ফরিদপুরে স্কুলছাত্র অন্তর হত্যা: কাঠমিস্ত্রির ছদ্মবেশে থাকা যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ১৮ মে ২০২৪, ১৩:৩৫| আপডেট : ১৮ মে ২০২৪, ১৪:০৭
অ- অ+

কাঠমিস্ত্রি, দর্জিসহ নানা ছদ্মবেশে আত্মগোপনে থেকেও রক্ষা পেলেন না ফরিদপুরের নগরকান্দার স্কুলছাত্র অন্তর হত্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি আজিজুল। ছয় বছর পালিয়ে থাকার পর র‌্যাবের হাতে ধরা পড়েছেন তিনি।

শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-১০।

শনিবার সকালে র‌্যাব-১০ এর ফরিদপুর ক্যাম্পে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব-১০, সিপিসি-৩ এর কোম্পানি অধিনায়ক লে. কমান্ডার কে এম শাইখ আকতার।

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা জানান,

তালমা ইউনিয়নের চর মানিকদী পাগলপাড়া গ্রামের গ্রিস প্রবাসী আবুল হোসেন মাতব্বরের ছেলে আলাউদ্দিন মাতব্বর অন্তর (১৪)। ২০১৮ সালের ৭ জুন রাতে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া অন্তর তারাবির নামাজ পড়তে মসজিদে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হয়। নামাজ শেষ হওয়ার পরও অন্তর বাসায় না ফিরলে তার মা জান্নাতি বেগম সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেন। ছেলেকে না পেয়ে পরদিন নগরকান্দা থানায় তার নিখোঁজের ঘটনায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।

ওই দিন রাতেই জান্নাতি বেগমের মুঠোফোনে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা কল দিয়ে অন্তরের মুক্তিপণ হিসেবে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেন। অন্তরের মা তার স্বামীর সঙ্গে কথা বলে তাদের একমাত্র সন্তান অন্তরকে উদ্ধারের জন্য অপহরণকারীদের কথায় রাজি হন। পরে ১৪ জুন পুলিশের উপস্থিতিতে একটি সেচ মেশিনের ঘরে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা রেখে আসেন।

এরপরও সন্তানকে না পেয়ে ১৫ জুন অন্তরের মা জান্নাতি বেগম বাদী হয়ে সন্দেহজনক ১৬ জনের বিরুদ্ধে নগরকান্দা থানায় একটি অপহরণের মামলা দায়ের করেন। ঘটনার পর ২৪ জুন ২০১৮ পুলিশ মুক্তিপণ দাবি করা মুঠোফোনের মালিক মাহবুব আলম ও তার ভাই জুবায়ের ব্যাপারীকে গ্রেপ্তার করে। পরবর্তীতে গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের স্বীকারোক্তি ও তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ২৬ জুন ২০১৮ রাতে পুলিশ ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা থানাধীন চক এলাকার খালপাড় থেকে পুঁতে রাখা অবস্থায় অন্তরের লাশ উদ্ধার করে।

কে এম শাইখ আকতার বলেন, ‘সেসময়ে পত্রপত্রিকা, টেলিভিশনসহ সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে নৃশংস এই ঘটনাটি।

র‌্যাব জানায়, একই বছরের ২৫ অক্টোবর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ছয়জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে একটি অভিযোগপত্র দাখিল করেন। পরবর্তীতে চলতি বছরের ২৭ মার্চ ফরিদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলায় তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড ও তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন। পাশাপাশি সব আসামিকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা প্রদান করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত আসামি আজিজুল শেখ যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- মাহাবুব আলম (৩৬), কামাল মাতব্বর (৩২) ও খোকন মাতব্বর (৪৮)।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- আশরাফ শেখ (৩৪), আজিজুল শেখ (৩২) এবং সুজন মাতব্বর (৩৬)।

রায় ঘোষণার পর ছয় আসামিদের মধ্যে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। যারা বর্তমানে কারাভোগ করছেন। অন্যদিকে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আজিজুল শেখ আত্মগোপনে চলে যান।

গ্রেপ্তারকৃত আজিজুলকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে র‌্যাব-১০, সিপিসি-৩ এর কোম্পানি অধিনায়ক বলেন, ‘আজিজুল অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, আদালত যাবজ্জীবন রায় ঘোষণার পর দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন ছদ্মবেশ ধারণ করে আত্মগোপন করে ছিলেন। সর্বশেষ পিরোজপুর জেলার ভান্ডারিয়া এলাকায় কাঠমিস্ত্রি, দর্জি ইত্যাদি পেশায় কাজ করেন।

(ঢাকাটাইমস/১৮মে/এলএম/ইএস)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
নির্বাচনের আগেই ফ্যাসিস্টদের বিচার হবে : আইন উপদেষ্টা
ফিরে দেখা ৮ জুলাই: ‘বাংলা ব্লকেড’ শেষে সরকারকে আল্টিমেটাম, সমন্বয়ক কমিটি গঠন
নির্বাচিত হলে স্থানীয় সব সমস্যা সমাধানের আশ্বাস আমিনুল হকের
মিলন-জাদুর ঝলক কি দেখা যাবে আবার?
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা