শুল্ক নিয়ে মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করবেন প্রধান উপদেষ্টা

যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা শুল্ক ইস্যুতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস নিজেই ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
শনিবার রাতে মার্কিন শুল্ক ইস্যু নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে জরুরি বৈঠক শেষে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার বাইরে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, প্রধান উপদেষ্টা যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে বাণিজ্য, বিশেষত রপ্তানির বাধা অপসারণ করে বাণিজ্য বৃদ্ধি করা হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের রফতানি প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলোতেও শুল্ক বেড়েছে, তাই যুক্তরাষ্ট্রের এই শুল্ক নীতিতে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে না, বরং বাংলাদেশের তৈরি পোশাকে বৈচিত্র্য থাকায় সম্ভাবনার দুয়ার খুলবে।
বাণিজ্য উপদেষ্টা আরও বলেন, আমদানি বৃদ্ধির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর প্রচেষ্টা করা হবে। শুল্ক বাড়ানো আকস্মিক বিষয় নয়। এতে বাংলাদেশের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা কম।
ব্রিফিংয়ে সূচনা বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেনটেটিভ খলিলুর রহমান বলেন, এটা আমাদের জন্য আকস্মিক কোনো বিষয় না। ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুতেই যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে বৈঠক করতে বলেছিলেন প্রধান উপদেষ্টা। সেই সূত্রে তিনি (খলিলুর) ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে ওয়াশিংটনে পররাষ্ট্র দপ্তরের অনেকের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। তখন থেকে মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে ক্রমাগত এ বিষয়ে আলোচনা চলছে।
তিনি বলেন, ‘সুতরাং ব্যাপারটা আকস্মিক নয়, আমরা এর জন্য প্রস্তুত। শিগগিরই আমরা একটা ব্যবস্থা নেব এবং সেটা মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করেই নেব।’
এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সভাপতিত্বে এ জরুরি বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন— অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ, বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান, প্রধান উপদেষ্টার হাইরিপ্রেজেনটেটিভ ড. খলিলুর রহমান, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব মো. সিরাজ উদ্দিন মিয়া এবং শীর্ষপর্যায়ের বিশেষজ্ঞ ও কর্মকর্তারা।
গত ২ এপ্রিল হোয়াইট হাউসে স্থানীয় সময় বিকেল ৪টায় সংবাদ সম্মেলন করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পণ্যের ওপর পাল্টা শুল্ক ধার্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নতুন ঘোষণা অনুযায়ী বাংলাদেশি পণ্যের ওপর শুল্ক বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৭ শতাংশ, যা এত দিন গড়ে ১৫ শতাংশ ছিল।
এই শুল্ক আরোপে হোয়াইট হাউসের সরল হিসাব হলো- যে দেশ মার্কিন পণ্যের ওপর যত শুল্ক নেয়, এখন থেকে সেই দেশের পণ্যের ওপর তার অর্ধেক শুল্ক নেবে যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশে আমদানি করা মার্কিন পণ্যের ওপর ৭৪ শতাংশ শুল্ক ধার্য রয়েছে, সেই হিসাবে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানিকৃত বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক নেবে দেশটি।
(ঢাকাটাইমস/০৫এপ্রিল/এমআর)

মন্তব্য করুন