ঢামেকে কর্মবিরতি: মেলেনি চিকিৎসা, উল্টো হামলার শিকার রোগী

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা এক রোগীর ওপর ডাক্তারের হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে হামলার ঘটনা অস্বীকার করছে ঢামেক কর্তৃপক্ষ।
রবিবার দুপুর সাড়ে ১২টার পর এই হামলার ঘটনা ঘটে।
মাদারীপুর থেকে চিকিৎসা নিতে এসেছিলেন ভাইবোন হালিমা ও আতাউর রহমান। আতাউর রহমানের ওপর হামলা হয় বলে অভিযোগ করেন তারা।
হালিমা বলেন, “আমরা তো আগে কী ঘটেছে কী হয়েছে কিছুই জানি না। আমার মাথা ব্যথার সমস্যা ছিল। এক মাস আগে ডাক্তার দেখিয়েছিলাম। আবার আজ ডাক্তার দেখানোর কথা ছিল। তাই মাদারীপুর থেকে ডাক্তার দেখাতে এসেছিলাম।”
তিনি বলেন, “আমরা জরুরি বিভাগে এসে টিকিট কাটতে পারি নাই। চিকিৎসা দিচ্ছে না বলে আমরা চলে যাব। এর মধ্যে ভাই বলছে, আপু তোর ফোনটা একটু দে। আমি একটু ভিডিও করি। ও ফোনটা উঁচু করার সঙ্গেই ডাক্তাররা ওর হাত থেকে ফোনটা থাবা দিয়ে নিয়েই মারধর শুরু করে।”
কী ভিডিও করতে গিয়েছিলেন এমন প্রশ্নের জবাবে আতাউর রহমান বলেন, “৫-৬ জন ভিডিও করছিল আমিও তাদের দেখাদেখি ভিডিও করছিলাম। কোনো আন্দোলন বা কোনো কিছুই হচ্ছিল না। ১০ নম্বর সভাকক্ষের ভেতরে তারা (চিকিৎসকরা) কী করছিল জানি না। তার সামনে বাইরে আমি ভিডিও করতে শুরু করতেই একজন আমার ফোনটা টান দিয়ে নিয়ে আমাকে বলে তুমি কে? আমি বলি আমি পেশেন্ট। তারপর আমাকে মারধর শুরু করে। এরপর তারা আমাদের বের করে দেয়।”
এদিকে মারধরের ঘটনা অস্বীকার করে ডেন্টাল বিভাগের অডিটে দায়িত্বরত শাহীন শিকদার ঢাকা টাইমসকে বলেন, “তারা মিথ্যা অভিযোগ করছে। হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা বন্ধ আছে। কোনো ডাক্তার নেই, তাহলে তাদের ওপর ডাক্তাররা হামলা করবে কীভাবে? আপনারা তাদের নিয়ে দেখাতে বলতেন কোন জায়গা তাদের উপর হামলা করা হয়েছে, হামলার কোনো চিহ্ন আছে কিনা তাদের শরীরে?”
শনিবার ঢামেকে নিউরো সার্জারি বিভাগের তিন চিকিৎসককে মারধরের ঘটনা ঘটে। এতে দোষীদের সিসি টিভি ফুটেজ দেখে শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের আল্টিমেটাম দেন চিকিৎসকরা। অন্যথায় ২৪ ঘণ্টা পর তারা কর্মবিরতিতে যাবেন বলে ঘোষণা দেন।
ওইদিন মধ্যরাতে খিলগাঁও সিপাহীবাগ এলাকা থেকে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহতরা ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা নিতে আসেন। পরে এক গ্রুপ চাপাতিসহ হাসপাতালে জরুরি বিভাগের ভেতরে ঢুকে পড়ে। এ সময় হাতেনাতে চারজনকে আটক করে সেনাবাহিনীতে দেয় কর্তৃপক্ষ।
এরপর আরেক রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় হাসপাতালের জরুরি বিভাগের অনস্টপ ইমারজেন্সি সেন্টারে ভাঙচুর চালায় রোগীর স্বজনরা।
এরপর নিরাপত্তা শঙ্কায় জরুরি বিভাগের কার্যক্রম বন্ধ করে দেন চিকিৎসকরা। দোষীদের শনাক্ত কররে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের বিচারের দাবি জানান। অন্যথায় কর্মবিরতিতে যাওয়ার ঘোষণা দেন। পরে আল্টিমেটামের ২৪ ঘণ্টা শেষ হওয়ার আগেই কর্মবিরতিতে যান তারা।
এ ঘটনায় রবিবার সকাল থেকেই জরুরি বিভাগের চিকিৎসাসেবা বন্ধ করে দেন চিকিৎসকরা।
(ঢাকাটাইমস/০১সেপ্টেম্বর/এমআই/এফএ)

মন্তব্য করুন