২০ বিলিয়ন ডলারের প্রলোভনে প্রতারণা, বিপুল অর্থসহ প্রতারক চক্রের চার সদস্য পুলিশের জালে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ২১ মার্চ ২০২৫, ১২:৪৭| আপডেট : ২১ মার্চ ২০২৫, ১২:৫১
অ- অ+

রাজধানীর আদাবর থেকে বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থ উদ্ধারসহ 'ম্যাগনেটিক কয়েন' প্রতারক চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- ইফতেখার আহম্মেদ (৪৪), আবু নাঈম মো. ফাইজানুল হক ওরফে ডক্টর নাঈম (৪৮), মো. আব্দুল হালিম তালুকদার কুরাইশি (৪২) আবুল কালাম আজাদ (৪৬)

মিজানুর রহমান নামের এক ভুক্তভোগীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে শুক্রবার সকাল ৭টা পর্যন্ত আদাবরের প্রিন্স বাজার, শেখেরটেক, সূচনা কমিউনিটি সেন্টার কৃষি মার্কেটসহ অন্যান্য এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। সময় তাদের হেফাজত থেকে চারটি এন্টিক মেটাল কয়েন (ধাতব মুদ্রা), একটি ৫০ লাখ টাকার ব্যাংক চেক, নগদ ১৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ১০টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

শুক্রবার সকালে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার মো. ইবনে মিজান। এসময় মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) মেহেদী হাসান আদাবর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম জাকারিয়া উপস্থিত ছিলেন।

ইবনে মিজান বলেন, “আট মাস পূর্বে আইটি প্রতিষ্ঠানের মালিক মিজানুর রহমানের সঙ্গে ইফতেখার আহম্মেদের পরিচয় করিয়ে দেন তারই বাসার একজন ভাড়াটিয়ার মেয়ে। ইফতেখারেরএন্টিক মেটাল কয়েন’ (ধাতব মুদ্রা) ব্যবসা সম্পর্কে বিজ্ঞ জানিয়ে মিজানুর রহমানকে কয়েন ক্রয় করতে বলেন। বলেন, জাপান এবং যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে এই কয়েনের প্রচুর চাহিদা আছে। তারা উচ্চ মূল্যে কয়েনগুলো প্রতিষ্ঠান সমূহে বিক্রয় করে দিতে পারবে বলে জানায়।”

এসব প্রলোভনে গত ১৮ সেপ্টেম্বর গুলশানের একটি হোটেলে ইফতেখার আহম্মেদ এবং বিদেশি কোম্পানির প্রতিনিধি হিসেবে আবু নাঈম মো. ফাইজানুল হক ওরফে ডক্টর নাঈম এবং মো. আব্দুল হালিম তালুকদার কুরাইশি মিজানুর রহমানকে ডেকে নেন এবং কয়েকটি ধাতব কয়েন দেখান। কয়েনগুলো প্রতিটির বাজার মূল্য আনুমানিক ২০ বিলিয়ন ইউএস ডলার হবে বলে তাকে ধারণা দেওয়া হয়। এসময় তারা তাদের নিজস্ব ভুয়া কেমিস্ট মো. আব্দুল হালিম তালুকদার কুরাইশির মাধ্যমে এন্টিক মেটাল কয়েনগুলো সঠিক কিনা তা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে একটি রিপোর্ট প্রদান করেন।

এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৭ অক্টোবর আদাবরের জাপান গার্ডেন সিটির নিকটস্থ একটি ভবনে মিজানুর রহমান তাদের কাছেএন্টিক মেটাল কয়েনক্রয়ের জন্য অগ্রিম ৪৫ লাখ টাকা প্রদান করেন। পরবর্তীতে তিনি বিভিন্ন সময়ে এন্টিক মেটাল কয়েন ক্রয়ের জন্য তাদের চাহিদা মোতাবেক আরও ৭৫ লাখ টাকা নগদ এবং ৫০ লাখ টাকার একটি চেক প্রদান করেন।

পরবর্তীতে তিনি যাচাই বাছাই করে জানতে পারেন, ধাতব মুদ্রা ভুয়া এবং তিনি অভিনব প্রতারণার শিকার হয়েছেন। ঘটনায় মিজানুর রহমান বাদী হয়ে ডিএমপির আদাবর থানায় একটি নিয়মিত মামলা দায়ের করেন। মামলায় আদাবর থানার বিভিন্ন এলাকায় সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে আসামিদের গ্রেপ্তারসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম নগদ অর্থ উদ্ধার করে পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে তিনি জানান, তারা আন্তঃজেলা ম্যাগনেটিক কয়েন প্রতারক চক্রের সদস্য। দীর্ঘদিন ধরে ম্যাগনেটিক কয়েনের প্রলোভন দেখিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে এভাবে প্রতারণা করে আসছে। গ্রেফতারকৃতদের নামে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাগ্রহণ প্রক্রিয়াধীন। এছাড়া মামলার সুষ্ঠু তদন্ত এই চক্রের অন্যান্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান পুলিশ কর্মকর্তা ইবনে মিজান।

(ঢাকাটাইমস/২১মার্চ/এলএম/এফএ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
ধাওয়া খেয়ে পিছু হটল ভারতের চার যুদ্ধবিমান
নিজের ওপর চলা নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে বিচার চাইলেন রাশেদ খান
এসপি পদমর্যাদার ১৪ কর্মকর্তার বদলি
হঠাৎ 'আত্মগোপনে' পালং মডেল থানার পরিদর্শক
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা