উখিয়া-টেকনাফের মেরিনড্রাইভ দিয়ে আসছে রোহিঙ্গারা
বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সহিংসতা অব্যাহত রয়েছে। একই সঙ্গে রাজ্যটিতে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়ন বৃদ্ধি পাওয়ায় বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ ফের উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। কয়েকদিনের ব্যবধানে জল ও স্থল হয়ে প্রায় ২ হাজার রোহিঙ্গা নারী পুরুষ ও শিশু উখিয়ায় প্রবেশ করেছে।
কক্সবাজার জেলার লাগোয়া অঞ্চল উখিয়া টেকনাফ এবং নাইক্ষ্যংছড়ির পূর্বাঞ্চলের বিস্তীর্ণ পাহাড়ে অপেক্ষমাণ রয়েছে আরও কয়েক হাজার রোহিঙ্গা। এক শ্রেণির দালাল চক্র রাতের আধারে এসব রোহিঙ্গাদের ধাপে ধাপে অনুপ্রবেশ করাচ্ছে।
দেশের নাফ নদ সীমান্তে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ও কোস্ট গার্ডের টহল জোরদার থাকার কথা থাকলেও কার্যত পূর্বাঞ্চলীয় পাহাড়ি জনপদ এবং উপকূলীয় এলাকা অরক্ষিত বলা চলে। ১৭০ কিলোমিটার জল ও স্থল সীমান্তের মধ্যে অর্ধেকই উপকূলীয় এলাকা। কোস্ট গার্ডের লোকবল সংকটের কারণে এসব উপকূল দিয়েও রোহিঙ্গারা আসা শুরু করেছে। গত সোমবার থেকে পরশু থেকে সমুদ্র উপকূল মেরিনড্রাইভ দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে রোহিঙ্গা।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা জানিয়েছেন, সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া, উপকূল এলাকাজুড়ে টহল পার্টি জোরদার না থাকায় এমন পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে। এছাড়া টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ খুরের মুখ, শিলখালী পর্যন্ত ৩০ কিলোমিটার এলাকার বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে ঢুকছে রোহিঙ্গারা। নৌপুলিশ-থানা পুলিশ মাঠে নিষ্ক্রিয় হওয়ায় সক্রিয় হওয়া এর অন্যতম কারণ।
বিজিবির টেকনাফের-২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহামদ মহিউদ্দিন জানিয়েছেন, এত দুর্গম সীমান্ত সঠিকভাবে টহল দেওয়া কঠিন। স্থানীয় দালালরা রোহিঙ্গাদের নিয়ে আসছে। তবে সীমান্তে টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে। রোহিঙ্গা সংশ্লিষ্ট স্থানীয় লোকদের আনাগোনায়ও সতর্কতা রাখা হয়েছে। বিজিবির অধিনায়ক আরও বলেন, আমরা দালালদের তালিকা তৈরি করছি। মঙ্গলবার ১০ জন দালাল আটক করা হয়েছে।নাফ নদে টহল কড়াকড়ি করা হয়েছে। একইভাবে উপকূল এলাকায়ও টহল জোরদার করা হচ্ছে।
উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, রাতের আঁধারে নাফ নদীর সীমান্ত দিয়ে নতুন করে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গারা প্রবেশ করছে। এসব রোহিঙ্গারা যাতে স্থানীয়দের বাসা বাড়িতে স্থান করে নিতে না পারে, এজন্য সরকারের সর্বোচ্চ সতর্ক থাকা জরুরি। সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা জানান, বিজিবি-কোস্ট গার্ডসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল অপ্রতুল। তাই সুযোগ বুঝে স্থল ও জলপথে রোহিঙ্গারা অনুপ্রবেশ করছে। রাতের আঁধারেও সাঁতার কেটেও তারা বাংলাদেশে আসছে।
(ঢাকাটাইমস/১১সেপ্টেম্বর/এমআর)