয় না এসব আসবাবপত্র। এতে বাড়ছে চাহিদা। যেখানে মালিক, কারিগর ও কর্মচারির কর্মসংস্থান হয়েছে প্রায় ৪ হাজার। প্রতিদিন জেলায় প্রায় ১৫ লক্ষ টাকার বেচাকেনা হচ্ছে এসব আসবাবপত্র।

একসময় কাঠের আসবাবপত্রের ব্যাপক চাহিদা ছিল। তবে কাঠের স্বল্পতা ও দাম বেশি হওয়ার কারণে সেই স্থান এখন দখল করতে শুরু করেছে পারটেক্স ও মালয়েশিয়ান বোর্ড দিয়ে তৈরি আসবাবপত্র। এসব বোর্ড থেকে তৈরি হচ্ছে চেয়ার, টেবিল, খাট, সোফাসেট, শোকেস, ওয়্যারড্রোব, আলমারি, ডাইনিং ও টি টেবিল, ড্রেসিং টেবিলসহ বিভিন্ন আসবাব। এসব আসবাবপত্র বিক্রির জন্য গড়ে উঠেছে শোরুম। অফিস ডেকোরেশন ও ঘর সাজাতে এখন পছন্দের তালিকায় রয়েছে পারটেক্স ও মালয়েশিয়ান বোর্ডের তৈরি আসবাবপত্র। সাধ্যের মধ্যে ক্রেতারা পছন্দ করে কিনছেন এসব আসবাবপত্র।

কাঠের আসবাবপত্রের বিকল্প হিসেবে এর জনপ্রিয়তা বাড়ছে। একটি কাঠের খাট যেখানে ৩০-৩৫ হাজার টাকা, সেখানে একটি বোর্ডের খাট ১০-১৫ হাজার টাকায় পাওয়া যায়। এছাড়া খাট ও আলমারি ১০-১৫ হাজার টাকা, ড্রেসিং টেবিল ৭-৮ হাজার টাকা, ওয়্যারড্রোব ও সুকেস ১২-১৪ হাজার টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।

সদর উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামের গৃহবধূ পারভিন আক্তার ঢাকা টাইমসকে বলেন, তিন পাল্লার একটা আলমারি ও একটা ড্রেসিং টেবিল কিনতে খরচ হয়েছে ২৪ হাজার টাকা। যদি কাঠের হতো সেখানে দাম প্রায় তিনগুণ।

বোর্ড দিয়ে তৈরি আসবাবপত্রের কারিগর মিজানুর রহমান মঞ্জু বলেন, আগে আমরা কাঠ দিয়ে আসবাবপত্র তৈরি করতাম। সময় এবং শ্রম দুটোই বেশি লাগতো। গত প্রায় ২০ বছর থেকে বোর্ড দিয়ে আসবাবপত্র তৈরি করা হচ্ছে। এতে সময় ও শ্রম কম লাগছে এবং মজুরিও বেশি পাওয়া যায়। এ কারণে অধিকাংশ কারিগররা এখন ঝুঁকছেন পারটেক্স ও মালয়েশিয়ান বোর্ড দিয়ে তৈরি আসবাবপত্রে। বোর্ডের দাম কমলেও বেড়েছে হার্ডওয়ার (কবজা, নাট-বল্টু ও স্ক্রু) সামগ্রীর দাম। এতে লভ্যাংশের পরিমাণ কিছুটা কমেছে।

ফিরোজ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী ফিরোজ হোসেন বলেন, হঠাৎ করেই কমেছে পারটেক্স ও মালয়েশিয়ান বোর্ডের দাম। প্রকারভেদে প্রতিটি বোর্ডের দাম কমেছে ২০০-৩৫০ টাকা। ভালো মানের একটি বোর্ডের দাম বর্তমানে দেড় হাজার টাকা। যা আগে ছিল ১ হাজার ৮০০ টাকা। বোর্ডের দাম হঠাৎ কমে যাওয়ায় আমার প্রায় ৭ লাখ টাকার মতো লোকসান গুনতে হয়েছে। যাদের ব্যাংক ঋণ আছে তাদের জন্য সমস্যাটা একটু বেশি।

বিসমিল্লাহ ট্রের্ডাসের স্বত্বাধিকারী মাহফুজুল হক বাবু বলেন, ঘুনে ধরা বা পোকা না লাগার কারণে সহজে নষ্ট হয় না। তবে বোর্ডের আসবাবপত্রের জন্য ক্ষতিকর পানি। যদি পানি না পড়ে প্রায় ১০-১২ বছরের অধিক সময় ভালো থাকে। দাম কম ও দেখতে ভালো হওয়ায় মানুষের কাছে চাহিদা বাড়ছে। স্বল্প লাভে আমরা বিক্রি করতে পারি।

নওগাঁ এটিম মাঠ সংলগ্ন আহমদ ফার্নিচার অ্যান্ড সোফা হাউজের স্বত্বাধিকারী মিঠুন হোসেন বলেন, জেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে শতাধিক বোর্ড থেকে তৈরি ফার্নিচারের শোরুম রয়েছে। যা থেকে প্রতিদিন প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা বেচাকেনা হয়। যেখানে প্রায় ৪ হাজার মালিক, কারিগর ও কর্মচারির কর্মসংস্থান হয়েছে। তবে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এ ব্যবসা আরও সমৃদ্ধি পাবে বলে মনে করছেন তিনি।

(ঢাকাটাইমস/০৫ডিসেম্বর/ইএইচ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :