ওজন বাড়ায় আলু, কমাতেও ওস্তাদ! ডায়াবেটিস রোগী কি খেতে পারেন?
সারা বছর সহজে, পর্যাপ্ত পরিমাণে এবং সূলভ মূল্যে পাওয়া যায়— এমন একটি সবজির নাম আলু। এটি অধিকাংশ মানুষেরই পছন্দের সবজি। এই সবজির স্বাদে সবাই মোহিত। তাই যে কোনো রান্নার পদেই আলুর অবাধ ব্যবহার। আলুকে যেন সর্বঘাটের কাঁঠালি কলা।
তবে শুধু স্বাদ নয়, আলুর গুণও কিন্তু অনন্য। এতে রয়েছে একাধিক উপকারী উপাদান। এই খাবারে আছে কার্ব, ফাইবার, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি৬, পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়ামের মতো উপকারী ভিটামিন ও খনিজ। ফলে আলু খেয়ে একাধিক রোগের ফাঁদ এড়ানো সম্ভব।
তবে মুশকিল হলো, এহেন সাধের আলু নিয়েই নানা উল্টোপাল্টা ধারণা বাজারে চালু রয়েছে। একাধিক দোষে আলুকেই দোষী করা হয়। এই যেমন অনেকেই বলে থাকেন, আলু খেলে নাকি ওজন বাড়ে! সেই ভয়েই অনেকে আলু খাওয়া ছেড়ে দেন।
এখন প্রশ্ন হলো, আদৌ কি আলু খেলে ওজন বাড়ে? এ ব্যাপারে কী বলছেন পুষ্টিবিদরা?
আসলে আলুতে রয়েছে অনেকটা পরিমাণে ক্যালোরি ও কার্ব। এই দুই উপাদান কিন্তু ওজন বাড়াতে পারে। তাই আলু খেলে মেদ বৃদ্ধির আশঙ্কা থেকেই যায়। এমনকি বাড়তে পারে ভুঁড়ির বহরও। তবে এর একটা উল্টো দিকও রয়েছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, আলু কিন্তু অনেকটা সময় পেট ভর্তি রাখতেও সাহায্য করে। তাই আলু খেলে সহজে খিদে পায় না। সে দিক থেকে ওজন কমাতেও সাহায্য করে আলু। তবে এই উপকার পেতে গেলে কতটা পরিমাণ আলু খাচ্ছেন সে দিকে নজর রাখতে হবে।
আলুকে খারাপ ভাবার কোনো কারণ নেই। বরং এই সবজি খেলে একাধিক জটিল অসুখকে দূরে রাখা যায়।। কারণ আলুতে রয়েছে ভিটামিন সি। এই ভিটামিন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সক্ষম।
এছাড়া আলু খুবই সহজপাচ্য খাবার। অর্থাৎ এই খাবার খেলে পেটের সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা কম। আবার হার্ট সুস্থ রাখার কাজেও কিন্তু আলু সিদ্ধহস্ত। তাই এই সবজি নিয়ে অযথা ভয় নিষেধ করছেন পুষ্টিবিদরা।
তবে আলু খেতে হবে হিসেব মেনে। এক্ষেত্রে দিনে ৫০ গ্রামের মতো আলু খেলে তেমন কোনো সমস্যাই হবে না। এমনকি ওজন বাড়ার আশঙ্কাও আর থাকবে না। তাই দিনে দুই থেকে তিন পিস ছোট আলুর টুকরো চলতেই পারে। এমনকি ওয়েট লস ডায়েটেও এই পরিমাণ আলু রাখা যায়।
প্রচলিত একটি ধারণা আছে, আলু সিদ্ধ করে পানি ফেলে দিলে এর গুণ বৃদ্ধি পায়। এমনকি এভাবে খেলে নাকি ওজন বা সুগার বাড়ার আশঙ্কাও থাকে না! তবে এই ধারণাকে সম্পূর্ণ নস্যাত করে দিচ্ছেন পুষ্টিবিদরা। তাদের কথায়, এই সম্পর্কে কোনো গবেষণাতেই কিছু জানা যায়নি। তাই যারা আলু খেয়ে ভাবছেন সব সমস্যার সমাধান করে ফেলবেন, তারা ভুল।
ডায়াবেটিস রোগীদের আলু খাওয়া কি বারণ?
আলুতে রয়েছে স্টার্চ। তা সুগার বাড়াতে পারে ঠিকই। তবে কম পরিমাণে খেলে এর থেকে তেমন একটা সমস্যার আশঙ্কা নেই।। তাই ডায়াবেটিস থাকলেও চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ২ থেকে ৩ পিস আলু খেতেই পারেন।
তবে এক্ষেত্রে আলুর খোসা না ছাড়িয়ে খেলে বেশি উপকার মিলবে। খোসা শুদ্ধ আলু খেলে সুগার এবং ওজন দুইই বাড়ার আশঙ্কা থাকে কম।
(ঢাকাটাইমস/২৪জুন/এজে)
মন্তব্য করুন