‘মনে হয় বরফ পড়ছে বাহে, হা-পাও ককড়া লাগি আইসেছে’

শাহ আলম শাহী, (নিজস্ব প্রতিবেদক) দিনাজপুর
| আপডেট : ২৭ জানুয়ারি ২০২৪, ১৪:৩০ | প্রকাশিত : ২৭ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:১৬

‘মনে হয় বরফ পড়ছে বাহে, জাড়ের হিয়ালে হা-পাও ককড়া লাগি আইসেছে। রাইতোত ঘুম আইসে না। কেথা- কম্বলোত মনে হয়, কেহ পানি ঢালি দিছে। হামার উপায় নাহি বাপো। না খাইতো বাচা যাবে না হায়। এই তন্ন্যে খুব সকালেই কামের তন্ন্যে বের হইবা হইচে। এখনো কাম পাওনাই। জানো না আইজ ভাইগত কী আছে।’

এমনি আকুতি প্রকাশ করলেন মোস্তাফিজুর রহমান। বিরল উপজেলার কানদেবপুর এলাকার ষাটোর্ধ মোস্তাফিজুর একজন শ্রমজীবী। জোগালি কাজ করেন। দিনাজপুরের ‘মানুষ বেচার হাট’খ্যাত শহরের ষষ্টিতলায় শ্রমবাজারে এ প্রতিবেদকের কথা হয় তার। প্রতিদিন বাইসাইকেলে চেপে ১৬ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে আসতে হয় তাকে কাজের সন্ধানে।

কয়েকদিনের দিনাজপুর দিয়ে বয়ে লাগাতার শৈত্যপ্রবাহে হিমেল হাওয়া আর হাড় কাঁপানো শীতকেও হার মানিয়ে তারা ছুঁটে আসেন, ‘মানুষ বেচার হাট’ শ্রম বাজারে। কোনোদিন কাজ পায়, কোনোদিন পায় না। কাজের অপেক্ষায় থাকতে থাকতে দুপুর গড়িয়ে বিকেল হয়। মলিন মুখে বাড়ি ফিরিলেও বউ-সন্তানদের বোকা-ঝোকা খেতে হয়। তারা নাকি বলে, হাওয়া খাইবা গেছুলু-! এতখন থাকি কী করিছুলু! বাড়িত আসিবা কী দরকার আছোলো। যাও আরো হাওয়া খাও’ এমন অনেক গালাগাল নাকি এখন শুনতে হয় পরিবারের কাছে।

তীব্র শীতের কারণে কোনো কর্ম নেই তাদের। অনেকে বেকার হয়ে পড়েছেন। আয়-উপার্জন নেই তাদের। বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া শ্রমজীবী নিম্নআয়ের মানুষ।

আজ শনিবার এ জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। হিমেল বাতাসে ঠান্ডার অনুভূতি বাড়িয়েছে কয়েকগুণ। দেখা মিলছে না সূর্যের। ঘন কুয়াশায় ঢাকা থাকছে চারপাশ।

এ কারণে দিনের বেলাতেই সড়কে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। তীব্র শীতের কারণে মানুষজন খুব একটা প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। তাদের চলাচল একেবারেই কম।

নিম্নমুখী এই তাপমাত্রা আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন দিনাজপুর আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত সহকারী কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান। আগামী কয়েকদিনে তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকবে বলে জানান তিনি।

দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলজ হাসপাতাল ও সদর জেনারেল হাসপাতালসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে শীতজনিত রোগের রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। তীব্র শীতে বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের শ্বাসকষ্ট বাড়ছে। শুধু মানুষ নয়, গবাদি পশু, পাখি ও প্রাণিকুলেরও নাকাল অবস্থা।

(ঢাকাটাইমস/২৬জানুয়ারি/প্রতিনিধি/জেডএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :