পর্যটকদের আকৃষ্ট করছে তাহিরপুরের শহীদ সিরাজ লেক

নিজস্ব প্রতিবেদক সুনামগঞ্জ
 | প্রকাশিত : ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৮:০৮

বাংলাদেশের উত্তর পূর্ব দিকের সীমান্ত ঘেঁষা সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা ছিল মুক্তিযুদ্ধের ৫নং সাব সেক্টর। স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ হওয়া বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলামের নামে মৃত্যু বরণ করলে উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের ট্যাকের ঘাট লেক সংলগ্ন টিলায় তাকে সমাহিত করা হয়।

২০১৭ সালে সুনামগঞ্জে তৎকালীন জেলা প্রশাসক সাবিরুল ইসলাম আনুষ্ঠানিকভাবে বীর যোদ্ধার কবর সংলগ্ন লেকটিকে শহীদ সিরাজ লেক নামকরণ করে লেকের চারদিকেশহীদ সিরাজ লেকনামে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেন এবং পর্যটকদের জন্যশহীদ সিরাজ রেস্ট হাউসনির্মাণ করেন।

মেঘালয় পাহাড় ঘেঁষে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর লেক টিলার পরিবেশ মুহূর্তেই আকৃষ্ট করে পর্যটকদের। কারণেই প্রতিদিন ছুটে আসছে হাজার হাজার পর্যটক।

তবে এই লেকটি অফিস আদালতসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে স্থানীয় লোকজন ট্যাকেরঘাট চুনাপাথর খনিজ প্রকল্পের পরিত্যক্ত পাথর কোয়ারি হিসেবেই চিনেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,সীমান্তবর্তী ট্যাকেরঘাট চুনাপাথর খনিজ প্রকল্পের পরিত্যক্ত এই কোয়ারিতে ১৯৪০ সালে চুনাপাথর সংগ্রহ শুরু করে। এখানে সংগৃহীত চুনাপাথর জেলার ছাতক উপজেলায়আসাম বাংলাসিমেন্ট ফ্যাক্টরিতে পাঠিয়ে প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটানো হতো।

১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর বিভিন্ন সমস্যা ব্যয় বৃদ্ধি দেখিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয় চুনাপাথর সংগ্রহ কার্যক্রম। কিন্তু ১৯৬০ সালে সিমেন্ট ফ্যাক্টরি চালু রাখার জন্য চুনা পাথরের প্রয়োজনে ভূমি জরিপ চালিয়ে সীমান্তবর্তী ট্যাকেরঘাট এলাকায় ৩২৭ একর জায়গায় চুনাপাথরের সন্ধান পায় বিসিআইসি কর্তৃপক্ষ। পরবর্তী সময়ে ১৯৬৬ সালে খনিজ পাথর প্রকল্পটি থেকে মাইনিংয়ের মাধ্যমে দীর্ঘদিন পাথর উত্তোলন করা হয়। প্রায় ৩০ বছর পর ১৯৯৬ সালে এই প্রকল্পটি একটি লোকসানি প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেখিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোয়ারি থেকে চুনাপাথর উত্তোলন বন্ধ করে দেয়। এরপর এই কোয়ারিতে পানি জমে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে লেকে পরিণত হয়।

উল্লেখ্য শহীদ সিরাজ লেক ছাড়াও জেলায় রয়েছে বিশ্বখ্যাতি পাওয়া টাংগুয়ার হাওর। রয়েছে এশিয়ার বৃহত্তর শিমুল বাগান,বাংলার আইফেল টাওয়ার খ্যাত বারেকটিলা। আছে যাদুকাটা নদী, প্রাচীন লাউড় রাজ্যের রাজধানীর হলহলিয়া রাজবাড়ির ধ্বংসাবশেষ, তিনটি শুল্ক বন্দর। ফলে সারা বছরই হাজার হাজার পর্যটকের আগমনে মুখরিত থাকে এসব পর্যটন স্পষ্টগুলো।

সচেতন মহলের মতে,আগত পর্যটকদের জন্য শহীদ সিরাজ লেককে ঘিরে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ আধুনিকায়ন করা খুবই প্রয়োজন। তাহলে আগামী প্রজন্মসহ এখানে যারাই আসবে তারা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে জানবে এবং জানার আগ্রহ জাগবে। একই সঙ্গে এলাকার বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।

বীর মুক্তিযোদ্ধা রৌজ আলী বলেন, শহীদ সিরাজ লেককে আরও আধুনিকায়ন করে দৃষ্টি নন্দন করা দরকার। একই সঙ্গে এলাকাটি যেহেতু মুক্তিযুদ্ধের ৫নং সাবসেক্টর ছিল তাই মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে উল্লেখযোগ্য লেখা সম্বলিত একটি সাইনবোর্ড মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে দৃশ্যমান কিছু স্থাপনা নির্মাণ করা হলে পর্যটকদের আগমন বাড়বে।

সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী বলেন, শহীদ সিরাজ লেককে কীভাবে আরও আধুনিকায়ন করা যায় সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

(ঢাকাটাইমস/২৮মার্চ/প্রতিনিধি/পিএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :