পুনর্বহালের দাবি ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের চাকরিচ্যুত শ্রমিক-কর্মচারীদের

চাকরিতে নিজ নিজ পদে পুনর্বহালের দাবি জানিয়েছেন রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের স্থায়ী ও অস্থায়ীভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে চাকুরিচ্যুত শ্রমিক-কর্মচারীরা। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দাবি মেনে নেওয়ার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। অন্যথায় হোটেল ঘেরাও কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
শুক্রবার সকাল ১০টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকা হোটেলের দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা এ দাবি জানান।
বৈষম্যের শিকার এবং বেআইনিভাবে চাকরিচ্যুত শ্রমিক ও কর্মচারীরা ব্যানারে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
লিখিত বক্তব্যে তারা জানান, স্বৈরাচার সরকারের ভারতপ্রীতির কারণে কিছু রাজনৈতিক নেতা, বাংলাদেশ সার্ভিসেস লিমিটেডের (বিএসএল) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং হোটেলের কিছু অসাধু কর্মকর্তার সহযোগিতায় ব্যবস্থাপক পদে একজন ভারতীয় নাগরিককে নিয়োগ দেওয়া হয়। এর পর থেকেই হয়রানি ও বৈষম্যের শিকার হতে থাকেন শ্রমিক কর্মচারীরা। এছাড়া দুর্নীতিবাজ মানবসম্পদ বিভাগের পরিচালকসহ মোট পাঁচ কর্মকর্তার দুর্নীতিতে হাজার কোটি টাকা ঋণে জর্জরিত হয় প্রতিষ্ঠানটি।
তাদের নিজেদের পদ-পদবি ধরে রাখতে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের দিয়েছেন খাবারে মূল্যছাড় সুবিধা। স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে প্রয়োজনের চেয়ে অতিরিক্ত কর্মকর্তাও নিয়োগ দেয় এই সিন্ডিকেট।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, প্রতিষ্ঠানটির লোকসানের কারণে স্থায়ী ও অস্থায়ী শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-বোনাস বকেয়া পড়ে আছে। এমন পরিস্থিতিতে চলতি বছর ২৪ জানুয়ারি হঠাৎ করেই সংশ্লিষ্ট শ্রমিক-কর্মচারীদের এক মাসের ছুটি রাখার নোটিশ দেয় কর্তৃপক্ষ।
ছুটিতে থাকাকালীন সময় অধিকাংশ কর্মীদের ছাটাইয়ের নোটিশ দেওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে কয়েকজনকে চাকরিতে পুনর্বহাল করা হলেও বাকিদের বিষয়ে ছয় মাসেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এমন অবস্থায় চাকরিচ্যুতরা পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
বিভিন্ন দাবি উল্লেখ করে তারা বলেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্ত পাঁচ কর্মকর্তাকে অপসারণ করতে হবে; চাকরিচ্যুতদের স্ব-স্ব পদে পুনর্বহাল; জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে পদোন্নতি দেওয়া; কোনোভাবেই অবনমন না করা; নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বজনপ্রীতি না করে যোগ্যতাকে প্রাধান্য দেওয়া; দীর্ঘদিন কর্মরতদের অস্থায়ী নিয়োগ থেকে স্থায়ী করা; অন্যায়ভাবে দেওয়া নিয়োগ বাতিল করা এবং বেতন বৈষম্য কমিয়ে সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে হবে।
প্রতিষ্ঠানটিকে ব্যবসাবান্ধব করতে শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনার আহ্বান জানিয়ে তারা বলেন, ফ্যাসিবাদী পলিসি বাদ দিতে হবে। শ্রমিক ইউনিয়নে শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের জায়গা। সেটা খর্ব করা যাবে না। কর্মস্থলে শ্রমিকদের ফোন ও ম্যাক আইডি রেখে দেওয়া হতো। এ ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়গুলো খতিয়ে দেখারও দাবি জানান তারা।
(ঢাকাটাইমস/২৩আগস্ট/এমআই/এসআইএস)

মন্তব্য করুন