নির্বাচন নয়, ৭ জানুয়ারি অন্য কিছু হবে: নুর
তফসিল বাতিল, সরকারের পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বিরোধী দলসমূহের ডাকা ১১তম দফা অবরোধের সমর্থনে বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধ করে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেছে গণঅধিকার পরিষদ।
বুধবার পুরানা পল্টন আল রাজি কমপ্লেক্সের সামনে থেকে মিছিল শুরু করে পল্টন মোড়, নাইটিংগেল, বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে দিয়ে ঘুরে বিজয়নগর পানির ট্যাংকির মোড়ে এসে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
সমাবেশে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, আওয়ামী লীগের আকাশে অন্ধকারের কালো মেঘ। তারা সেই কালো মেঘ দিয়ে বাংলাদেশের ভবিষ্যতকে ঢেকে দিতে চায়। তাই আজকে এদেশের জনগণকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা আওয়ামী লীগের ভারতীয় এজেন্ডা বাস্তবায়নে তাদের ভবিষ্যৎ কালো মেঘে ঢেকে দিবে নাকি প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।
নুর বলেন, আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের কথা বলে মুক্তিযোদ্ধাদের লাঞ্ছিত করেছে, অপমান করেছে। এই বিজয়ের মাসে হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রমের মতো মুক্তিযোদ্ধাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশ যেতে দেয়নি। বিমানবন্দরে লাঞ্ছিত করেছে, অপমান করেছে। এই বাংলাদেশ দেখার জন্য মুক্তিযোদ্ধারা জীবন দেয়নি, এদেশের কৃষক-শ্রমিক আপামর জনগণ মুক্তিযুদ্ধ করেনি।
গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্যই মুক্তিযুদ্ধ ছিল উল্লেখ করে নুর আরও বলেন, ৭০-এর নির্বাচনে জয়লাভের পরও আওয়ামী লীগকে পার্লামেন্টে বসতে না দেওয়ায় শেষ পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে। আর বঙ্গবন্ধুর কন্যা হয়ে মুক্তিযুদ্ধের কথা বলে শেখ হাসিনা জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে। শেখ হাসিনা লেন্দুপ দর্জির ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে বাংলাদেশকে সিকিম বানাতে চায়, সেটা এদেশের গণতন্ত্রকামী, স্বাধীনতাকামী জনগণ হতে দেবে না।
নুর বলেন, আওয়ামী লীগের এই স্বতন্ত্র স্বতন্ত্র খেলার নির্বাচনের হলফনামা ঘাঁটলেও দেখা যায়, একেকজন বিনা ভোটে এমপি হয়ে শূন্য থেকে কোটিপতি হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। কোথা থেকে এসেছে এই টাকা? এই লুটের সুবিধা, জিরো থেকে হিরো হওয়া, শুল্কমুক্ত কোটায় গাড়ি আমদানি যে কারণেই নায়ক-গায়ক, ব্যবসায়ী সবাই নৌকার টিকিটে এমপি হতে চায়।
ডাকসুর সাবেক এই ভিপি বলেন, এই অবৈধ কমিশন দালাল, এই কমিশন প্রধানমন্ত্রীর ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে নিয়োগ পেয়েছে। তারা যে সরকারের নগ্ন দালাল সেটা এখন প্রমাণিত। ১৮ ডিসেম্বরের পর নির্বাচনি প্রচার ব্যতীত যেন কোনো রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ, মিছিল-মিটিং না করা যায় সেজন্য নাকি তারা ব্যবস্থা নেবে। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সভা-সমাবেশ, মিছিল-মিটিং নাগরিকদের সাংবিধানিক অধিকার, সেটা নির্বাচন কমিশন বন্ধ করতে পারে না। যেখানে নির্বাচন কমিশনকেই আমরা স্বীকৃতি দেইনি, সেখানে এই নির্দেশনার তোয়াক্কা করার কোনো কারণ নাই।
নির্বাচন কমিশনকে রাস্তায় পেলে জনগণ প্রতিহত করবে। জনগণের অর্থ খরচ করে ৭ জানুয়ারি ডামি প্রার্থীর ভুয়া নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না । ৭ জানুয়ারি নির্বাচন নয়, অন্য কিছু হবে।
মিছিলে উপস্থিত ছিলেন দলের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, উচ্চতর পরিষদের সদস্য আবু হানিফ, শাকিল উজ্জামান, শহিদুল ইসলাম ফাহিম, আব্দুজ জাহের, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রবিউল হাসান, জিলু খান, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন, সহ-গণমাধ্যম সম্পাদক শাকিল আহমেদ, সহ-নারী বিষয়ক সম্পাদক মীর দিলরুবা সুলতানা, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ মামুন, সহ-সভাপতি হোসাইন নুর, শ্রমিক অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা সম্পদ, ছাত্র অধিকার পরিষদের সহ-সভাপতি সাব্বির, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান, গণঅধিকার পরিষদ মহানগর দক্ষিণের সভাপতি নাজিম উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক নুরুল করিম শাকিল, মহানগর উত্তরের সভাপতি মিজানুর রহমানসহ নেতাকর্মীরা।
(ঢাকাটাইমস/১৩ডিসেম্বর/জেবি/এসআইএস)