সাকিবের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ঢাকাকে উড়িয়ে শীর্ষস্থান পোক্ত রংপুরের

ক্রীড়া ডেস্ক, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৭:২৮ | প্রকাশিত : ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৭:০৬

আসরের শুরু থেকেই রান খরায় ভুগছিলেন সাকিব আল হাসান। বল হাতে কোনো রকম মানিয়ে নিলেও ব্যাট হাতে সাকিব আল হাসানের অফফর্ম দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। অবশেষে তার ব্যাটে রান এসেছে। হেসেছে রংপুর রাইডার্সও। ব্যাটিংয়ে ২০ বলে ৩৪ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলার পর বল হাতে ১৬ রানে ৩ উইকেট শিকার করেছেন সাকিব। তার অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে দুর্দান্ত ঢাকার বিপক্ষে ৬০ রানের বড় জয় পেয়েছে রংপুর। আর তাতে ৭ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষস্থান পোক্ত করেছে রংপুর। সমান ৮ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে খুলনা টাইগার্স আর তিনে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স।

আজ মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) মিরপুরের শের-ই-বাংলায় আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৭৫ রান সংগ্রহ করে রংপুর। জবাবে খেলতে নেমে ১৮ ওভারে ১১৫ রানে থেমেছে ঢাকা। ঢাকার হয়ে আজ সর্বোচ্চ ৪৪ রান করেন ওপেনার নাঈম শেখ।

লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ঢাকার হয়ে আজ ওপেনিংয়ে নামেন অভিষেক হওয়া সাব্বির হোসেন ও নাঈম শেখ। তবে আজও তারা ব্যর্থ ছিলেন নিজেদের জুটিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে। দলীয় মাত্র ২ রানেই সাজঘরে ফিরে যান সাব্বির হোসেন। ৫ বলে ১ রান করা সাব্বির মাহেদী হাসানের বলে শামীম হোসেনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান সাজঘরে।

সাব্বির হোসেনের পর সাজঘরে ফিরে যান সাইম আইয়ুবও। তাকেও ফেরান মাহেদী হাসান। মাহেদী হাসানের বলে নুরুল হাসানের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফিরে যান তিনি। তার বিদায়ে ৪ রানেই ২ উইকেট হারায় ঢাকা।

৪ রানে ২ উইকেট হারানোর পর জুটি গড়েন নাঈম শেখ ও ইয়ান রস। তবে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠার আগে এই জুটিকে থামান সাকিব আল হাসান। সাকিবের বলে ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ তুলে দিয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন ইয়ান রস। তার বিদায়ে ভাঙে ৩১ রানের জুটি।

ইয়ান রসের বিদায়ের পর গুলবেদিন নাইবের সঙ্গে জুটি বাঁধেন নাঈম শেখ। দলীয় ৫৭ রানে এই জুটি ভাঙেন সালমান ইরশাদ। সালমানের বলে নুরুল হাসানের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফিরে যান অর্ধশতকের দ্বারপ্রান্তে থাকা নাঈম শেখ। আউট হওয়ার আগে করেন ৩১ বলে ৪৪ রান। নাঈম শেখের পর একে একে সাজঘরে ফিরে যান গুলবাদিন নাইব ও ঢাকার অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন। গুলবাদিন নাইব ১৮ বলে ১৩ রান ও মোসাদ্দেক হোসেন ৫ বলে ১ রান করে ফিরে যান সাজঘরে।

এই দুই ব্যাটারের পথ ধরে সাজঘরে ফিরে যান চতুরঙ্গ ডি সিলভাও। সালমানের বলে নুরুল হাসানের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফিরে যান তিনি। তার বিদায়ে ৭৮ রানেই ৭ উইকেট হারায় ঢাকা।

৭৮ রানে ৭ উইকেট হারানোর পর জুটি গড়েন তাসকিন আহমেদ ও ইরফান শুক্কুর। এই জুটিতে ভর করে ১৫ ওভার ৩ বলে দলীয় শতক পূর্ণ করে দুর্দান্ত ঢাকা। তবে এরপর আর এই জুটিকে বেশিদূর এগোতে দেননি সাকিব আল হাসান। ১৭তম ওভারে আক্রমণে আসা সাকিবকেও তুলে মারার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। কিন্তু অভিজ্ঞ বোলিংয়ের কাছে পরাস্ত হয়ে তিনি ক্যাচ তুলে দেন ফজলে মাহমুদের হাতে। পরের বলেই আবার শরিফুল ইসলামকে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনাও জাগিয়েছিলেন সাকিব। যদিও আরাফাত সানি রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে বল মোকাবিলা করে সাকিবকে সে সুযোগ দেননি।

শেষ পর্যন্ত ১৮ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে ১১৫ রান তুলে ঢাকা। আর রংপুর তুলে নেন ৬০ রানের জয়। রংপুরের হয়ে ৪ ওভার বল করে এদিন সাকিব খরচ করেন মাত্র ১৬ রান। তুলে নেন দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট। ২টি করে উইকেট নেন শেখ মেহেদী, সালমান ও হাসান মাহমুদ।

এর আগে ব্যাটিং করতে নেমে দুই ওপেনার রনি তালুকদার আর বাবর আজমের ব্যাটে উড়ন্ত সূচনা পায় রংপুর। পাওয়ারপ্লে শেষ করে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৫০ রানে। উদ্বোধনী জুটি ভাঙে দলীয় ৬৭ রানের মাথায় রনির বিদায়ে। আরাফাত সানির বলে এলবিডব্লিউ হন টাইগার এই ওপেনার। ছয় চার ও এক ছক্কার মারে ২৪ বলে ৩৯ রান করেন তিনি।

দলের হয়ে ওয়ান ডাউনে ব্যাট করতে আসেন সাকিব। শুরু থেকেই মিরপুরের গ্যালারি থেকে তাকে সমর্থন জানিয়েছেন দর্শকরা। আর সাকিবও এদিন বেশ সাবলীলভাবেই খেলেন। শুরু থেকেই দেখেশুনে খেলতে থাকেন ঢাকার বোলারদের।

বাবর আজমের সঙ্গে বেশ একটা ভালো জুটিও গড়ে তুলেছিলেন তিনি। তবে বাবর ৪৩ বলে ৪৭ করে আউট হওয়ার পর ফিরে যান সাকিবও। ৩ ছক্কার সঙ্গে ১ চারে ২০ বলে ৩৪ রান করে বিদায় নেন সাকিব। চলতি বিপিএলে এটাই তার সর্বোচ্চ রান। চোখের সমস্যার আগে এর কয়েকটি ম্যাচে ব্যাটই করেননি টাইগার এই অধিনায়ক।

চলতি আসরে এর আগে দুই ম্যাচে করেছিলেন শূন্য রান। গত ম্যাচে আউট হয়েছেন গোল্ডেন ডাক মেরে। সেসব পার করে আজ খেলেছেন চোখে পড়ার মত এক ইনিংস। ওয়ানডে মেজাজে দেখেশুনে খেলেছেন। এরপর সুযোগ পেয়ে চড়াও হয়েছেন ঢাকার বোলারদের ওপর।

শেষ দিকে অধিনায়ক সোহানকে সঙ্গে নিয়ে ছোটখাটো ক্যামিও ইনিংস খেলেছেন মোহাম্মদ নবি। তিন ছয়ের মারে ১৬ বলে ২৯ রান করেন আফগান এই অলরাউন্ডার। ঢাকার বোলিং বিভাগে আজ সবচেয়ে সফল অধিনায়ক মোসাদ্দেক। চার ওভার বল করে ৩০ রান দিয়ে ২ উইকেট পেয়েছেন। আর খরুচে ছিলেন তাসকিন ও শরিফুলরা।

(ঢাকাটাইমস/০৬ ফেব্রুয়ারি/এনবিডব্লিউ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

খেলাধুলা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

খেলাধুলা এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :