ক্ষমতা গণহত্যা ও স্বাধীনতা

ড. অরুণ কুমার গোস্বামী
 | প্রকাশিত : ২৫ মার্চ ২০২৪, ১১:৪৫

বাঙালিদের জাতীয় জীবনে ক্ষমতা, গণহত্যা ও স্বাধীনতা ঐতিহাসিকভাবে একই সূত্রে গাথা। বাঙালিদের দাবিয়ে রাখার জন্য পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী কর্তৃক বাংলাদেশের মানুষের উপর ‘ক্ষমতা’ প্রয়োগের কারণে ১৯৭১ সালে সংঘটিত হয়েছিল বাঙালি ‘গণহত্যা’। পাকিস্তানের রাজনৈতিক ‘ক্ষমতা’ ছিল ধর্মভিত্তিক, সামরিকতান্ত্রিক ও শোষণমূলক। এর বিরুদ্ধে ‘স্বাধীন বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনার ‘ক্ষমতা’ অর্জনের লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে অসাম্প্রদায়িক সংগ্রামী চেতনায় বাঙালি জাতি অভূতপূর্বভাবে জেগে উঠেছিল। একদিকে হিংসাশ্রয়ী শোষণমূলক ‘ক্ষমতা’ টিকিয়ে রাখার লক্ষ্যে দুর্বিনীত পাকিস্তান এবং এর বিপরীতে নিজস্ব রাজনৈতিক ভূ-খণ্ডে স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ‘ক্ষমতা’ অর্জনের সক্ষমতা ও সামর্থ্যরে ভিত্তিতে বাঙালিদের দৃঢ় সংগ্রামী চেতনা। ‘ক্ষমতা’ টিকিয়ে রাখার জন্য বাঙালিদের উপর পাকিস্তানের ‘চরম’ আক্রমণ বনাম বাঁচার জন্য বাঙালিদের স্বাধীন রাষ্ট্র পরিচালনার ‘ক্ষমতা’ অর্জনের ‘চরম’ প্রচেষ্টা। ১৯৭১ সালে একদিকে ‘গণহত্যা’ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের মাধ্যমে ‘ক্ষমতা’ টিকিয়ে রাখার ‘চরম’ পাকিস্তানি প্রচেষ্টা এবং অপরদিকে স্বাধীন স্বদেশ প্রতিষ্ঠার ‘ক্ষমতা’ অর্জন করার জন্য আত্মত্যাগোন্মুখ বাঙালি জনগণের মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ার ‘চরম’ মানসিক পরিস্থিতি পরিলক্ষিত হয়। এভাবে বাঙালি জাতির জীবনে ক্ষমতা, গণহত্যা ও স্বাধীনতা এক সূত্রে গাথা হয়ে গিয়েছে। প্রয়াত নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী এবং জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনান (১৯৩৮-২০১৮) ২০০১ সালে তার নোবেল বক্তৃতায় ‘মাত্র একটি হত্যাকাণ্ড থেকেই’ “সমস্ত অপরাধের অপরাধ”(ক্রাইম অব অল ক্রাইমস) শুরু হওয়ার ব্যাপারে যে জোর দিয়েছিলেন এটি বাংলাদেশে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ১৯৭১ সালেই ব্যাপক বিধ্বংসী আকারে সংঘটিত করেছিল। কিন্তু জাতিসংঘ আজও বাংলাদেশের এই গণহত্যার স্বীকৃতি দেয়নি! বাংলাদেশের স্বাধীন অস্তিত্বের সাথে সম্পর্কযুক্ত ১৯৭১-এর বর্বরোচিত গণহত্যার স্বীকৃতি এখন সময়ের দাবি। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী কর্তৃক বাঙালিদের বিরুদ্ধে সংঘটিত ‘গণহত্যা’র কারণ এবং স্বাধীন হওয়ার পর এই ‘গণহত্যা’র আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি না পাওয়া সবকিছুই ‘ক্ষমতা সম্পর্ক’ বিষয়ক যুক্তির দ্বারা ব্যাখ্যাযোগ্য। উল্লেখ্য, ‘ক্ষমতা সম্পর্ক’ ধারণাটি ফরাসি দার্শনিক মিশেল ফুকো (১৯২৬-১৯৮৪) অবতারণা করেছিলেন। ফুকোর মতে, বিভিন্ন সামাজিক সেটিংসে আধিপত্য এবং প্রতিরোধের বিভিন্ন নিদর্শন লক্ষ করা যায়। ফুকোর মতে, ‘ক্ষমতা সম্পর্ক’ (পাওয়ার রিলেশন) ছাড়া সমাজ হতে পারে না।

১৯৭১-এর পূর্বে বর্তমান বাংলাদেশ প্রকৃত পক্ষে ছিল পাকিস্তানের ধর্মীয় উপনিবেশ। ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক বিভাজনের ভিত্তিতে সৃষ্টি হয়েছিল পাকিস্তান। অতএব, সেই ধর্মের জিকির তুলেই পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী বাংলাদেশের ওপর তাদের ঔপনিবেশিক শাসন-শোষণের ‘ক্ষমতা’ চর্চা দীর্ঘ ২৩ বছর যাবৎ চালিয়েছে। ‘ক্ষমতা সম্পর্কের’ দিকে বিবেচনা করলে পাকিস্তানিদের সাথে বাঙালিদের ‘শোষক ও শোষিতের’ সম্পর্ক ছিল। স্মরণাতীত কাল থেকে শোষিত বাঙালি এ ধরনের শোষণমূলক “ক্ষমতা সম্পর্ক” ছিন্ন করতে চেয়েছে। কিন্তু পাকিস্তানি শাসককুল বাঙালিদের সাথে তাদের শোষণমূলক “ক্ষমতা সম্পর্ক” বলপ্রয়োগের মাধ্যমে টিকিয়ে রাখতে চেয়েছে। চূড়ান্ত পর্যায়ে তাই মুখোমুখি সংঘাত অনিবার্য হয়ে উঠেছিল। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে তৎকালীন পূর্ব বাংলার সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটার তথা জনগণ বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের প্রতি তাদের নিরঙ্কুশ সমর্থন জ্ঞাপন করে। ফলে, পাকিস্তানের সাথে শোষণমূলক “ক্ষমতা সম্পর্ক” ছিন্ন করে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বাঙালি (কিছু নগণ্য ব্যতিক্রম বাদে) ঐক্যবদ্ধতার প্রমাণ দিতে সক্ষম হয়। এই সাথে বাঙালিদের অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিরঙ্কুশ বৈধতার প্রতি বাঙালিদের ঐতিহাসিক রায় প্রমাণিত ও ঘোষিত হয়। কিন্তু নিরঙ্কুশভাবে বাঙালিদের নির্বাচিত এবং বৈধ প্রতিনিধি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের হাতে “ক্ষমতা” হস্তান্তরে পাকিস্তানি সামরিক শাসক সম্মত হয়নি। ১৯৭১ সালের ১-লা মার্চ জাতীয় পরিষদের অধিবেশন সামনে রেখে আওয়ামী লীগ পার্লামেন্টারি পার্টি ঢাকার পূর্বাণীতে কর্মকৌশল নির্ণয় ও ৬ দফার আলোকে পাকিস্তানের খসড়া শাসনতন্ত্র প্রণয়নের বিষয়ে আলোচনায় মিলিত হয়। হঠাৎ ওইদিন প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খান বেতার ভাষণের মাধ্যমে জাতীয় পরিষদ অধিবেশন স্থগিত করলেন। তখন বাঙালিরা বিশাল-বিশাল মিছিল নিয়ে হোটেল পূর্বাণী অভিমুখে যেতে থাকে, যেখানে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সংসদীয় দলের বৈঠক চলছিল। এসময় বঙ্গবন্ধু সাংবাদিকদের সঙ্গে ওই হোটেলে মিলিত হন। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষারত বাঙালিদের উদ্দেশ বঙ্গবন্ধু ২রা মার্চ ঢাকায় হরতাল, ৩রা মার্চ সারা দেশে হরতাল ও ৭ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানে জনসভার কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

বঙ্গবন্ধুর বৈধ নেতৃত্বের প্রতি সম্মান জানিয়ে ও সাড়া দিয়ে দশ লক্ষাধিক বাঙালি জনতা ঐতিহাসিক রমনা রেসকোর্সে (বর্তমানের সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে) ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনামূলক ভাষণ শোনার জন্য সমবেত হয়েছিলেন। ঐতিহাসিক এই জনসমুদ্রে বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করেছিলেন- “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।” ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ বাঙালিদের নিশ্চিহ্ন করার জন্য পাকিস্তানের সেনাবাহিনী কর্তৃক পরিচালিত “অপারেশন সার্চলাইট” শুরুর পর বঙ্গবন্ধু পুনরায় স্বাধীনতা ঘোষণার সাথে সাথে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ সংগ্রাম শুরুর জন্য বাঙালিদের প্রতি ডাক দিয়েছিলেন। একদিকে বাঙালিদের বিরুদ্ধে পাকিস্তানিদের “গণহত্যা”, এর পাল্টা বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশকে পাকিস্তানি দখলদারিত্ব থেকে মুক্ত করার লক্ষ্যে বাঙালিদের মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়েছিল। রবার্ট পেইন তার “ম্যাসাকার” বইতে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের ইয়াহিয়া খান ত্রিশ লক্ষ বাঙালিকে হত্যার উদ্ধৃতি উল্লেখ করেছেন। ইয়াহিয়া খান সে সময় বলেছিলেন- “কিল থ্রি মিলিয়ন অব দেম, এন্ড দ্য রেস্ট উইল ইট আউট অব আওয়ার হ্যান্ডস”। তৎকালীন জাতিসংঘের মহাসচিব পাকিস্তানি দখলদার বাহিনী কর্তৃক বাঙালিদের বিরুদ্ধে সংঘটিত নির্বিচার হত্যাকাণ্ডকে 'সবচেয়ে দুঃখজনক পর্ব' এবং 'মানব ইতিহাসের পাতায় একটি ভয়ংকর দাগ' বলে বর্ণনা করেছিলেন। এভাবে বাংলাদেশ রক্ত দিয়ে স্বাধীনতার জন্য সর্বোচ্চ মূল্য পরিশোধ করেছে।

আর এভাবেই, ‘ক্ষমতা’, ‘গণহত্যা’ ও ‘স্বাধীনতা’কে কেন্দ্র করে বাঙালিদের সাথে পাকিস্তানি শাসকদের সম্পর্কটা হয়ে যায় পুরোপুরি শত্রুতামূলক। মুক্তিযুদ্ধে ত্রিশ লক্ষাধিক বাঙালির আত্মত্যাগ, প্রায় চার লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমহানি এবং সমগ্র বাংলাদেশকে ধ্বংসস্তুপে পরিণত করার পর বাংলাদেশ শত্রুমুক্ত হয়েছিল। কিন্তু মানবসভ্যতার ইতিহাসে ঘৃণ্যতম পাকিস্তানি সেনাবাহিনী কর্তৃক বাঙালিদের বিরুদ্ধে এই গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধকে জাতিসংঘ স্বীকৃতি দেয়নি। এর প্রধানতম কারণ বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ। বিশেষত ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী সরকারগুলো ‘গণহত্যা’ এবং ১৯৭১-এর মানবতাবিরোধী অপরাধ নিয়ে কথাবার্তা বলতে পুরোপুরি অনাগ্রহী ছিল। তখন থেকে ‘গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী’ অপরাধীদের বিচার বন্ধ হয়। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার বন্ধের জন্য ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি হয়। এই সাথে স্বাভাবিকভাবেই সে সময়ের বাংলাদেশের সামরিক-বেসামরিক সরকারগুলোর কাছে বিশ্ব দরবারে ১৯৭১-এর গণহত্যার স্বীকৃতি আদায়ের বিষয়টি অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ে! ১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হয়ে সরকার গঠনের পর থেকে এক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের সূচনা হয়।

ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিল হওয়ার পর বঙ্গবন্ধুহত্যার বিচার হয়, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য দোষীদের বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠিত হয়। আলী আহসান মুজাহিদ, মতিউর রহমান নিজামী, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী, দেলওয়ার হোসেন সাঈদীসহ কয়েকজন মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচার এবং সে অনুযায়ী শাস্তিও কার্যকর হয়েছে।

২০১৭ সালের ১১ই মার্চ বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ সর্বসম্মতিক্রমে ২৫শে মার্চকে গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। ২০২১ সালে শহিদ সাংবাদিক সিরাজ উদ্দিন হোসেনের পুত্র তওহিদ রেজা নুর লেমকিন ইনস্টিটিউট এবং জেনোসাইড ওয়াচ-কে বাংলাদেশে ১৯৭১-এর গণহত্যার স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়ে চিঠি লিখেন। এর পাশাপাশি বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ইন্টারন্যাশনাল কোয়ালিশন অব সাইটস অব কনসাইন্স-কে ১৯৭১-এ বাংলাদেশে গণহত্যার প্রতি তাদের স্বীকৃতির বিবৃতিটি জনসমক্ষে প্রকাশের অনুরোধ জানান। ২০২১ এবং ২০২২ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি সংগঠন, লেমকিন ইনস্টিটিউট ফর জেনোসাইড প্রিভেনসন, জেনোসাইড ওয়াচ, এবং ইন্টারন্যাশনাল কোয়ালিশন অব সাইটস অব কনসাইন্স ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনী এবং তার দোসরদের দ্বারা সংঘটিত নিষ্ঠুরতাকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। ‘জেনোসাইড ওয়াচ’ এবং ‘লেমকিন ইনস্টিটিউট ফর জেনোসাইড প্রিভেনশন’ কর্তৃক ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী দ্বারা বাঙালিদের ওপর সংঘটিত গণহত্যাকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার ফলে আন্তর্জাতিক সমর্থন আরও ত্বরান্বিত হবে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক ড. অ্যাডাম জোনস বিষয়টির দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেছেন- ‘তুলনামূলক গণহত্যা গবেষণার ক্ষেত্রে, দুঃখজনকভাবে, বাংলাদেশের গণহত্যা এখনও খুব কমই পরিচিত- এমন কিছু যা আমি এবং আরও অল্প কয়েকজন আমাদের ক্ষুদ্র সামর্থ্যরে মাধ্যমে প্রতিকারের চেষ্টা করেছি। এটি বৈশ্বিক ব্যবস্থায় (তৎকালীন) পূর্ব পাকিস্তান বর্তমান বাংলাদেশের প্রান্তিক অবস্থানের প্রতিফলন, এটি সেই সময়ে অন্তর্জাতিক আগ্রহ এবং হস্তক্ষেপের অভাবের জন্য দায়ী। এটি যদিও তুলনামূলক দৃষ্টিকোণ থেকে, ১৯৭১ সালের বাংলাদেশ গণহত্যা বিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে চরম এবং ধ্বংসাত্মক গণহত্যার একটি ছিল, যেখানে ৩০ লক্ষ মানুষ নিহত হয়েছিল।’ । ২০১৪ সালের ২২শে মার্চ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের অষ্টাদশ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে প্রদত্ত ভাষণে তাঁর “দ্য বাংলাদেশি জেনোসাইড ইন কম্পারেটিভ পার্সপেক্টিভ” শীর্ষক গবেষণা নিবন্ধে অ্যাডাম জোনস এ কথাগুলো বলেছিলেন।

১৯৭১ সালে বাংলাদেশে সংঘঠিত গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জনের বিষয়ে ২০২৩ সালের মে মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে আগত ইউরোপীয় প্রতিনিধিরা এই অভিমত ব্যক্ত করেন যে- ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশে পাকিস্তানিরা যে গণহত্যা চালিয়েছিল, তার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেতে খুব বেশি অপেক্ষা করতে হবে না বলে মনে করে ইউরোপের একটি প্রতিনিধিদল। তারা তখন আশা ব্যক্ত করেছিলেন যে- “আগামী কয়েক বছরের মধ্যে এই স্বীকৃতি পাওয়া যাবে।”

ড. অরুণ কুমার গোস্বামী: কলাম লেখক ও অধ্যাপক, রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। পরিচালক, সেন্টার ফর সাউথ এশিয়ান স্টাডিজ, ঢাকা

সংবাদটি শেয়ার করুন

মতামত বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :