ভর্তির এক বছরেও শেষ হয়নি প্রথম সেমিস্টার, বিপাকে শিক্ষার্থীরা

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮তম আবর্তনের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের ক্লাস গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বর শুরু হয়েছে। ক্লাস শুরুর এক বছর পার হলেও শেষ হয়নি প্রথম সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ওশানোগ্রাফি ডিপার্টমেন্ট ও বিএমএস ডিপার্টমেন্টে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের টার্ম ১ এর সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা এখনো শেষ হয়নি। দীর্ঘদিন বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় ল্যাব ফাইনালসহ বেশ কিছু সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা আটকে আছে। কিছু কিছু ডিপার্টমেন্টের প্রথম সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা শেষ হলেও রেজাল্ট আটকে আছে।
ওশানোগ্রাফি ডিপার্টমেন্টের ২০২২-২৩ সেশনের শিক্ষার্থী সাইফ আল সাহাব বলেন, ‘এক বছর পূর্ণ হলেও একটি সেমিস্টারও শেষ হয়নি ওশানোগ্রাফি ডিপার্টমেন্ট এ।
গত ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ সালে ওশানোগ্রাফি বিভাগের ২০২২-২৩ সেশন, সপ্তম ব্যাচ এর ক্লাস আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। টার্ম ১ সেমিস্টার পরীক্ষা এ বছর ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও প্রাক্তন চেয়ারম্যান নাজমুস সাকিব খানের গাফিলতি ও দায়সারা কর্মকাণ্ডের ফলে ধাপে ধাপে সেমিস্টার পরীক্ষার সম্ভাব্য তারিখ পেছাতে থাকে। এক পর্যায়ে পরীক্ষা পেছাতে পেছাতে অবশেষে এ বছর মে মাসের ১২ তারিখে সেমিস্টার পরীক্ষার তারিখ ধার্য করে পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ করা হয়। দেখা যায় এ বছর ফেব্রুয়ারি মাসে আমাদের একটি প্র্যাকটিকেল ও ফিল্ড ট্রিপ বাদে বাকি কোর্সসমূহ যথা সময়ে শেষ হলেও আমাদের প্রায় তিন মাস অবসর সময় পার করতে হয়।
দীর্ঘ তিন মাস পর পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ করলেও এতে ত্রুটি দেখা যায়। এখানে আমাদের একটি কোর্স রুটিন থেকে বাদ পড়ে। ত্রুটি সংশোধন করে একটি কোর্সের পরীক্ষা পরের মাস অর্থাৎ জুন মাসের ৯ তারিখে নেয়া হয়। এর ফলে শেষ দুটি পরীক্ষার মাঝে প্রায় ১২ দিনের দীর্ঘ সময় গ্যাপ থাকে। পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে ঈদুল আজহার ছুটি, শিক্ষকদের প্রত্যয় পেনশন স্কিম বর্জনের দাবিতে ক্লাস বর্জন ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে সমস্ত ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিত থাকে। যার ফলশ্রুতিতে আমদের একটি প্রাকটিক্যাল পরীক্ষা ও ফিল্ড ট্রিপ বাকি থাকে। ছয় মাসে একটি সেমিস্টার অর্থাৎ বছরে দুইটি সেমিস্টার পরীক্ষা সম্পন্ন হওয়ার কথা থাকলেও আজ প্রায় এক বছর হয়ে গেলেও আমাদের ২০২২-২৩ সেশনের একটি সেমিস্টারও শেষ হয়নি।’নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএমএস ডিপার্টমেন্টের এক শিক্ষার্থী বলেন, ডিপার্টমেন্টের ডিগ্রি নিয়ে আন্দোলন জড়িত সমস্যার কারণে আমাদের ক্লাস এই বছরের ফেব্রুয়ারিতে শুরু হয়,পরীক্ষার রুটিন দিলেও পরবর্তীতে শিক্ষক আন্দোলন এবং কোটা আন্দোলনের কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় পরীক্ষা হয়নি। ভর্তি হওয়ার এক বছরের মধ্যেও আমাদের একটি সেমিস্টারও কমপ্লিট হয়নি।
এই বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে বিএমএস ডিপার্টমেন্টের চেয়ারম্যান ড.দিব্যদ্যুতি সরকার বলেন, ‘ডিপার্টমেন্টের আন্দোলনের কারণে ক্লাস বন্ধ থাকায় এই সমস্যা তৈরি হয়েছে। আমরা চেষ্টা করবো দ্রুত এই সমস্যা সমাধান করার।’
এই বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ওশানোগ্রাফি ডিপার্টমেন্টের চেয়ারম্যান ড. মো. গোলাম মোস্তফা ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের আটকে থাকা ল্যাব পরীক্ষা খুব শিগগিরই নেওয়া হবে এবং সব ব্যাচের সেশনজট কমানোর জন্য সেমিস্টার মিনিমাইজ করার কথা ভাবছি। আমি নতুন দায়িত্ব পেয়েছি, আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো সেশনজট কমানোর জন্য। নতুন করে যাতে আর সেশনজট তৈরি না হয় সেই বিষয়টি দেখবো।’
(ঢাকা টাইমস/০৪সেপ্টেম্বর/এসএ)

মন্তব্য করুন