পানের বাজারে ধস, লোকসানে হরিণাকুণ্ডুর চাষিরা

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৬:২৭| আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৬:৪২
অ- অ+

বিয়ে কিংবা কোনো অনুষ্ঠানাদিতে পান না হলে যেন তা পূর্ণতা পায় না। বাঙালি জাতির পান দিয়ে আপ্যায়ন একটি আবহমান কাল ধরে চলে আসা রীতি। প্রচলন আছে ‘ধান, কলা আর পান, হরিণাকুণ্ডুর প্রাণ’, কিন্তু এ বছর পানের দামে ধস নামায় বিপাকে পড়েছেন উপজেলার পান চাষিরা।

লাখ লাখ টাকা খরচ করে উৎপাদন করতে হয় পান। আর সেই পান বিক্রি করতে হচ্ছে পানির দরে, হারিয়ে যাচ্ছে প্রাণের ফসল পান। ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে না পারায় পান চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন চাষিরা।

জানা যায়, এখানকার উৎপাদিত পান একসময় উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ, ফরিদপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হতো। তাতে ভালো আয় করতেন হরিণাকুণ্ডুর চাষিরা।

এখন সময় খারাপ যাচ্ছে তাদের। বড় সাইজের যে পানপাতা বিক্রি হতো প্রতি বিড়া বা পোন ১০০ থেকে ১১০ টাকা, সেই পানপাতা এখন বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৪০ টাকা দরে। ছোট সাইজের পানপাতা বিক্রি হচ্ছে আট-দশ টাকা থেকে পনের-ষোলো টাকা দরে। পানের বাজারের এই বিপর্যয়ের সাথে রয়েছে বিভিন্ন কীটনাশক, বাঁশ, বিছালি ও শ্রমিকের বাড়তি মজুরি। লোকসান গুনে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কৃষকেরা।

উপজেলার বড় পানবাজার ভবানীপুর, জোড়াদাহ, শাখারিদাহ, হরিণাকুণ্ডু আমের চারা— এসব বাজারে সরেজমিনে গিয়ে চাষিদের সাথে কথা বলে দেখা গেছে তাদের মধ্যে একরাশ হতাশা। স্থানীয় বাজারগুলোতে একসময় চাষিদের চোখে ছিল আনন্দ। বেচাকেনা হতো পঁচিশ-ত্রিশ লাখ টাকার পান। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে হই হুল্লোড় করে আসতেন পাইকারি ক্রেতা-বিক্রেতারা। কিন্তু এখন পানের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় পরিবহন খরচও জুটছে না চাষিদের।

উপজেলার তৈলটুপী, জোড়াদাহ, ভেড়াখালী, হরিণাকুণ্ডু, পার্বতীপুর, দখলপুর, দৌলৎপুর, কেষ্টপুরের পান বরজের মালিকেরা জানালেন চরম লোকসানের কথা।

দীর্ঘদিন ধরে পান ব্যবসার সাথে জড়িত আড়তদার ভবানীপুর পান বাজারের সভাপতি কাসেম মিয়া হতাশা প্রকাশ করে জানান, বর্তমানে পানের দাম খুবই কম। অর্ধেক দামে বিক্রি করতে হচ্ছে পান। চারশত টাকা জনের দাম, এক আটি মুটির দাম পাঁচশ টাকা, ওয়াসীর দাম সাতশ, বিছালির দাম সাতশ টাকা। বাজার মন্দা থাকায় পানচাষি এবং ব্যবসায়ীরা ব্যাপক লোকসানের মধ্যে রয়েছেন।

হরিণাকুণ্ডু কৃষি কর্মকর্তা শহীদ মোহাম্মদ তিতুমীর জানান, উপজেলার প্রায় ১ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে পান চাষ হয়। পানচাষিদের চাহিদা অনুযায়ী সব ধরনের পরামর্শ দেওয়া হয়। পানের ন্যায্য দাম না পাওয়ার পেছনে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট ও পানের আধুনিক জাতের অভাবের কথা জানান তিনি।

(ঢাকাটাইমস/২৯ডিসেম্বর/মোআ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
দিল্লিতে ৪ মাত্রার ভূমিকম্প, উত্তর ভারতজুড়ে তীব্র কম্পন
দুদিনের কর্মসূচি শুরু আজ: দাবি আদায়ে সরকারকে চাপ প্রয়োগসহ বিশ্বে তিস্তার দুঃখ তুলে ধরা হবে
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক পাচ্ছেন দুজন গবেষক ও এক প্রতিষ্ঠান
চট্টগ্রামে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নেত্রীকে পুলিশের দিলেন বৈষম্যবিরোধীরা
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা