বেরোবিতে সাংবাদিকতা বিভাগের প্রধান হিসেবে নিয়োগ চেয়ে আইনি নোটিশ
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের এক শিক্ষক ২০১৭ সালের হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী বিভাগীয় প্রধান হিসেবে নিয়োগ চেয়ে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) কর্তৃপক্ষকে আইনি নোটিশ দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আনিছুর রহমান ওই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহামুদুল হকের পক্ষে উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান নিয়োগ সংক্রান্ত সুপারিশ প্রণয়ন কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর ড. মো. মোরশেদ হোসেন এবং ওই বিভাগের প্লানিং কমিটির সদস্যদের এ নোটিশ পাঠিয়েছেন।
হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী, ২০১২ সালের ১৩ জানুয়ারি গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের নিয়োগ ও বাছাই বোর্ডের সুপারিশ মোতাবেক মাহামুদুল হককে প্রভাষক পদে নিয়োগ প্রদান করা হয়। ২০১৯ সালের ৯ মার্চ ৬০তম সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং ১০ মার্চ তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়।
২০১২ সালের মহামান্য হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী মাহামুদুল হককে কেন জ্যেষ্ঠতা ও সার্ভিস বেনিফিট দেওয়া হবে না এবং নিয়োগ জালিয়াতির কারণে কেন একই বিভাগের শিক্ষক তাবিউর রহমান প্রধানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে না এ মর্মে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রতি গত ১৪ মার্চ ২০২২ হাইকোর্ট রুল জারি করেছেন। পূর্বের রায় বাস্তবায়িত না হলে মাহামুদুল হক আদালত অবমাননার আরেকটি মামলা করেন বলে নোটিশে উল্লেখ আছে।
পক রহমতুল্লাহকে দায়িত্ব দেয় প্রশাসন। তিনিও অপরাগতা প্রকাশ করলে সহকারী অধ্যাপক সারোয়ার আহমাদকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনিও দায়িত্ব নেননি।
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালের ২৯ অক্টোবর গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের জন্য অধ্যাপক/সহযোগী অধ্যাপক (স্থায়ী) পদে একটি এবং সহকারী অধ্যাপক/প্রভাষকের দুটি স্থায়ী পদে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এতে তাবিউর রহমান প্রধানসহ ২২ জন প্রভাষক পদে দরখাস্ত করেন। পরের বছরের ১৩ জানুয়ারি প্রভাষক পদের জন্য বাছাই বোর্ড হয়। বাছাই বোর্ড যথাক্রমে মো. মাহামুদুল হক ও নিয়ামুন নাহারকে অপেক্ষমাণ তালিকায় রেখে প্রভাষক হিসেবে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করে। কিন্তু বাছাই বোর্ডের সুপারিশপত্রে দেখা যায়, ‘জালিয়াতি’ করে অপেক্ষমাণ তালিকায় তৃতীয় হিসেবে তাবিউর রহমানের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
পরে দুই দফায় পদোন্নতি নিয়ে বর্তমানে সহযোগী অধ্যাপক পদে আছেন। এ পদোন্নতিতেও রয়েছে বিস্তর অনিয়মের অভিযোগ। নিয়োগবঞ্চিত শিক্ষক মাহামুদুল হকের করা অভিযোগের প্রেক্ষিতে অনিয়ম ও জালিয়াতির মাধ্যমে ১১ বছর আগে নিয়োগ পাওয়া গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তাবিউর রহমানের বিষয়ে জানতে চেয়ে সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) পত্র দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে।
এরই প্রেক্ষিতে তাবিউর রহমানের নিয়োগের জালিয়াতি ও অনিয়মের অভিযোগের বিরুদ্ধে তিন সদস্যের তথ্যানুসন্ধান কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কমিটি এরই মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে বলে জানা গেছে। এসব কারণেই বিভাগীয় প্রধান নিয়োগে আইনগত জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। এরপর বিভাগের একাডেমিক কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনায় তিনজন শিক্ষককে বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব দেওয়া হলে তারা গায়েবি কারণেই অপারগতা প্রকাশ করেন। বর্তমানে আইনি জটিলতায় বিভাগীয় প্রধানের পদ শূন্য রয়েছে।
(ঢাকাটাইমস/০৯মে/প্রতিনিধি/পিএস)