দুষ্কৃতকারীদের শায়েস্তা করতে ডিসিদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে: স্বাস্থ্য উপদেষ্টা

আইনের যথাযথ প্রয়োগ করে দুষ্কৃতকারীদের শায়েস্তা করতে ডিসিদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম। তিনি বলেন, ‘আমাদের আইন আছে, কিন্তু প্রয়োগ নেই। তাই আইন প্রয়োগ করে দুষ্কৃতকারীদের শায়েস্তা করার কথা ডিসিদের বলেছি।’
রবিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তিন দিনব্যাপী জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের প্রথম দিন বিকালে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় বিষয়ক কার্য অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা।
এর আগে সকালে নিজ কার্যালয়ের শাপলা হলে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ডিসি সম্মেলনের উদ্বোধন করেন। তিন দিনব্যাপী এই সম্মেলন শেষ হবে ১৮ ফেব্রুয়ারি।
নূরজাহান বেগম বলেন, ‘আজকে জেলা প্রশাসকরা নানা বিষয়ে প্রশ্ন করেছেন। বিশেষ করে হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ সংক্রান্ত নানা সমস্যার কথা বলেছেন। সেসব সমস্যার মধ্যে আমরা কিছু কিছু সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি। তবে আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যেটা মনে হয়েছে, সেটা হলো আমাদের প্রতিরোধমূলক কিছু করা উচিত। এই যে হাইপার টেনশন, ডায়াবেটিস হচ্ছে এগুলোর কারণগুলো কী? কীভাবে হয়, মানুষকে কিভাবে সচেতন করতে পারি।’
তিনি বলেন, ‘ট্যোবাকো নিয়ে কী করতে পারি, ছোট ছোট বাচ্চারা ই-সিগারেটে অভ্যস্ত হয়ে যাচ্ছে। সেগুলোকে আমরা কীভাবে প্রতিরোধ করতে পারি। আমাদের সেসব বিষয় নিয়ে কাজ করতে হবে। এই ক্ষেত্রে আইনের যথাযথ প্রয়োগ করতে হবে।’
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসা নিয়ে কোন আলোচনা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘এ পর্যন্ত আমরা ৪০ জন আহত রোগীকে সিঙ্গাপুর ও ব্যাংককে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠিয়েছি, টাকার দিকে তাকাইনি। আমরা যখন দায়িত্ব গ্রহণ করি তখন জানতাম না এয়ার অ্যাম্বুলেন্স কোথায় পাওয়া যায়। কিন্তু তড়িৎ গতিতেই এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করে আহতদের বিদেশে পাঠানো হয়েছে। আমরা তাদের সর্বোত্তম চিকিৎসা দিতে চেষ্টা করেছি। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে ডাক্তার এনে তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
নূরজাহান বেগম বলেন, ‘আহতদের কিছুটা অসন্তুষ্টি আছে, সেটা এক শতাংশও হবে না। তবে কেউ যখন এক থেকে তিন সপ্তাহ বিছানায় পড়ে থাকে তখন তো একটা ট্রমা কাজ করে। এরা তো গত ছয় মাস ধরে পা ভেঙ্গে, পা-হাড়িয়ে, হাত হারিয়ে, চক্ষু হারিয়ে বসে আছে। তাদের ট্রমা আস্তে আস্তে কমে যাবে। তাদের রিহেবিলিটেশন করার পরিকল্পনাও রয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ অন্যদের সমন্বয়ে চেষ্টা করা হচ্ছে। এটা যদি আমরা করতে পারি তাহলে এগুলো আর থাকবে না।’
স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়নে সকলকে একটি টিম গঠন এবং এই টিমে এনজিওদের অংশীদার করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, বিভিন্ন জেলার হাসপাতালে লোকবলের সমস্যা সমাধান, কমিউনিটি হাসপাতালে পর্যাপ্ত ওষুধ সরবরাহ, সড়ক দুর্ঘটনায় আহতদের দ্রুত হাসপাতালে নেয়ার জন্য এনজিওদের সাথে সমন্বয় করে ওয়ার্কফোর্স তৈরির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
হাসপাতালে নির্মাণকাজে ভূমি অধিগ্রহণ বিষয়ে সহযোগিতা প্রদানের বিষয়ে আলোচনার কথা জানিয়ে নূরজাহান বেগম বলেন, বাল্যবিবাহ বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ, ভেজাল খাদ্য বিক্রেতা/উৎপাদনকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি নিষিদ্ধ করা, গ্রামাঞ্চলের ওষুধের মান নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে ডিসিদের বলা হয়েছে।
বৈঠকে স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে জনগণের সচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রচার কার্যক্রম জোরদার করার বিষয়ে ডিসিদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে বলেও জানান উপদেষ্টা।
(ঢাকাটাইমস/১৬ফেব্রুয়ারি/এজে)

মন্তব্য করুন