করোনা টিকা প্রত্যাহারের ঘোষণা অ্যাস্ট্রাজেনেকার
ব্রিটিশ-সুইস ওষুধ নির্মাতা কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি করোনা টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে সবাই যখন উদ্বেগে, এরমধ্যেই বৈশ্বিকভাবে নিজেদের তাদের তৈরি কোভিড ভ্যাকসিন তুলে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সংস্থাটি। যদিও সংস্থাটির দাবি, বাণিজ্যিক কারণেই ভ্যাকসিন প্রত্যাহার করে নেওয়া হচ্ছে, এর সঙ্গে ভ্যাকসিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কোনও সম্পর্ক নেই।
মঙ্গলবার অ্যাস্ট্রাজেনেকা এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ‘করোনা ভাইরাস’ নামের যে ভাইরাসটির বিস্তার প্রতিরোধে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সম্মিলিতভাবে ২০২০ সালের শেষ দিকে যে টিকা বাজারে এনেছিল অ্যাস্ট্রাজেনেকা, সেই ভাইরাসটি এখন প্রায় নিষ্ক্রিয়, এমনকি মূল ভাইরাসটি থেকে যেসব ভ্যারিয়েন্ট ভাইরাসের উদ্ভব হয়েছে- সেগুলোও এখন আর প্রাণঘাতী নয়। বাজারে বর্তমানে করোনার মুখে খাওয়ার ওষুধও পাওয়া যাচ্ছে। ফলে বৈশ্বিকভাবে টিকার আর সেই চাহিদাও নেই। তাই বৈশ্বিকভাবে করোনা টিকা প্রত্যাহার করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
প্রসঙ্গত, অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিন প্রয়োগে শরীরে রক্ত জমাট বাধা ও প্লেটলেটের সংখ্যা কমে যাওয়ার মতো ভয়ঙ্কর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। শুধু যুক্তরাজ্যেই কমপক্ষে ৮১ জনের মৃত্যু হয়েছে এই উপসর্গ নিয়ে।
সম্প্রতি এসব ঘটনার কথা উল্লেখ করে অ্যাস্ট্রাজেনেকার বিরুদ্ধে অর্ধশতাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছে। যেখানে ভুক্তভোগী ও তাদের স্বজনেরা ক্ষতিপূরণ হিসেবে মোট ১০০ মিলিয়ন পাউন্ড ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন।
গত বছর অ্যাস্ট্রাজেনেকার বিরুদ্ধে প্রথম মামলাটি দায়ের করেছিলেন জেমি স্কট। ২০২১ সালের এপ্রিলে, ভ্যাকসিন নেয়ার পরে স্কটের মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয় ও রক্ত জমাট বেঁধে যায়। ফলে স্কটের মস্তিষ্কে স্থায়ী ক্ষত তৈরি করে।
এদিকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে অ্যাস্ট্রাজেনেকা আদালতে জমা দেওয়া একটি নথিতে স্বীকার করেছে যে, তাদের তৈরি কোভিড ভ্যাকসিনের কারণে ‘খুব বিরল টিটিএস’ এর ঘটনা ঘটতে পারে। টিটিএসের পূর্ণ রূপ হলো থ্রম্বোসিস উইথ থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া সিনড্রোম। যার ফলে মানুষের রক্তে প্লেটলেট কমে যায় এবং রক্ত জমাট বেঁধে যায়।
ইতিমধ্যেই ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে এই ভ্যাকসিন ব্যবহার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ব্রিটেন ও অন্যান্য দেশেও এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ বন্ধ করা এবং ভ্যাকসিন প্রয়োগের আবেদন জানানো হয়েছে।
যদিও ভ্যাকসিনে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার সঙ্গে বাজার থেকে ভ্যাকসিন তুলে নেওয়ার কোনও সম্পর্ক নেই বলেই দাবি করেছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা। তাদের দাবি, এটি সম্পূর্ণভাবেই ‘কাকতালীয় ঘটনা’।
সূত্র: এনডিটিভি
(ঢাকাটাইমস/০৮মে/এমআর/এফএ)