ঢাকায় লোক জড়ো: সেই মোস্তফা আমীনের বিরুদ্ধে মামলার এজাহারে যা আছে
বিনাসুদে লাখ টাকা ঋণ দেওয়ার প্রলোভনে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নিরীহ শত শত মানুষকে ঢাকায় আনার অভিযোগে ‘অহিংস গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশ’ সংগঠনের প্রধানসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলায় আরও ১০০০/১২০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি দেখানো হয়েছে।
সোমবার রাতে রাজধানীর শাহবাগ থানায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলাটি করে।
রমনা বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম ঢাকা টাইমসকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এ ঘটনায় হওয়া মামলার নম্বর-৩৪। ধারা-১২০বি/১৪৩/১৪৭/১৪৯/১৮৬/৩৩১/৩৫৩/৪২৭/১০৯/১১৪।
আজ মঙ্গলবার মামলায় গ্রেপ্তার এজাভুক্ত আসামিদের আদালতে পাঠাবে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে অন্যতম কথিত এই সংগঠনের প্রধান এবিএম মোস্তফা আমীন, আহ্বায়ক জিয়াউর রহমান, সমন্বয়ক সৈয়দ ইসতিয়াক, মাহবুবুল আলম চৌধুরী।
এদিকে সোমবার রাতে কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট সংগঠনের আরেক অন্যতম নেতা জিয়াউর রহমানকে আটক করে।
মামলার এজাহারে যা আছে:
ঘটনার দিন সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পুলিশ জানতে পারে এজাহারভুক্তি অন্যতম আসামি এবং বাকি ১৫ আসামিসহ অজ্ঞাতনামা ১০০০/১২০০জন রাজধানীতে অপরাধ, দাঙ্গা ও ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকান্ডের পরিকল্পনা করে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি করতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে সাধারণ মানুষকে বিনাসুদে ঋণ দেওয়ার কথা বলে শাহবাগ মোড়ে বেআইনিভাবে জমায়েত করতে থাকে। পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে কয়েকজনকে আটক করা হয়। কথিত সংগঠনের সদস্যরা ঘটনাস্থলে দাঙ্গা সৃষ্টি করতে চাইলে পুলিশ তাদের লোক জমায়েত করতে নিষেধ করে এবং ঘটনাস্থল থেকে চলে যাওয়ার অনুরোধ করে। এতে আসামিরা ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশকে সরকারি কর্তব্য পালনে বাধা দেয় এবং তাদের ওপর আক্রমণ করে। এতে কয়েকজন আহত হয়। আসামিরা শাহবাগ মোড়ে থাকা ট্রাফিক কন্ট্রোলের কাজে ব্যবহৃত প্লাস্ট্রিকের রোড ডিভাইডার ভেঙে (প্রায় ২০ হাজার টাকার ক্ষতি) ফেলে। তখন সেখানে অতিরিক্ত অফিসার ও ফোর্স যায়। এরপর মোট ১৯ জনকে আটক করা হয়। এসময় অজ্ঞাতনামা আসামিরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
এজাহারে বলা হয়, ‘অহিংস গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশ'র ব্যানারে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলার সাধারণ মানুষকে বিনা সুদে ঋণ দেওয়ার কথা বলে ঢাকায় আনা হয়। এসব মানুষকে জমায়েত করে একটি দাঙ্গা সৃষ্টি করে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি ঘটানোর পরিকল্পনা ছিল বলে আটককৃতরা প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, 'অহিংস গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশ’ নামের সংগঠনের ব্যানারে প্রায় এক কোটি ৬০ লাখ অসহায় ব্যক্তিকে টাকার বিনিময়ে রেজিস্ট্রেশন করা হয়। এতে মাথা পিছু এক থেকে পাঁচ হাজার টাকা নেওয়া হয়। এই কথিত সংগঠনের উদ্দেশ্য ছিল বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে বিতর্কে ফেলা। যারা রাজধানীতে জড়ো হয়ে নাশকতা করবে। আটক মোস্তফা আমীন বহির্বিশ্বে বোঝাতে চেয়েছিলেন, বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষ ফুঁসে উঠেছে। একারণে বাস, ট্রাকসহ বিভিন্ন বাহনে রবিবার গভীর রাত ও সোমবার সকালে নিরীহ মানুষদের ঢাকায় আনা হয়।
ঢাকাটাইমস/২৬নভেম্বর/এসএস/এফএ)
মন্তব্য করুন