এবার টাইগারদের ঘূর্ণিতে নাস্তানাবুদ নিউজিল্যান্ড, লিডের আশা

ক্রীড়া ডেস্ক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৬:৪১| আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৬:৫৩
অ- অ+

মিরপুরের উইকেট যেন স্পিনারদের জন্য স্বর্গ হয়ে উঠেছে। কিউইদের স্পিন বিষে ঢাকা টেস্টে নিজেদের প্রথম ইনিংসে মাত্র ১৭২ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। এবার টাইগারদের ঘূর্ণিতে আরও খারাপ দশা কিউইদের। ৪৬ রান তুলতেই ৫ উইকেট হারায় তারা।

আলো স্বল্পতার কারণে প্রথম দিন নির্ধারিত সময়ের আগেই শেষ হয় খেলা। যার ফলে ৫৫ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে প্রথম দিন শেষ করে কিউইরা। এখনো বাংলাদেশের চেয়ে ১১৭ রানে পিছিয়ে নিউজিল্যান্ড। ফলে লিডের আশা টাইগারদের।

কিউই শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তার দেখানো পথে আঘাত হানেন তাইজুল ইসলাম। তিনি পকেটে পুরে নেন ২ উইকেট। এরপর কিউই শিবিরে জোড়া আঘাত হানেন মিরাজ। এই দুই স্পিনারের স্পিন ঘূর্ণিতে ৪৬ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে কিউইরা।

ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতে দেখেশুনেই খেলতে থাকে দু্ই কিউই ওপোনার টম লাথাম ও ডেভন কনেওয়ে। ৫ ওভারে তুলে নেন ১৯ রান।

এরপরেই কিউই শিবিরে আঘাত হানেন মেহেদী হাসান মিরাজ। মিরাজের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরে যান ডেভন কনওয়ে। আউট হওয়ার আগে করেন ১৪ বলে ১১ রান।

মিরাজের পর কিউই শিবিরে জোড়া আঘাত হানেন তাইজুল ইসলাম। তাইজুলের প্রথম শিকার হন টম লাথাম। মিরাজের বলে নুরুল হাসানের সোহানের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরের পথ ধরেন লাথাম।

এরপর তাইজুলের দ্বিতীয় শিকার হন হেনরি নিকোলস। ক্রিজ থেকে বেরিয়ে এসে মারতে গিয়ে মিড অনে শরিফুল ইসলামের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান সাজঘরে।

তাইজুলের দেখানো পথ ধরে মিরাজও জোড়া আঘাত হানেন কিউই শিবিরে। মিরাজের বরে শর্ট লেগে শাহাদাত হোসেনের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন প্রথম টেস্টে সেঞ্চুরি করা কেন উইলিয়ামসন। আউট হওয়ার আগে করেন ১৪ বলে ১৩ রান।

উইলিয়ামসনের পর এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলে টম ব্লান্ডেলকে ফেরান মিরাজ। শূন্য রানেই প্যাভিলিয়নে ফিরে যান তিনি।

তার বিদায়ের জুটি গড়েন ড্যারিল মিচেল ও গ্লেন ফিলিপস। এই জুটির ৯ রানে ভর করে প্রথম দিন শেষে ৫ উইকেটে ৫৫ রান তুলেছে নিউজিল্যান্ড। এখনও বাংলাদেশের চেয়ে তারা পিছিয়ে আছে ১১৭ রানে।

এর আগে মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে টস জিতে আজ প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। কিন্তু ব্যাটিংয়ে কিউইদের স্পিন বিষে নীল হয়েছে শান্ত-মুমিনুলরা। তিন কিউই স্পিনার এজাজ প্যাটেল, মিচেল স্যান্টনার ও গ্লেন ফিলিপস ধসিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইন আপ। এর তিন স্পিনার তুলে নিয়েছেন বাংলাদেশর ৮ উইকেট। শেষ পর্যন্ত ৬৬ ওভার ২ বলে সব উইকেট হারিয়ে ১৭২ রান তোলে বাংলাদেশ।

ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকেই দেখেশুনে খেলতে থাকেন দুই টাইগার ওপেনার মাহমুদুল হাসান ও জাকির হাসান। ১০ ওভারে নেন ২৫ রান। তবে এরপরেই ঘটে ছন্দপতন।

পরপর দুই ওভারে ফিরে যান এই দুই ওপেনার। দলীয় ২৯ রানে স্যান্টনারের বল উড়িয়ে মারতে গিয়ে মিড অনে উইলিয়ামসনের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরে যান জাকির হাসান। আউট হওয়ার আগে করেন ২৪ বলে ৮ রান।

জাকিরের পথ ধরে পরের ওভারে সাজঘরে ফিরে জান মাহমুদুল হাসান জয়ও। ৪০ বলে ১৪ রান করে এজাজ প্যাটের বলে শর্ট লেগে ল্যাথামের কাছে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান। তার বিদায়ে ২৯ রানে ২ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

২৯ রানে ২ উইকেট হারানোর পর জুটি গড়েন নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুমিনুল হক। এই জুটি দলের বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করে। তবে তারাও ব্যর্থ হন।

দলীয় ৪১ রানে এজাজ প্যাটেলের বলে টম ব্লান্ডেলের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফিরে যান মুমিনুল হক। তার বিদায়ে ৪১ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ।

দলের বিপর্যয় আরও বাড়িয়ে সাজঘরে ফিরে যান নাজমুল হোসেন শান্তও। মিচেল স্যান্টনারের বলে এলবিডব্লিউয়ের শিকার হয়ে ফিরে যান তিনি। তার বিদায়ে ৪৭ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে খাদের কিনারে দাঁড়ায় বাংলাদেশ।

এরপরেই দলকে টেনে তোলার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন মুশফিকুর রহিম ও শাহাদাত হোসেন। এই জুটির ৩৩ রানে ভর করে ৪ উইকেটে ৮০ রান তুলে প্রথম সেশন তুলে লাঞ্চ বিরতিতে যায় বাংলাদেশ।

তবে লাঞ্চ বিরতি থেকে ফিরে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ‘অবস্ট্র্যাক্ট দ্য ফিল্ড’ আউট হন মুশফিক। খেলার ৪০.৪ ওভারে কাইল জেমিসনের বল সলিড ডিফেন্স করেছিলেন মুশফিক। এরপর অহেতুক বলটি ডান হাত দিয়ে ধরে ফেলেন অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার। নিউজিল্যান্ডের খেলোয়াড়েরা এতে ‘অবস্ট্র্যাক্ট দ্য ফিল্ড’ আউটের আবেদন করেন। তৃতীয় আম্পায়ার ভিডিও রিপ্লে দেখে মুশফিককে আউট ঘোষণা করেন। বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এমন আউট হলেন মুশফিক। সবমিলিয়ে অবশ্য তার আগে এমন বিচিত্র আউট হয়েছিলেন আরও অনেকেই।

মুশফিকের পর ফিরে যান শাহাদাত হোসেনও। গ্লেন ফিলিপসের বলে টম ব্লান্ডেলের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফিরে যান সাজঘরে। আউট হওয়ার আগে করেন ১০২ বলে ৩১ রান।

শাহাদাতের পরে ক্রিজে বেশি সময় থাকতে পারেননি নুরুল হাসান সোহান ও মেহেদেী হাসান সোহান। ১৬ বলে ৭ রান করা সোহান গ্লেন ফিলিপসের বলে মিড অনে মিচেল স্যান্টনারের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে পথ ধরেন সাজঘরের।

সোহানের পর মিরাজও ফিরে যান সাজঘরে। ৪২ বলে ২০ করে স্লিপে মিচেল স্যান্টনারের বলে স্লিপে ড্যারিল মিচেলের হাতে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। তার বিদায়ে ১৪৫ রানে ৮ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ১৪৫ রানে ৮ উইকেট হারানো বাংলাদেশ ৮ উইকেটে ১৪৯ রান করে চা পানের বিরতিতে যায় বাংলাদেশ।

চা পানের বিরতি থেকে ফিরেই প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন তাইজুল ইসলাম। ১৩ বলে ৬রান করে গ্লেন ফিলিপসের বলে এলবিডব্লিউয়ের শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরে যান তিনি।

এরপর দশম উইকেটে নাঈম হাসান ও শরিফুল ইসলাম ১৮ রানের জুটি গড়েন। তাদের ১৮ রানে ভর করে ৬৬ ওভার ২ বলে সব উইকেট হারিয়ে ১৭২ রান তোলে বাংলাদেশ।

নিউজিল্যান্ডের হয়ে এজাজ প্যাটেল ২ টি, মিচেল স্যান্টনার তিনটি, গ্লেন ফিলিপস ৩ টি ও টিম সাউদি একটি উইকেট নেন।

(ঢাকাটাইমস/০৬ডিসেম্বর/এনবিডব্লিউ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর: তাদের বিরুদ্ধে এত অভিযোগ, তবুও বহাল...
পাকিস্তান থেকে চার্টার্ড ফ্লাইটে ফেরানো হবে রিশাদ ও নাহিদকে!
মেঘনায় অনুমোদনহীন ডেন্টালে জীবাণুযুক্ত যন্ত্রপাতি ব্যবহার, ছড়াচ্ছে হেপাটাইটিস বি
ই-হজ সিস্টেমে ভিসা বাতিল করার অপশন চালু
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা