কাশ্মীরে ৫ বছর জেল খেটে মুক্তির দুদিন পরই সাংবাদিক গ্রেপ্তার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকা টাইমস
 | প্রকাশিত : ০২ মার্চ ২০২৪, ২১:১৭
কাশ্মীরের সাংবাদিক আসিফ সুলতান

কাশ্মীরে প্রায় সাড়ে ৫ বছর কারাগারে কাটিয়ে মুক্তি পাওয়ার দুদিন পরেই পুনরায় এক সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করেছে ভারতীয় পুলিশ বাহিনী।

মুক্তির পর সাড়ে পাঁচ বছর বয়সীয় মেয়েকে প্রথমবার দেখতে পেয়েছিলেন আসিফ সুলতান। বাবাকে পেয়ে শিশু কন্যার চোখে মুখে আনন্দের ছায়া ‍মুহূর্তেই মিলিয়ে যায়।

কাশ্মীরের স্থানীয় ন্যারেটর ম্যাগাজিনের সাবেক সম্পাদক আসিফ সুলতানকে জঙ্গিদের আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে ২০১৮ সালের একটি মামলায় ওই বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তারের পর ২০১৯ সালে তাকে প্রায় দেড় হাজার কিলোমিটার দূরের উত্তর প্রদেশের একটি কারাগারে পাঠানো হয়। সেসময় কাশ্মীরের কারাগারের বন্দিদের উত্তর প্রদেশসহ দূরের বিভিন্ন রাজ্যের কারাগারে প্রেরেণকালে বন্দিরা কারাগারে বিক্ষোভ করে। স্বজনরাও রাস্তায় নামে, কারণ দূরবর্তী কারাগারে প্রেরণের ফলে পরিবারের সদস্যদের জন্য কারাগারে গিয়ে স্বজনদের সঙ্গে দেখা করা কঠিন হয়ে ওঠে।

দীর্ঘ পাঁচ বছরেরও বেশি সময় কারাভোগের পর গত ২৭ ফ্রেবুয়ারি জেল থেকে মুক্তি পান আসিফ সুলতান। এর আগে ২০২২ সালে জামিন পেলেও মুক্তি মেলেনি সুলতানের। সেসময় আদালত বলেছিল, তদন্ত সংস্থাগুলি কোনো সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে তার সম্পর্ক স্থাপন করতে ব্যর্থ হয়েছে। কিন্তু এরপরও তার মুক্তি আটকে যায়। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার জম্মু ও কাশ্মীরের আদালত তার আটকাদেশ বাতিল করলে মুক্তি মেলে। মুক্তির দুদিন পর বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) তাকে ফের ২০১৯ সালে কারাগারে অসন্তোষের ঘটনায় বিশৃঙ্খলার অভিযোগে সন্ত্রাস বিরোধী আইনের অন্য একটি মামলায় আটক করা হয়।

গ্রেপ্তারের পর শুক্রবার (১ মার্চ) কাশ্মীরের একটি আদালত সুলতানকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে।

মুক্তি পাওয়ার দুদিন পর ‘সন্ত্রাস বিরোধী’ আইনের অধীনে পুনরায় গ্রেপ্তার করাকে নিন্দনীয় উল্লেখ করে প্রতিবাদ জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা ও পরিবারের সদস্যরা।

তার আইনজীবী আদিল আবদুল্লাহ বলেন, ‘ভারতের কঠোর ‘সন্ত্রাস বিরোধী’ আইনের অধীনে অন্য একটি মামলায় পুলিশ তাকে পুনরায় গ্রেপ্তার করেছে৷ এই মামলায় জামিন পাওয়া কঠিন। বছরের পর বছর বিনা বিচারে কাউকে আটকে রাখার জন্য এই আইন ব্যবহার করা হয়।’

মানবাধিকার কর্মীরা বলেছেন যে, এই আইনের মামলায় জামিন পাওয়া প্রায় অসম্ভব, যার অর্থ সুলতান অনির্দিষ্টকালের জন্য বিচার ছাড়াই কারাগারে থাকতে পারেন।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এটিকে একটি ‘অনিয়ম আইন’ বলে অভিহিত করেছে।

মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে একটি সংগঠন ফ্রি স্পিচ কালেক্টিভের সহ-প্রতিষ্ঠাতা লক্ষ্মী মূর্তি বলেছেন, ‘আসিফ সুলতানের পুনঃগ্রেফতার হল ‘আইনবিচার’ বা সাংবাদিকদের হয়রানি করার জন্য কঠোর আইনের (অপব্যবহার ও অত্যধিক ব্যবহার) এর আরেকটি উদাহরণ।’

স্বজনরা বলছিলেন, ‘তাকে খুব দুর্বল লাগছিল এবং বিশ্রাম নিতে চেয়েছিলেন। তার রক্তচাপও অস্বাভাবিক ছিল। আমরা পুলিশকে জিজ্ঞাসা করলে তারা বলে সে অন্য মামলার আসামি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই স্বজন আল জাজিরাকে জানায়, সাংবাদিক হিসেবে তার কাজের জন্য তাকে টার্গেট করা হচ্ছে।’

(ঢাকাটাইমস/০২মার্চ/এসআইএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

আন্তর্জাতিক বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :