ডিবিতে গিয়ে সাইবার হেনস্তার অভিযোগ করলেন শাহজাহান ওমর

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
 | প্রকাশিত : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৬:২৯

অভিযোগ নিয়ে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ- ডিবি কার্যালয়ে গিয়েছিলেন সদ্য কারামুক্ত বিএনপি নেতা ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী শাহজাহান ওমর। তাকে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও মোবাইলফোনে নানা রকমভাবে হেনেস্তা করা হচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেছেন।

বুধবার দুপুরে ডিবি কার্যালয়ে যান সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান ওমর। অভিযোগ দেওয়ার বিষয়টি ঢাকা টাইমসকে নিশ্চিত করেছেন ডিবিপ্রধান হারুন অর রশিদ।

তিনি বলেন, ‘আর দশজন মানুষের মতো শাহজাহান ওমরও আমাদের এখানে এসেছেন তার কিছু ব্যক্তিগত সমস্যার ব্যাপারে অভিযোগ দিতে। তাকে নানা মাধ্যমে সাইবার হেনস্তা করা হচ্ছে, এই বিষয়ে অভিযোগ দিয়েছেন। আমরা তার অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখব৷’

ডিবি কার্যালয়ে যাওয়া ও অভিযোগের ব্যাপারে শাহজাহান ওমর বলেন, ‘আপনারা জানেন আগে আমি বিএনপি করতাম, এরপর ব্যক্তিগত কারণে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছি। আমি একজন সাবেক সংসদ সদস্য। ইদানিং আমি বিভিন্নভাবে সাইবার বুলিংয়ের শিকার হচ্ছি। বিভিন্ন মানুষ আমাকে নিয়ে অকথ্য ভাষায় কথা বলে।’

তিনি জানান, ‘মাঝে মাঝে আমার ফোনে আমাকে না পেয়ে আমার মেয়ের ফোনে, স্ত্রীর ফোনে, ছেলে ও আমার জুনিয়র আইনজীবীর ফোনে এমনকি আমার বন্ধুবান্ধবের ফোনেও কল করে আজেবাজে কথা বলে। আমি যদি কলব্যাক করি, আবার কেটে দেয়। এই জন্যই আমি ডিবি অফিসে হারুন সাহেবকে জানাতে আসলাম, ভাই আমি সাইবার বুলিংয়ের শিকার।’

কারা বুলিং করছে জানতে চাইলে শাহজাহান ওমর বলেন, ‘এটা তো তারা (পুলিশ) খুজে বের করবে।’ তবে শুধু ফোন বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম না, প্রকাশ্যেও তাকে হেনেস্তা করা হচ্ছে। এমনকি আদালতেও কতিপয় বিএনপিপন্থি আইনজীবী তাকে হেনস্তা করেছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।

শাহজাহান ওমরের নির্বাচনি এলাকা ঝালকাঠি-১ (কাঠালিয়া-রাজাপুর)-এ তাকে আগ্নেয়াস্ত্রসহ দেখা গেছে। এই বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ‘না না, এটা মিসআন্ডারস্টান্ডিং। আমি আগে বিএনপি করতাম তো, অনেক দিন পর এলাকায় গিয়েছিলাম। বিএনপির অনেক লোক আমার সঙ্গে সঙ্গে গেল, আওয়ামী লীগের লোক গেল।’

তিনি বলেন, ‘এখন তো বিএনপি-আওয়ামী লীগ নাই আমার এলাকায়। আমরা সবাই আওয়ামী লীগ হয়ে গেছি ওখানে। আমার লাইসেন্স করা পিস্তল আছে। আপনারা হয়তো জানেন। সেইটা আমার সঙ্গে ছিল এবং সেইটা আমি অফিসে রেখে চলে আসছি। ইটস আ মিসটেক, অনিচ্ছাকৃত ত্রুটি। আমার এক লোক সেইটা হাতে হাতে নিয়া গেছে। ওখানে কোনো ফরমাল মিটিংও ছিল না, কোনো সভাপতি ছিল না, কেউ বক্তব্যও রাখে নাই।’

ইলেকশন কমিশনে সাংবাদিকদের সঙ্গে উগ্র আচরণ করার বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে শাহজাহান ওমর বলেন, ‘এটা রং ইনফরমেশন। আমি গিয়েছিলাম নির্বাচনি আচরণবিধি আমার কাছে ছিল না সেটা আনতে। এখন দেখেন, আপনি আমার ছবি তুলতেই পারেন। কিন্তু বলতে হয় না ভাই, আপনার একটা ছবি তুলি? এটুকু তো আমি অন্তত আশা করতেই পারি। জানালার ফাঁক দিয়ে ছবি তোলে। আমি বলেছি যে, আপনে এই কাম করেন কেন? আপনি সামনে আসেন। আমাকে বলেন যে, ভাই আপনার একটা ছবি তুলব।’ তিনি বলেন, ‘অসুবিধা কী? সাংবাদিক হিসেবে আপনারা ছবি তুলতেই পারেন, কথা বলতেই পারেন। কিন্তু এরকম লুকিয়ে লুকিয়ে কেন করেন ভাই? ছবি তোলার আগে আমার পারমিশন নেন, তারপর দশবার তোলেন। আমার আপত্তি নাই। ওপাশ থেকে বলা হলো, আপনি ঝাড়ি দিয়ে কথা বলেন। তখন আমি বললাম ঝাড়ি দিলাম কই? আপনারা আমার সঙ্গে সৌজন্যতাবোধ দেখান আমিও দেখাবো।’

সাংবাদিকদের সঙ্গে এমন আচরণের কারণে আপনি দুঃখপ্রকাশ করবেন কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে শাহজাহান ওমর দাবি করেন, ‘নো ব্রাদার, সাংবাদিকদের সঙ্গে আমি কোনো দুর্ব্যবহার করিনি। খুবই সদাচরণ করেছি।’

এদিকে, ডিবি কার্যলয়ে আসার আগে শাহজাহান ওমর সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিলেন। প্রধান বিচারপতির সঙ্গে দেখা কর‍তে চেয়ে সাক্ষাৎ পাননি- এমন খবর শোনা যাচ্ছে।

এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে শাহজাহান ওমর বলেন, ‘নো, বুঝছেন৷ আমি সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী। আইনজীবীদের বার কাউন্সিলে সদস্য হতে হয়। গত ১০-১২ বছর বাই মিসটেক সদস্যপদটা আমি রিনিউ করিনি। কিছু চাঁদা দিতে হয় বার কাউন্সিলে প্রতি বছর। এটা আমার জুনিয়ররাও বলে নাই, ক্লার্কও বলে নাই।’

সদ্য আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়া এই রাজনীতিক বলেন, ‘এগুলো যখন করতে গেলাম তখন আমাকে বলা হলো, রেজিস্ট্রার সাহেবের থেকে একটা ফর্ম আনেন। আমি রেজিস্ট্রার সাহেবের কাছে গেছিলাম। সুপ্রিম কোর্টের বিচারকের কাছে আমার যাওয়াটা সাজে না। তাছাড়া পলিটিক্যাল বিষয়ে তার কাছে কেন যাবো?’

(ঢাকাটাইমস/০৬ডিসেম্বর/এসএস/এজে)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :