রাষ্ট্র গঠনের মৌলিক বিষয়গুলোতে রাজনৈতিক দলগুলোকে অভিন্ন অবস্থানে আসার আহ্বান আলী রীয়াজের

রাষ্ট্র গঠনের মৌলিক বিষয়গুলোতে রাজনৈতিক দলগুলোকে অবিলম্বে অভিন্ন অবস্থানে আসার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
রবিবার সকালে জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে ১২ দলীয় জোটের সঙ্গে সংলাপের শুরুতে সূচনা বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় সংলাপে আরও উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, ড. বদিউল আলম মজুমদার এবং ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া।
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও ১২ দলীয় জোটের প্রধান মোস্তফা জামাল হায়দারের নেতৃত্বে বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান ও ১২ দলীয় জোটের মুখপাত্র শাহাদাত হোসেন সেলিম, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান ও ১২ দলীয় জোটের সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব ডক্টর গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, বিকল্পধারা বাংলাদেশের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নুরুল আমিন বেপারী, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) সহ-সভাপতি রাশেদ প্রধান, লেবার পার্টি বাংলাদেশের চেয়ারম্যান লায়ন ফারুক রহমান, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন পারভেজ, ইসলামি ঐক্য জোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুল রাকিব, বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির মহাসচিব আবুল কাশেম, প্রগতিশীল জাতীয়তাবাদী দল (পিএনপি)চেয়ারম্যান ফিরোজ মোহাম্মদ লিটন এবং নয়া গণতান্ত্রিক পার্টির চেয়ারম্যান এম এ মান্নান এ সংলাপে অংশ নিয়েছেন ।
ড. আলী রীয়াজ বলেন, “জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রধান লক্ষ্য হলো সকলের সঙ্গে আলোচনা করে একটি সনদ প্রস্তুত করা, যা বাংলাদেশের ভবিষ্যতের পথরেখা নির্ধারণ করবে। এবং এক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখা জরুরি, যে বিষয়গুলোতে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হবে শুধুমাত্র সেগুলোর ওপর ভিত্তি করেই সনদটি তৈরি করা হবে। ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই সনদ তৈরি করতে হলে সংশ্লিষ্ট সকলকে কিছু না কিছু ছাড় দিতে হবে, রাষ্ট্র গঠনের মৌলিক বিষয়গুলোয় সবাইকে একমত হতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “রাষ্ট্রের স্বার্থে আমাদের সবাইকে এক জায়গায় আসতে হবে। সব বিষয়ে একমত হতে পারব না, কিন্তু রাষ্ট্র গঠনের মৌলিক জায়গাগুলোতে আমাদের একমত হয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হবে।'
ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব কেবল কমিশনের নয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, “কমিশন এক্ষেত্রে অনুঘটকের ভূমিকা পালন করছে। রাজনৈতিক দলগুলোকে পারস্পরিকভাবে আলোচনা করতে হবে যে কি করে এক ও অভিন্ন জায়গায় আসা যায়।”
তিনি বলেন, “শুধু এই টেবিলে বসে কমিশনের বৈঠকে আলোচনা করে জাতীয় ঐকমত্যের চূড়ান্ত জায়গায় পৌঁছাতে পারব এটা আমরা (কমিশন) মনে করি না।”
এ সময় রাজনৈতিক শক্তিগুলোকে একটি অভিন্ন অবস্থানে আসার জন্য সহযোগিতা ও উৎসাহিত করতে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
১২ দলীয় জোটের প্রধান সমন্বয়ক মোস্তফা জামাল হায়দার তার সূচনা বক্তব্যে বলেন, “রাজনৈতিক মতপার্থক্যই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। তবে আমরা খুব দ্রুত একটি সমাধানে পৌঁছাতে চাই। সেইসঙ্গে এটাও চাই যেন ভবিষ্যতে কোনো স্বৈরশাসক মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে। চাইলেও সংবিধানের যেমন ইচ্ছা পরিবর্তন না ঘটাতে পারে।”
উল্লেখ্য, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সরকারের গঠিত পাঁচ কমিশনের দেওয়া নানা সংস্কারবিষয়ক সুপারিশের ব্যাপারে আজ আলোচনায় বসেছে ১২ দলীয় জোট।
কমিশন সূত্রে জানা গেছে, কমিশনের দেওয়া ১৬৬ প্রস্তাবের মধ্যে ১১১টিতে একমত, ৪৮টিতে দ্বিমত এবং ৭টিতে মতামত দেয়নি জোটটি।
আজ বিকেল তিনটায় বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির সাথে আলোচনায় বসার কথা রয়েছে কমিশনের।
(ঢাকাটাইমস/০৪মে/এফএ)

মন্তব্য করুন