তীব্র দাবদাহে ফলন বিপর্যয়ের শঙ্কায় পাবনার লিচু চাষিরা 

পলাশ হোসেন, পাবনা
| আপডেট : ২২ মে ২০২৪, ১৬:৫৭ | প্রকাশিত : ২২ মে ২০২৪, ১৬:৩৪

লিচুর জেলাখ্যাত পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলা। ঈশ্বরদীর বাজার লাল লিচুতে রঙিন হতে শুরু করেছে। এ বছর তীব্র দাবদাহে ফলন বিপর্যয়ের শঙ্কায় লিচু চাষিরা। তবুও লাভের আশায় স্বপ্ন বুনছেন চাষিরা।

মঙ্গলবার ঈশ্বরদীর সবচেয়ে বড় বেচাকেনার হাট জয়নগর শিমুলতলাসহ আওতাপাড়া, দাশুড়িয়া, সিলিমপুর, জয়নগর লিচু বাজার ঘুরে দেখা যায়, ভোর থেকেই বেড়েছে ক্রেতা-বিক্রেতা, আড়তদার ও ফড়িয়া লিচু ব্যবসায়ীদের আনাগোনা। তাছাড়া লোকাল ক্রেতা তো আছেই। পাইকারি ব্যবসায়ীরা ঈশ্বরদীর লিচু পৌঁছে দিচ্ছে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। দেশি জাতের পাশাপাশি বোম্বাই জাতের লিচুও উঠতে শুরু করেছে বাজারে। তবে এ বছর ফলন বিপর্যয়ের কারণে লিচুর দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতি হাজার আঁটি লিচু ও অপরিপক্ব বোম্বে লিচু পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ২৫০০ থেকে ৩৫০০ টাকা। ফলন বিপর্যয়ের কারণে অধিক লাভের আশায় অনেক লিচু চাষি অপরিপক্ব বোম্বে লিচু গাছ থেকে পেড়ে বিক্রি শুরু করেছে, যা বাজারে উঠতে শুরু করেছে।

তবে চাষিরা জানান, বোম্বে লিচু পরিপক্ব হতে আরও পাঁচ থেকে ছয় দিন সময় লাগতে পারে। তখন পরিপূর্ণভাবে লিচু বাজারে পাওয়া যাবে এবং সুস্বাদু হবে।

কথা হয় মিরকামারী গ্রামের লিচু চাষি নাসির উদ্দিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমি উপজেলার কয়েকটি জায়গায় ১৫টি লিচু বাগান কিনেছি। লিচুর গুটি আসার পর থেকেই টানা এক মাস ঈশ্বরদীতে তীব্র তাপপ্রবাহ ছিল। তাপমাত্রা অধিক হওয়ায় লিচু পাকার এক সপ্তাহ আগে হলুদ ও লালচে রং ধারণ করে এতে লিচুর ওপরের আবরণ কালচে হয়ে ফেটে যেতে শুরু করে। এবার আকারও ছোট হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এবারের আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় ফলন বিপর্যয় হয়েছে। এতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এবার তুলনামূলক অনেক কম লাভ হবে।

জয়নগর গ্রামের লিচু চাষি ও ব্যবসায়ী শাহিন হোসেন বলেন, অনাবৃষ্টি এবং নিম্নমানের সার কীটনাশক প্রয়োগের কারণে লিচুর মান ঠিক পর্যায়ে আসেনি। এবার লিচু চাষিদের লোকসান গুনতে হবে।

শেখের দাইড় এলাকার লিচু চাষি শের আলী বলেন, আমার নিজস্ব ছয়টি লিচু গাছ রয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শ বা সহযোগিতা আমি পাইনি। সারের ডিলাররা যে পরামর্শ দেয় সেভাবেই আমরা চাষ করি। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় এবং নিম্নমানের সার ও কীটনাশক বাজারে থাকায় আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। পাবনা জেলায় এ বছর চার হাজার ৭৩১ হেক্টর জমিতে লিচুর আবাদের বিপরীতে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৩৭ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এ বছর ঈশ্বরদীতে তিন হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে লিচুর আবাদ হয়েছে। লিচুর জাতের মধ্যে রয়েছে মোজাফফর (দেশি), বোম্বাই ও চায়না। এর মধ্যে মোজাফফর জাতের লিচু বাজারে বিক্রি হতে শুরু হয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মিতা সরকার বলেন, প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ থেকে লিচুকে রক্ষা করতে চাষিদের সেচ ও কীটনাশক ব্যবহার বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছি আমরা। যারা নিয়মিত সেচ দিয়েছেন তাদের লিচুর ক্ষতি কিছুটা কম হয়েছে। অসাধু কীটনাশক ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন সময় মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জরিমানা করা হয়েছে। আমরা নিয়মিত বাজার মনিটরিং করছি।

(ঢাকা টাইমস/২২মে/এসএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :