শ্রীপুরে চায়না-৩ জাতের লিচুতে চাষির মুখে হাসি

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ১৮ মে ২০২৫, ২২:১১
অ- অ+

মধুমাস জ্যৈষ্ঠ শুরু হয়েছে। এ মাসে প্রচুর দেশীয় ফল পাকে বলে একে মধুমাস বলে। এ মাসে বিভিন্ন রকমের ফলের মণ্ডম গন্ধে মোহিত থাকে চারপাশ। গাজীপুরের শ্রীপুরে গ্রীষ্মকালীন কৃষকের স্বপ্নের ফল দেশীয় চায়না-৩ জাতের লিচুর বাম্পার ফলন‌ে চাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে।

শ্রীপুর উপজেলায় ১ট‌ি পৌরসভা ও ৮টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে এখন লিচুকে ঘিরেই চলছে ব্যস্ততা। এ যেন লিচুর উৎসব।

বাদুড়ের কবল থেকে লিচু রক্ষায় রাত জেগে পাহারা দেওয়া, দিনে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গাছ থেকে লিচু নামানো ও থোকা বাঁধার পরে তা গাড়িতে করে স্থানীয় বাজারে নিয়ে যাওয়া। লিচুকে ঘিরে এমনভাবে ব্যস্ত এ উপজেলার গ্রামের সাধারণ মানুষ।

উঁচু চালা জমি সমৃদ্ধ শ্রীপুরের রসালো লিচুর কদর রয়েছে দেশজুড়েই। উপজেলাজুড়ে প্রায় ১২ হাজার কৃষক এই লিচুকে ঘিরে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে থাকেন। এবার প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকায় এই উপজেলায় চায়না-৩ জাতসহ অন্যান্য লিচুর ভালো ফলন হয়েছে। এই জ্যৈষ্ঠ মাস ভরা এখন লিচুকে ঘিরেই গায়ের কৃষাণ-কৃষাণী ব্যস্ত থাকবে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের তথ্যমতে, সবচেয়ে বেশি লিচুর আবাদ হয় শ্রীপুর উপজেলায়। স্বাদের দিক দিয়ে শ্রীপুরের লিচুর ভিন্নতা থাকায় এর চাহিদাও বেশি। এবার শ্রীপুর উপজেলায় ৭৩০ হেক্টর জমিতে লিচু চাষ করা হয়। চলতি বছর লিচু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৮৯০ মেট্রিক টন ছ‌িল।

এদিকে প্রতিনিয়ত শ্রীপুরের লিচুর চাহিদা বাড়ায় প্রতিবছরই এ উপজেলাজুড়ে সম্প্রসারণ হচ্ছে লিচু চাষ। এ লিচু চাষে কৃষকের রুচির ভিন্নতার সাথে জাতেরও পরিবর্তন হয়। এখানে আবাদ হচ্ছে চায়না-৩, বোম্বাই ও পাতি লিচু।

উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের টেপিরবাড়ী গ্রামের লিচু চাষি মানিক মিয়া বলেন, এবার লিচু গাছে মুকুল আসার পর প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত না হওয়ায় লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে। দামও বেশি পাওয়ার আশা করছি।

মানিক মিয়া দেশীয় চায়না-৩ জাতের লিচু গাছ লাগিয়েছেন। তার চায়না-৩ জাতসহ অন্যান্য ৩০টি লিচু গাছ রয়েছে। তিনি গত বছর লিচু বিক্রি করেছিলেন ২ লাখ ৫০ হাজার টাকার। এবার আশা করছেন লিচু বিক্রি করবেন ৩ লাখ ৫০হাজার টাকার।

শ্রীপুর পৌরসভার কেওয়া পূর্ব খণ্ড ৬ নম্বর ওয়ার্ডের জালাল ফরাজি বলেন, ফলনের দিক দিয়ে এবার লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে। বাগানে উৎপাদিত লিচু কৃষক ও ব্যবসায়ীরা বাগান থেকে সংগ্রহ করে বিক্রির জন্য নিয়ে যান স্থানীয় বাজারগুলোতে। তবে অনেকে ভালো দাম পাওয়ার আশায় চলে যান রাজধানীতেও। জ্যৈষ্ঠ মাস পুরোটা সময়ই লিচু পাওয়া যায়। এবার অন্যান্য সময়ের চেয়ে ভালো ফলন ও দাম পাওয়া যাচ্ছে। তিনি ২৫টি গাছের লিচু বিক্রি করেছেন ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা।

শ্রীপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কৃষি কর্মকর্তা সুমাইয়া সুলতানা বন্যা বলেন, আমরা কয়েক বছর ধরে স্থানীয় কৃষকদের লিচু চাষ সম্প্রসারণে উদ্বুদ্ধ করায় প্রতিনিয়ত বাণিজ্যিকভাবে বাড়ছে লিচু চাষ। এবার উপজেলাজুড়ে তীব্র দাবদাহ থাকার পরেও লিচুর ভালো ফলন হয়েছে। উৎপাদন পুষিয়ে যাবে। তাছাড়া ভোক্তা পর্যন্ত বিষমুক্ত লিচু পৌঁছে দেবার আশাবাদী।

(ঢাকা টাইমস/১৮মে/এসএ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
খালেদা জিয়ার সঙ্গে কর্নেল অলির সাক্ষাৎ 
বাড্ডায় গ্যাস লিকেজ থেকে বিস্ফোরণ: চিকিৎসাধীন শিশুর মৃত্যু, চারজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক
টাইব্রেকারে সাফ ফাইনালে স্বপ্নভঙ্গ বাংলাদেশের, চ্যাম্পিয়ন ভারত
পদোন্নতি পেয়ে অতিরিক্ত আইজিপি হলেন ১২ পুলিশ কর্মকর্তা
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা