ম্যারাডোনার দেহাবশেষ স্থানান্তরের অনুমতি দিল আদালত
ডিয়েগো ম্যারাডোনার দেহাবশেষ কবরস্থান থেকে সরানোর অনুমতি দিয়েছে আর্জেন্টিনার একটি আদালত। কবরস্থান থেকে সরিয়ে ম্যারাডোনার দেহাবশেষ আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনস এইরেসের কেন্দ্রস্থলে একটি সমাধিস্তম্ভ বানিয়ে সেখানে স্থানান্তরের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচারের পর ২০২০ সালের নভেম্বরে ৬০ বছর বয়সে মারা যান ম্যারাডোনা। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর বুয়েনস এইরেসে একটি বাসা ভাড়া করে ম্যারাডোনাকে সেখানে রাখা হয়েছিল। অস্ত্রোপচারের দুই সপ্তাহ পর ম্যারাডোনাকে তার বিছানায় মৃত পাওয়া যায়। হার্ট অ্যাটাকে মারা যান সর্বকালের অন্যতম সেরা এই ফুটবলার।
ম্যারাডোনার মেয়েরা এর আগে অনুরোধ করেছিলেন, ‘এম১০ মেমোরিয়াল’ নামে একটি স্মৃতিস্তম্ভ বানিয়ে তাদের বাবার দেহাবশেষ যেন সেখানে স্থানান্তর করা হয়। বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, যে আদালত কিংবদন্তি ম্যারাডোনার দেহাবশেষ স্থানান্তরের অনুমোদন দিয়েছেন। সেইসঙ্গে আদালত ম্যারাডোনার মৃত্যুর পেছনে তার চিকিৎসক দলের কোনো ধরনের অবহেলা ছিল কি না, সে বিষয়ে তদন্ত করছেন।
আর্জেন্টিনার সংবাদমাধ্যম বুয়েনস এইরেস টাইমস জানিয়েছে, সান ইসিদ্রোর তিন নম্বর ফৌজদারি আদালতে ম্যারাডোনার দেহাবশেষ স্থানান্তরের নির্দেশ দিয়েছেন। বুয়েনস এইরেসের উত্তর–পশ্চিমাঞ্চলে বেলা ভিস্তায় এখন সমাহিত আছেন ম্যারাডোনা। পুয়ের্তো মাদেরোয় সমাধিস্তম্ভ বানিয়ে সেখানে তার দেহাবশেষ স্থানান্তর করা হবে।
ম্যারাডোনার মৃত্যুর পর দেহাবশেষ স্থানান্তরের অনুরোধ করেছিলেন তার কন্যারা। আর্জেন্টিনার আরেক সংবাদমাধ্যম ‘ক্লারিন’ জানিয়েছে, দুই বছর আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ হওয়া একটি ছবিতে দেখা গিয়েছিল, বেলা ভিস্তায় ম্যারাডোনার সমাধি অবহেলিত অবস্থায় পড়ে আছে। বিষয়টি তখন আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছিল।
এক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারী জানিয়েছেন, ম্যারাডোনার সমাধি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। তার প্রকাশ করা ছবিতে দেখা যায়, ম্যারাডোনার সমাধিতে কোনো ফলক নেই। শুধু আর্জেন্টিনার অপরিচ্ছন্ন একটি পতাকার জন্য বোঝা যায় সমাধিটি বিশেষ কোনো ব্যক্তির। কিন্তু ক্লারিন দাবিটির সত্যতা পরীক্ষা করতে গিয়ে দেখেছে, ম্যারাডোনার সমাধি খুব ভালো অবস্থায় আছে।
প্রস্তাবিত নতুন সমাধিস্তম্ভের বিষয়ে ম্যারাডোনার সন্তানদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, জায়গাটি তার ‘বর্তমান সমাধির তুলনায় নিরাপদ এবং সব আর্জেন্টাইন ও বিশ্বের মানুষ তাকে শ্রদ্ধা জানাতে পারবেন।’
২০২১ সালের নভেম্বরে ম্যারাডোনার প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে তার সন্তানেরা ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করা একটি চিঠিতে তাদের বাবার দেহাবশেষ স্থানান্তরের অনুরোধ করেছিলেন। ম্যারাডোনার পাঁচ সন্তানের অনুরোধে কিংবদন্তির এস্টেটের দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা প্রশাসক সেবাস্তিয়ান বাগলিয়েত্তোর সই করা সেই চিঠিতে বলা হয়, ‘চিরকালীন বিশ্রামের একটি জায়গা, যেখানে মানুষ তাকে শ্রদ্ধা জানাতে আসবে, যারা প্রতিদিন বিভিন্নভাবে তার প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করে।’
(ঢাকাটাইমস/০২ অক্টোবর/এনবিডব্লিউ)