মালদ্বীপে সংসদ নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী চীনপন্থি প্রেসিডেন্ট মুইজ্জুর দল

মালদ্বীপের পার্লামেন্ট নির্বাচনে বিপুল ভোটে জিতে ক্ষমতায় নিজেদের অবস্থান আরও সুদৃঢ় করেছে দেশটির ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জু নেতৃত্বাধীন রাজনৈতিক দল পিপলস ন্যাশনাল কংগ্রেস (পিএনসি)।
৯৩ আসনের পার্লামেন্টের ৮৬টি আসনের ফলাফল রবিবার ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। এর মধ্যে ৬৬টি আসন জিতেছে মুইজ্জুর দল। এর ফলে ভারতবিরোধী ও চীনপন্থি হিসেবে পরিচিত মুইজ্জুর দলই সরকার গঠন করবে বলে পরিষ্কার হয়ে গেছে।
মুইজ্জু এ বছর নিজে ভোটে লড়েননি। তবে তার দল প্রচারে চীনের বিষয়টি সামনে নিয়ে এসেছিল। মোহামেদ মুইজ্জু চীনপন্থি রাজনীতিক হিসেবে পরিচিত। মালদ্বীপের ভারতমুখী অভিমুখ বদলের কথা বেশ কিছুদিন ধরেই বলছিলেন তিনি।
মালদ্বীপ থেকে ভারতীয় সেনা সরিয়ে দেওয়ার কাজও তিনিই করেছেন। ফলে তার দলের বিপুল ভোটে জয় মালদ্বীপকে আরো বেশি চীনমুখী করবে বলেই বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
প্রসঙ্গত, মালদ্বীপের ভোটের দিকে নজর ছিল ভারত এবং চীন দুই পক্ষেরই। দীর্ঘদিন ধরে মালদ্বীপে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে ভারত। দ্বীপরাষ্ট্রটিকে বিভিন্ন সময়ে অর্থনৈতিক এবং সামরিক সাহায্য করা হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, বাণিজ্যক্ষেত্রেও মালদ্বীপের পাশে থেকেছে ভারত। কোভিডের সময় মালদ্বীপকে টিকা দিয়ে সাহায্য করা হয়েছিল। মালদ্বীপের পার্লামেন্ট বরাবরই ভারতের বন্ধু হিসেবে কাজ করেছে। কিন্তু মুইজ্জু দেশের এই ভারতপন্থি অবস্থানের বিরোধিতা করেন।
চীনপন্থি এই রাজনীতিক চীনের সঙ্গে আরও দৃঢ় সম্পর্ক গড়ে তোলার পথে হাঁটেন। কিন্তু তার সমস্ত পদক্ষেপ পার্লামেন্টে গৃহীত হয়নি। এবার যে পরিমাণ আসন নিয়ে মুইজ্জুর দল পার্লামেন্টে যাচ্ছে, তাতে চীনমুখী প্রকল্প গ্রহণে মুইজ্জুর আর কোনো সমস্যা হবে না।
এদিকে চীনের সঙ্গে একাধিক চুক্তি করেছেন মুইজ্জু। চীন যাতে মালদ্বীপে আরো বেশি বিনিয়োগ করে, তার জন্য একাধিক প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছেন মুইজ্জু। এবার সেই প্রকল্পগুলো শুরু হবে বলেই বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
উল্লেখ্য, ভারত মহাসাগরের একটি ছোট দ্বীপ হলেও ভারত এবং চীনের কাছে মালদ্বীপের গুরুত্ব আছে। তার কারণ, ভারত মহাসাগর অঞ্চলে একটি কৌশলী এলাকায় মালদ্বীপের অবস্থান। সেখানে সেনা ঘাঁটি তৈরি করে ভারত মহাসাগরে নিজেদের অবস্থান সুদৃঢ় করেছিল ভারত।
এবার সেখান থেকে সেনা সরিয়ে নিতে হলে ভারত একটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকা হারাবে। অন্যদিকে এই একই কারণে চীনও মালদ্বীপের সঙ্গে বন্ধুত্ব বাড়াতে চায়। মালদ্বীপের ভোট চীনকেই আরও কাছে টেনে নেবে বলে মনে করা হচ্ছে।
(ঢাকাটাইমস/২২এপ্রিল/এমআর)

মন্তব্য করুন