১৬ বছর ধরে রাবার ড্যাম অকেজো, সেচের অভাবে ২৪০০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ ব্যাহত

ইমরান হোসেন, সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ)
| আপডেট : ২৪ জানুয়ারি ২০২৪, ১৯:২০ | প্রকাশিত : ২৩ জানুয়ারি ২০২৪, ১৯:৩৪

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার সনমান্দি, সাদিপুর ও নোয়াগাঁও এই তিনটি ইউনিয়নের কয়েক হাজার কৃষি পরিবারের জন্য ইরি, বোরো ধান চাষে সেচ ব্যবস্থায় ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর ২০০৪ সালে রাবার ড্যাম স্থাপন করা হয়। এটি দেশে নির্মিত অষ্টম রাবার ড্যাম। স্থাপনের তিন বছরের মাথায় রাবার ড্যামটি নষ্ট হওয়ায় ১৬ বছর ধরে স্থানীয় কৃষকরা এর সুফল থেকে বঞ্চিত, ব্যাহত হচ্ছে ২৪০০ হেক্টর জমির চাষাবাদ। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সোনারগাঁ উপজেলার সনমান্দি ইউনিয়নের অলিপুরা বাজারের পাশে ব্রহ্মপুত্র নদের উপর ২০০৪ সালে ৫৫ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৩ দশমিক ৮ মিটার উঁচু রাবার ড্যামটি স্থাপন করা হয়। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডির) অধীনে এই রাবার ড্যাম এবং এর পাশে ১৪৪ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৪ দশমিক ২৬ মিটার প্রস্থের একটি সেতু নির্মাণ করতে সরকারের প্রায় পাঁচ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে।

রাবার ড্যামটি তৈরি করা হয়েছিল মূলত উপজেলার সনমান্দি, সাদিপুর ও নোয়াগাঁও ইউনিয়নের ৩৫টি মৌজার দুই হাজার ৪শ হেক্টর ইরি, বোরো ধানের জমিতে সেচের পানি সরবরাহ করার জন্য। সে সময় মন্ত্রণালয়ে অনেক দৌড়ঝাঁপ করে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয়। এই প্রকল্পের মাধ্যমে স্থানীয় কৃষকেরা ১৬ বছর ধরে সেচব্যবস্থার কোন সুফল পাচ্ছেন না। স্থানীয় অলিপুরা বাজার এলাকার কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রায় ১৬ বছর ধরে রাবার ড্যামটিতে পানি আটকানো যাচ্ছে না। যার ফলে সেচ মৌসুমে প্রয়োজনীয় পানি না পাওয়ায় বোরো ধানের চাষাবাদ করতে পারছেন না স্থানীয় কৃষকেরা। তাদের দাবি রাবার ড্যামটি পুনরায় সংস্কার করা হলে ওই এলাকার শতশত কৃষক পরিবার জমিগুলোতে চাষাবাদ করতে পারবে।

জানা গেছে, রাবার ড্যামটি দেখাশোনার জন্য এর সুবিধাভোগী মানুষের মধ্য থেকে একটি সমবায় সমিতি গঠন করা হয়। এই সমিতির দায়িত্ব হচ্ছে রাবার ড্যামটির দেখভাল করা, প্রতি বছর ড্যাম ফুলিয়ে পানি আটকে রাখা এবং ওই পানি ধান চাষে সেচের কাজে ব্যবহার নিশ্চিত করা। কিন্তু সমিতির সদস্যরা সরকারের ওপর দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে বসে আছেন। শুধু তাই নয়, তারা ওই সমিতির নাম ভাঙিয়ে অলিপুরা এলাকায় সরকারি জায়গা দখল করে দোকান নির্মাণ কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার ফরহাদ জামান বলেন, রাবার ড্যামটি চালু হওয়ার পর উপজেলার চারটি ইউনিয়নের কয়েক হাজার কৃষক তাদের ইরি, বোরো ধানের জমিতে সেচ দিতে এই পানি ব্যবহার করতেন। সেচ মৌসুমে পানি পেতে যেন সমস্যা না হয়, সে জন্য রাবার ড্যামটি নির্মাণ করা হয়। কিন্তু শুষ্ক মৌসুম শুরুর আগে ড্যামটিতে পানি আটকে রাখা যাচ্ছে না। রাবার ড্যামটি এখন নষ্ট হয়ে পড়ে রয়েছে। এটি মেরামতে অনেক অর্থের প্রয়োজন। রাবার ড্যামটি পুনরায় সংস্কার করা হলে ওই এলাকার কৃষকরা জমিগুলোতে আবাদ করতে পারবে এবং দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক লাভবান হবে।

স্থানীয় সরকারি প্রকৌশলী অধিদপ্তর (এলজিইডি) আত্রাই উপজেলা প্রকৌশলী আরজুরুল হক বলেন, এটি মেরামতের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। কিন্তু নদীর পানির স্থানীয় কলকারখানার বর্জ্য পদার্থের কারণে দূষিত হয়ে গেছে। এর ফলে এ নদীর পানি প্রায় ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে গেছে। সে দিকটি বিবেচনা করেই আমরা প্রকল্পটি বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবো। (ঢাকা টাইমস/২৩জানুয়ারি/এসএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :