টমেটো চাষে ফিরোজের বাজিমাত, ঝুঁকছেন অন্য কৃষকরাও

কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস
 | প্রকাশিত : ০৭ মে ২০২৪, ১৭:৪০

প্রতি বছরই বিভিন্ন জাতের বাহারি সবজি চাষে বেশি মুনাফা অর্জন করলেও এবার আগাম ও উচ্চ ফলনশীল জাতের টমেটো চাষে বাজিমাত করেছেন গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বাহাদুরসাদী ইউনিয়নের দক্ষিণবাগ গ্রামের কৃষক ফিরোজ মিয়া (৪৫)। ইতোমধ্যে লক্ষাধিক টাকার টমেটো বিক্রি করেছেন। আরও লক্ষাধিক টাকার টমেটো বিক্রি করবেন বলে তিনি আশাবাদী। উন্নত জাত, সঠিক পরিচর্যা ও কৃষি অফিসের আন্তরিকতা থাকলে কৃষকের ভাগ্য বদলাতে পারে এমন প্রত্যাশা তার।

জানা গেছে, উচ্চ ফলনশীল জাতের টমেটো খেতে বেশ সুস্বাদু হওয়ায় বাজারে রয়েছে এর ব্যাপক চাহিদা। তার দামও রয়েছে বেশ ভালো। ফলে কৃষকরা অসময়ে (অফ সিজন) টমেটো চাষে ঝুঁকছেন। কৃষক ফিরোজ মিয়া পরীক্ষামূলকভাবে প্রথমবারের মতো এক বিঘা জমিতে মালচিং পদ্ধতিতে সামার টমেটো চাষ করে অভাবনীয় সাফল্য পেয়েছেন।

অর্থনৈতিক স্বাবলম্বী হওয়ার আশায় তিনি মালচিং পদ্ধতি ব্যবহার করে উচ্চ ফলনশীল জাতের এই সামার টমেটোর চারা লাগিয়েছেন। তিনি চারাগুলো উপজেলা কৃষি অফিসের সহায়তায় সংগ্রহ করেন। চারা রোপণের ৪৫ দিন অতিবাহিত হওয়ার আগেই গাছে ফুল ও ফল আসায় বেশ উৎফুল্ল কৃষক ফিরোজ।

কৃষক ফিরোজ জানান, এক বিঘা জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে সামার টমেটোর চাষ করেছেন। এতে তিনি মালচিং পেপার ছাড়াও পোকামাকড় আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে ইয়েলো ট্রেপ, চেরানং, গাছের গঠন ঠিক রাখতে বাঁশের খুঁটি, রশি, সুতা, আবহাওয়া নিয়ন্ত্রণে নেট মাচা ব্যবহার করেছেন। এতে তার খরচ হয়েছে প্রায় ১ লাখ টাকা। তবে ফলন দেখে খরচের কয়েকগুণ টাকা তিনি লাভের প্রত্যাশা করছেন।

তিনি আরও জানান, শীতকালীন সবজি হিসেবে বেশ পরিচিত টমেটো। শীতের পরিবর্তে বর্তমানে গ্রীষ্ম বর্ষা মৌসুমেও টমেটো চাষের সম্ভাবনা উঁকি দিচ্ছে।

কৃষক ফিরোজের টমেটো চাষ দেখে আগামী বছরে এই উচ্চ ফলনশীল জাতের টমেটো চাষ করবেন বলে জানান একই গ্রামের পঞ্চাশোর্ধ দুলাল মিয়া, ত্রিশোর্ধ মিজান মিয়া ও মাসুম মিয়া। তবে এমন উন্নত জাতের বিষয়ে কৃষকের সঙ্গে কৃষি অফিসকেও এগিয়ে আসতে হবে এমন দাবি আগ্রহী কৃষকদের।

সরেজমিন দেখা যায়, পরিত্যক্ত অনাবাদি জমিতে সামার টমেটোর চাষ করা হয়েছে। মালচিং পেপার ব্যবহার করায় আগাছা নেই বাগানে। ফলে, টমেটো গাছগুলো বেশ পরিপক্ব হয়েছে। প্রায় প্রতিটি গাছে থোকায় থোকায় ঝুলছে কাঁচা-পাকা টমেটো।

উপজেলার বাহাদুরসাদী ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জান্নাতুল ফেরদৌস আসমা জানায়, জমিকে উত্তমভাবে তৈরি করে প্রয়োজনীয় জৈব ও রাসায়নিক সার মিশিয়ে বেড তৈরি করে সেখানে বীজ বপন করতে হয়। তারপর সে বেডগুলো মালচিং পেপার দিয়ে ঢেকে দিতে হয়।

উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ ফারজানা তাসলিম বলেন, মালচিং পদ্ধতিতে উচ্চ ফলনশীল এই টমেটো জাতটি ফলনও ভালো দেয় এবং বাজারে এটির চাহিদা ও দাম দুটি বেশি। যে জমিটিতে এ টমেটো চাষ করা হয়েছে জমিটি ছিল পতিত জমি। প্রথমবারের মতো এ জমিতে মালচিং পদ্ধতিতে টমেটো চাষ করে বাজিমাত করেছেন স্থানীয় কৃষক ফিরোজ। তাকে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে যথেষ্ট সহযোগিতা করা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, গ্রীষ্ম ও বর্ষা মৌসুমে টমেটো চাষের সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে একদিকে যেমন অসময়ে বাজারে টমেটোর সংকট মিটানো যাবে, তেমনি কৃষকও আর্থিকভাবে লাভবান হবে। তাছাড়া এখন কৃষক ফিরোজ মিয়াকে দেখে আশ-পাশের অনেকেই এই উচ্চ ফলনশীল জাতের টমেটো চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে বলে জানান উপজেলার এই কৃষি কর্মকর্তা।

(ঢাকাটাইমস/০৭মে/এমআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

স্বাচিপ রাজশাহী জেলা শাখার সভাপতি ডা. জাহিদ, সম্পাদক ডা. আনিকা

বান্দরবানে যৌথবাহিনীর অভিযান, কেএনএফ সদস্যদের হতাহতের খবর

পাহাড়ে আমের বাম্পার ফলন, চাষির মুখে হাসি

গোপালগঞ্জে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় দুই শিক্ষকসহ নিহত ৪

মির্জাপুরে নির্বাচনি সভার খিচুড়ি গেল মাদরাসায় 

গাইবান্ধায় নির্বাচনি অফিস ভাঙচুর, হামলায় আহত ৪

নাটোরে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে গণমাধ্যমের ভূমিকা শীর্ষক কর্মশালা

বন্ধুর ঘর থেকে যুবকের হাত-পা বাঁধা মরদেহ উদ্ধার 

নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস: অধ্যক্ষের বরখাস্তের খুশিতে এলাকায় মিষ্টি বিতরণ 

উপজেলা নির্বাচন: চতুর্মুখী লড়াই হবে কলাপাড়া মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে 

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :