জাবিতে মাদক সরবরাহের অভিযোগে কারবারী আটক

মাদকদ্রব্য গাঁজা সরবরাহের অভিযোগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) মীর মশাররফ হোসেন হলের এক পুরাতন পত্রিকা ক্রেতাকে আটক করেছে হলের নিরাপত্তা কর্মীরা। আটক হওয়া শাহিন পুরোনো পত্রিকা সংগ্রহের আড়ালে ক্যাম্পাসে মাদক সরবরাহ করতেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টায় পুরাতন পত্রিকা নিতে এলে মো. শাহিনকে পূর্বের একাধিক অভিযোগের ভিত্তিতে আটক করা হয়।
অভিযুক্ত মো শাহিন (৪০) ক্যাম্পাসের পার্শ্ববর্তী গেরুয়া পুরান মাদরাসা এলাকার বাসিন্দা। তার স্থায়ী ঠিকনা সাভারের রেডিও কলোনি, বাবা মো. বাচ্চু মিয়া।
হলের ডাইনিং কর্মচারী মো. নাসিমুল হক বাবু ও অন্যান্য মাদকসেবীদের সঙ্গে নিয়মিত গাঁজা সেবন এবং হলে গাজা সরবরাহের অভিযোগ শাহিনের তার বিরুদ্ধে। এমনকি গত ফেব্রুয়ারিতে ধর্ষণকাণ্ডের পর তাকে হলে এসে কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে দেখা গেছে বলে নিশ্চিত করেছেন হলের নিরাপত্তা কর্মীরা।
জিজ্ঞাসাবাদে হলের ডাইনিং ও ক্যান্টিনে কর্মরত কয়েকজন কর্মচারী তার সঙ্গে জড়িত বলে জানিয়েছেন অভিযুক্ত শাহিন। এদের মধ্যে হলের দৈনিক হাজিরাভিত্তিক ডাইনিং কর্মচারী মো. নাসিমুল হক বাবু রয়েছেন। বাবুর গ্রামের বাড়ি দিনাজপুরের বিরল উপজেলার বাজনাহার ইউনিয়নে। টারজান পয়েন্টে তার পিতা মেহের আলীর চায়ের দোকান আছে।
গাঁজা সেবনের অভিযোগ স্বীকার করে ডাইনিং কর্মচারী বাবু বলেন, ‘কিছুদিন আগে শাহিনের সাথে আমার দেখা হয়েছিল। বললাম, সারাদিন (গাঁজা) খাইতে পারি নাই। চলো খেয়ে আসি। হলের ডাইনিংয়ের পেছনে এক জায়গায় আমরা দুইজনে বসে (গাঁজা) খাই। আমি গেরুয়া থেকে নিয়ে আসছিলাম। তবে আমি এখন খাই না।’
এছাড়াও হল প্রভোস্টের ফাঁকা বাসভবনে যন্ত্রপাতি চুরির ঘটনায় বাবুসহ কয়েকজন কর্মচারির বিরুদ্দে তদন্ত চলছে।
এ বিষয়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তা শামসুল আলম বলেন, ‘৬ মাস আগে হলের স্টাফদের সঙ্গে গাঁজা সেবন ও হলে গাঁজা সরবরাহের অভিযোগ পেলে তাকে বারবার ফোন দিয়ে হল অফিসে দেখা করার জন্য বলা হয়েছে। কিন্তু কোনোভাবেই সে দেখা করেনি। আজ সে পত্রিকা নিতে এলে হলের নিরাপত্তাকর্মীরা তাকে আটক করে প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করে। শাহিনকে নিরাপত্তা অফিসে দেওয়া হবে।’
এসময় হলের সন্দেহভাজন কর্মচারীদের ডোপ টেস্টের মাধ্যমে মাদক সংশ্লিষ্টতা যাচাই করা হবে বলেও জানান তিনি।
এসময় অভিযুক্ত শাহীন বলেন ‘আমি আগে নিয়মিত গাঁজা খাইতাম। এখন সব ছেড়ে দিয়েছি। হলের স্টাফের সাথে হলে গাঁজা খেয়েছি এটা সত্য। কিন্তু এখন আর আমি এসবে নাই।’
হল ও আশেপাশে কারা মাদক সরবরাহের বিষয়ে শাহীন বলেন ‘পার্শ্ববর্তী এলাকা গেরুয়াতে মাদক সরবরাহ করে খান সাহেব ও পাঞ্চু। এদের মধ্যে বটতলায় দোকানে কাজ করে লেকু। লেকুর বাবা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী।’
এ ব্যাপারে হলের ওয়ার্ডেন অধ্যাপক মোহাম্মদ মজিবুর রহমান বলেন ‘মাদকের ব্যপারে আমরা জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহন করেছি। চুনোপুঁটি থেকে শুরু করে রাঘববোয়াল সবাইকেই আমরা ধরার চেষ্টা করছি। ইনশাল্লাহ খুব শীঘ্রই আমরা আমাদের হলসহ বিশ্ববিদ্যালয়কে মাদকমুক্ত করবো।’
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার গাঁজা সরবাহের সময় হাতেনাতে হলের ক্যান্টিন বয় আসিফ ও ৪৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী শিহাদকে আটক করে হলের নিরাপত্তাকর্মীরা। এ ঘটনায় হলের একটি ক্যান্টিন বন্ধ করে দেয় হল প্রশাসন। এছাড়া অভিযুক্ত শিহাদকে কারণ দর্শানো নোটিশ ও অন্যান্যদের লিখিতভাবে সতর্ক করা হয়।
(ঢাকাটাইমস/০৩সেপ্টেম্বর/এসআইএস)

মন্তব্য করুন